কোনও ইংরেজি লেখা থেকে বাংলা বা অন্য কোনও স্থানীয় ভাষায় অনুবাদ এখন কয়েক মুহূর্তেই হয়ে যায়। ভারতের এক আঞ্চলিক ভাষা থেকে অন্য আঞ্চলিক ভাষাতেও অনুবাদ করা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু অনেকেরই অভিযোগ, সেই অনুবাদে অনেক খামতি ও ভুলভ্রান্তি থেকে যায়। বিশেষ করে, অনুবাদ হওয়ার পরে অনেক সময়ে তা নিয়ে নানা বিভ্রান্তি তৈরি হয়। অনূদিত লেখাটির সমস্ত অংশ সব সময়ে বোধগম্যও হয় না।
এ বার সেই আঞ্চলিক ভাষা থেকে অনুবাদ আরও সহজ, সরল, বোধগম্য এবং নির্ভুল করতে এগিয়ে এল কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট’ (আইএসআই)। সেখানকার ‘লিঙ্গুইস্টিকস রিসার্চ ইউনিট’-এ তিন দিন ধরে চলা কর্মশালায় আলোচনা ও প্রশিক্ষণে উঠে এল, কী ভাবে আঞ্চলিক ভাষায় আরও সহজবোধ্য ভাবে অনুবাদ করা যায়, যাতে থাকবে সব তথ্য, অথচ তা নির্ভুল হবে। ওই রিসার্চ ইউনিটের প্রফেসর ও প্রধান নীলাদ্রিশেখর দাশ বললেন, ‘‘এর ফলে বিজ্ঞান বিষয়ক কোনও গবেষণামূলক লেখা বা বইপত্র একটি ভারতীয় ভাষা থেকে অন্য কোনও ভারতীয় ভাষায় দ্রুত অনুবাদ করা যাবে এবং তা গবেষণা ও পড়াশোনার কাজে লাগবে। এই অনুবাদের জন্য যে প্রযুক্তি দরকার, সেই প্রযুক্তি আরও উন্নত করার কাজ চলছে।’’
কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ভাষিণী’ প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতের এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় অনুবাদ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। নীলাদ্রিশেখর বলেন, ‘‘ভাষিণীর অধীনে বিদ্যাপতি নামে এই প্রকল্পের মাধ্যমে যে কোনও ভারতীয় ভাষা থেকে অনুবাদ আরও বেশি দক্ষতার সঙ্গে করা যাবে। ১০০ শব্দের কোনও লেখা এক সেকেন্ডে অনুবাদ হয়ে যাবে। অনুবাদে কোনও ভুল থাকবে না। তথ্যেরও কোনও গোলমাল হবে না।’’ উদাহরণ দিয়ে তিনি জানান, ধরা যাক, তেলুগু ভাষায় আবহাওয়া নিয়ে একটি গবেষণামূলক প্রবন্ধ বেরিয়েছে। সেই লেখাটি সমস্ত ভারতীয় ভাষায় প্রকাশ করা দরকার। প্রযুক্তির সাহায্যে এ বার কয়েক সেকেন্ডেই সমস্ত ভারতীয় ভাষায় নির্ভুল ও সহজবোধ্য ভাবে অনুবাদ করে ফেলা সম্ভব হবে।
নীলাদ্রিশেখর জানান, ভাষা প্রযুক্তি নিয়ে যাঁরা কাজ করতে চান, তাঁরা এই কর্মশালায় যোগ দিচ্ছেন। ভাষা প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করতে গেলে ভাষা বিজ্ঞান এবং কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। ভাষা প্রযুক্তি জানা দক্ষ মানুষদের এখন পেশাগত দুনিয়ায় চাহিদাও খুব বেশি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)