Advertisement
E-Paper

শিক্ষকদের আন্দোলনে বন্ধ বেলগাছিয়ার পশু চিকিৎসালয়

প্রায় ১৫০ জন শিক্ষক গত ৩ জানুয়ারি থেকে তিনটি বিভাগের পঠনপাঠন বন্ধ রেখেছেন। একই সঙ্গে পশু চিকিৎসালয়টিও বন্ধ রেখেছেন তাঁরা। 

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৪৪
দুর্ভোগ: বেলগাছিয়ার প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্যদের চিকিৎসা করাতে না পেরে হতাশ মালিকেরা। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

দুর্ভোগ: বেলগাছিয়ার প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্যদের চিকিৎসা করাতে না পেরে হতাশ মালিকেরা। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

বেলগাছিয়ার প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে গত দেড় মাস ধরে পুরোপুরি বন্ধ পশু চিকিৎসালয়। যার জেরে বিপাকে পড়েছেন পোষ্যদের মালিকেরা।

সম্প্রতি অসুস্থ একটি পথকুকুরকে নিয়ে সেখানে এসে টানা দু’ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফিরে যান বরাহনগরের বাসিন্দা সুভাষ মালাকার। তিনি বলেন, ‘‘আমার বাড়ির কাছেই রাস্তায় গত দু’-তিন দিন ধরে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে ছিল কুকুরটি। প্রাথমিক চিকিৎসায় সেরে না ওঠায় অনেক আশা নিয়ে বেলগাছিয়ায় এসেছিলাম। কিন্তু ক্লিনিক বন্ধ থাকায় ফিরে যেতে হচ্ছে।’’ একই অবস্থা নাগেরবাজারের প্রিয়াঙ্কা কুমারী বা উল্টোডাঙার প্রতিমা গুপ্তের। প্রতিমার বাড়ির পোষা বেড়ালদের টিকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চিকিৎসালয় বন্ধ থাকায় তিনিও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে ফিরে যান। প্রতিমা বলেন, ‘‘বেলগাছিয়ায় উন্নত মানের চিকিৎসা হয় শুনে এসেছিলাম। এখন অসুস্থ বেড়ালদের নিয়ে কোথায় যাব, বুঝতে পারছি না।’’

প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, বেতন পরিকাঠামো, স্বাস্থ্য বিমা, এলটিসি, পিএইচডি-র ইনক্রিমেন্ট, পদোন্নতি-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে সেখানকার শিক্ষকদের মধ্যে। তাই ভেটেরিনারি, ডেয়ারি ও মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের প্রায় ১৫০ জন শিক্ষক গত ৩ জানুয়ারি থেকে তিনটি বিভাগের পঠনপাঠন বন্ধ রেখেছেন। একই সঙ্গে পশু চিকিৎসালয়টিও বন্ধ রেখেছেন তাঁরা।

প্রসঙ্গত, গত বছরের জুলাই পর্যন্ত ওই চিকিৎসালয় ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকত। অগস্ট থেকে রাতের পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ৩ জানুয়ারি থেকে দিনের অন্য সময়ের পরিষেবাও বন্ধ হয়ে যায়। উল্লেখ্য, বেলগাছিয়ায় জটিল অসুখের চিকিৎসা হয় বলে দূর-দূরান্ত থেকেও অনেকে গাড়ি ভাড়া করে পোষ্যকে নিয়ে আসেন। কিন্তু পশু চিকিৎসালয় বন্ধ থাকায় সবাই ফিরে যাচ্ছেন। প্রাণঘাতী পার্ভো ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুরদের নিয়ে অনেকে বেলগাছিয়ায় এলেও চিকিৎসা পাচ্ছেন না। সব মিলিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পোষ্যের মালিকরা।

প্রশ্ন উঠেছে, শিক্ষকেরা তাঁদের দাবি পূরণের জন্য পশু চিকিৎসার মতো জরুরি পরিষেবা কি এ ভাবে বন্ধ করে দিতে পারেন? বারুইপুর থেকে নিজের পোষ্য কুকুর নিয়ে আসা রমেন বসাকের অভিযোগ, ‘‘দাবি পূরণের জন্য অসুস্থ, অবোলা প্রাণীদের চিকিৎসা না করা পুরোপুরি বেআইনি।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ে শাসকদলের অনুগামী শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-র আহ্বায়ক শুভাশিস বটব্যালের অভিযোগ, ‘‘এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের অধীন। কিন্তু গত দশ বছর ধরে প্রশাসনিক গাফিলতির কারণে চূড়ান্ত বঞ্চনার শিকার আমরা। বিভাগীয় মন্ত্রী থেকে সচিব, কেউ আমাদের দাবি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন না। তাই বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছি। পশু চিকিৎসালয়ও বন্ধ রাখা হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক স্তরের তৎপরতারও একটা গাফিলতি

দেখা যাচ্ছে।

গত বুধবার থেকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে কেউ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে উপাচার্য না থাকায় সব মিলিয়ে সমস্ত কাজ থমকে গিয়েছে। এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে।’’

Bengal Veterinary College & Hospital Animal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy