সমানে চলছে কিল, চড়, ঘুষি। মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পরেও সরাসরি লাথি মারা হচ্ছে মুখে। বাঁচাতে এসে এক মহিলা মাটিতে লুটিয়ে পড়লেও রেয়াত করা হচ্ছে না তাঁকেও। তপসিয়ায় এক ব্যবসায়ীকে এ ভাবেই মারধরের ভিডিয়ো ফুটেজ এই মুহূর্তে নানা মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্তের দাবি, ১০ হাজার টাকা পুজোর চাঁদা চাওয়ায় দিতে রাজি হননি তিনি। তাই তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে এ ভাবে মারের মুখে পড়তে হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তদন্তে নেমে পুলিশ দীপক দে ওরফে চিনা বাবু ও রবিন গঞ্জালেস ওরফে বিশাল নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ৩৮ বছরের দীপক ও ২৩ বছরের রবিন মারধরের ঘটনার মূল অভিযুক্ত। তাঁরা কলকাতা ছেড়ে চম্পট দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। সেই কারণেই শনিবার ধর্মতলা বাস স্ট্যান্ডের কাছে যায়। কিন্তু গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেখান থেকে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। এই ঘটনায় আরও ছয় অভিযুক্তের নামে মামলা হয়েছিল। যদিও রবিবার রাত পর্যন্ত তাঁদের গ্রেফতারির কোনও খবর নেই।
পুলিশের দাবি, তপসিয়ার গোবরায় একটি পুজোর জন্য অমিত সরকার নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চার হাজার টাকা চাঁদা চাওয়া হয়। তিনি দিতে রাজিও হন। যদিও অভিযোগ, দীপক দলবল নিয়ে এসে চার হাজার টাকার বদলে ১০ হাজার টাকা দাবি করতে শুরু করে। এত টাকা চাঁদা দেওয়া সম্ভব নয় বলায় অমিতকে ধরে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। কোনও মতে তাঁকে উদ্ধার করে পরে হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়েরা। অমিতের মাথা, কপাল, চোখের উপরের অংশে গভীর চোট লাগে। হাঁটুতেও তাঁর চোট লেগেছে বলে অমিতের পরিবারের দাবি।
তবে তাঁরা থানায় অভিযোগ করার পরেই আরও একটি অভিযোগ দায়ের হয়। তাতে দাবি করা হয়েছে, অমিত গোবরা উজ্জ্বল সঙ্ঘের দীর্ঘদিনের সদস্য। অতীতে তিনি সেক্রেটারিও ছিলেন। বর্তমানে দীপক সেই পদ পেয়েছেন। এ নিয়েই দু’পক্ষের গোলমাল। ক্লাবের বর্তমান সেক্রেটারির লাগানো ব্যানার ছিঁড়ে দেওয়া নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত। যদিও এই অভিযোগকারীরা এ দিন এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে অমিত বলেন, ‘‘এত টাকা চাঁদা দিতে রাজি হইনি বলেই আমায় এ ভাবে মারা হয়েছে। এখন মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)