Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

জরুরি পরিস্থিতি সামলাতে মহড়া ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয়

আপৎকালীন অবস্থায় ট্রেন দাঁড় করিয়ে কী ভাবে ভিতরে থাকা যাত্রীদের উদ্ধার করে আনা হবে, সোমবার তারই একপ্রস্ত মহড়া হল।

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো থেকে বেরোচ্ছেন যাত্রীরা। সোমবার, সেন্ট্রাল পার্ক ও করুণাময়ী স্টেশনের মাঝে। নিজস্ব চিত্র

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো থেকে বেরোচ্ছেন যাত্রীরা। সোমবার, সেন্ট্রাল পার্ক ও করুণাময়ী স্টেশনের মাঝে। নিজস্ব চিত্র

ফিরোজ ইসলাম
শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৯ ০৩:১৫
Share: Save:

চলতে চলতে আচমকাই থেমে গিয়েছে ট্রেন। মাইক্রোফোনে মেট্রোর চালক যাত্রীদের নির্দেশ দিচ্ছেন, কী ভাবে আপৎকালীন অবস্থায় ধীরে ধীরে কামরা খালি করতে হবে। নিজের কেবিন ছেড়ে বেরিয়ে এসে মোটরম্যান চাবি দিয়ে খুলে দিলেন কামরার দরজা। এর পরে ধীরে ধীরে কামরার ভিতর থেকে বার করে আনা হল যাত্রীদের। ঘটনাস্থলে তখন উপস্থিত মেট্রোকর্তারাও।

না, সত্যি এমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এই ছবি ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর মহড়ার। আপৎকালীন অবস্থায় ট্রেন দাঁড় করিয়ে কী ভাবে ভিতরে থাকা যাত্রীদের উদ্ধার করে আনা হবে, সোমবার তারই একপ্রস্ত মহড়া হল।

গত ডিসেম্বরে ময়দান স্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের জেরে পাতাল-পথেই আটকে পড়েছিল মেট্রো। কামরায় আটকে পড়া যাত্রীরা নিজেদের চেষ্টায় কাচ ভেঙে কামরা থেকে বেরিয়েছিলেন। সেই ঘটনার পরে মোটরম্যানের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। ফলে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কর্তৃপক্ষ যথাসম্ভব আটঘাট বেঁধে এগোতে চাইছেন।

সূত্রের খবর, রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের কাছ থেকে পরিষেবা শুরু করার চূড়ান্ত অনুমতি পাওয়ার আগে এ দিন ওই বিশেষ মহড়ার আয়োজন করা হয়। মেট্রোকর্তাদের দাবি, প্রথম পর্বে যেহেতু সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়ামের মধ্যে মেট্রো চলবে, তাই এ দিন ওই পথকেই মহড়ার জন্য বেছে নেওয়া হয়। পরে মেট্রোপথের দৈর্ঘ্য যেমন ভাবে বাড়বে, সেই অনুযায়ী বিভিন্ন পথেই মহড়া হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানান।

গত কয়েক মাস ধরে কামরায় বালির বস্তা বোঝাই করে সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়ামের মধ্যে নিয়মিত দৌড়চ্ছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর রেক। তার মধ্যেই সোমবার সকালে বালির বস্তার বদলে আচমকা যাত্রী বোঝাই করে ছুটল মেট্রো। যাত্রী হিসেবে একটি নিরাপত্তা সংস্থা থেকে প্রায় ৩০০ জনকে ভাড়া করা হয়। তাঁদের প্রত্যেকের আলাদা পরিচয়পত্রের ব্যবস্থা করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ মহড়া শুরু হয়।

এ দিনের মহড়ার বিষয় ছিল যথাসম্ভব কম সময়ে নিরাপদে যাত্রীদের মেট্রোর কামরা থেকে বার করে আনা। মেট্রো স্টেশন ছাড়াও, উড়ালপথে দু’টি মেট্রো স্টেশনের মাঝেও মহড়া চলে। প্রথমে সল্টলেক স্টেডিয়ামের প্ল্যাটফর্মে কোচের দরজা খুলে যাত্রীদের বার করে আনতে কতটা সময় লাগছে তা দেখা হয়। আপৎকালীন সঙ্কেত পেয়ে মেট্রোর চালক যাত্রীদের কী ভাবে বেরিয়ে আসতে হবে, তা মাইক্রোফোনে জানিয়ে দেন। পরে তিনি নিজের কেবিন ছেড়ে বেরিয়ে একে একে প্ল্যাটফর্ম সংলগ্ন দরজাগুলি বিশেষ চাবি দিয়ে খুলে দেন। মেট্রোর আধিকারিকেরা ঘড়ি মিলিয়ে দেখেন এ সব কাজে কতটা সময় লাগছে। এর পরের দু’দফায় প্রথমে বেঙ্গল কেমিক্যাল এবং সিটি সেন্টার স্টেশনের মাঝখানে এবং সব শেষে সেন্ট্রাল পার্ক ও করুণাময়ী স্টেশনের মাঝে একটি বাঁকের কাছে মেট্রো থামিয়ে ওই পরীক্ষা করা হয়।

এক মেট্রোকর্তা বলেন, ‘‘স্টেশনের কাছাকাছি বিপত্তি হলে মিনিট ১৫ সময়ের মধ্যে ২ হাজার যাত্রীকে বার করে আনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। উড়াল পথের ক্ষেত্রে ওই সময় আধ ঘণ্টা ছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Trial Emergency East West Metro
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE