Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Death

Death: উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পরে গঙ্গায় স্নানে নেমে তলিয়ে গেল দুই কিশোর

প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী দুই ছাত্রের খোঁজে গঙ্গায় তল্লাশি চালায়। কিন্তু রাত আটটা পর্যন্ত কারও খোঁজ মেলেনি।

মহম্মদ বিলাল (বাঁ দিকে)। মহম্মদ ইসরায়েল আলি।

মহম্মদ বিলাল (বাঁ দিকে)। মহম্মদ ইসরায়েল আলি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২২ ০৫:৪৪
Share: Save:

উচ্চ মাধ্যমিকের প্রতিটি পরীক্ষাতেই ছেলেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিতেন বাবা। বুধবার, শেষ পরীক্ষার দিনেও তেমন পৌঁছে দিয়েছিলেন। হলে ঢোকার আগে ছেলের হাতে ৫০ টাকা দিয়ে বলেছিলেন, পরীক্ষা শেষ হলেই সে যেন বাড়ি ফিরে যায়। কিন্তু ছেলে আর ফেরেনি। পরীক্ষার পরে কয়েক জন সহপাঠীর সঙ্গে গঙ্গায় স্নান করতে নেমে তলিয়ে গেল ওই কিশোর এবং তার এক বন্ধু। বুধবার এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর বন্দর থানা এলাকার বাজেকদমতলা ঘাটে। রাত পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়েও দুই কিশোরের সন্ধান মেলেনি।

জানা গিয়েছে, তালতলার একটি স্কুলে পরীক্ষাকেন্দ্র পড়েছিল মহম্মদ ইসরায়েল আলি এবং মহম্মদ বিলাল নামে ওই দুই কিশোরের। দু’টি পরিবারই তপসিয়া এলাকার বাসিন্দা। এমন দুর্ঘটনায় স্তম্ভিত ইসরায়েলের বাবা শেখ ইসলাম আলি ও বিলালের দিদি শম্মা পরভিন। বুধবার রাতে উত্তর বন্দর থানার বাইরে দাঁড়িয়ে কথা বলতে বলতে বার বার চোখ মুছছিলেন তাঁরা। কলকাতা পুলিশ জানায়, বিকেল চারটে নাগাদ গঙ্গায় তখন জোয়ার চলছে। তার মধ্যেই বাজেকদমতলা ঘাটে স্নান করতে নামে ইসরায়েল, বিলাল এবং তাদের কয়েক জন সহপাঠী। একদফা স্নান সেরে সবাই উঠে এসেছিল। আবার দ্বিতীয় দফায় স্নান করতে নেমেই জোয়ারের টানে তলিয়ে যায় ওই দুই ছাত্র।

পুলিশ জানাচ্ছে, প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী দুই ছাত্রের খোঁজে গঙ্গায় তল্লাশি চালায়। কিন্তু রাত আটটা পর্যন্ত কারও খোঁজ মেলেনি। আজ, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের দুই ছাত্রের খোঁজে গঙ্গায় তল্লাশিচালানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। কেন ওই দুই ছাত্র গঙ্গায় গিয়েছিল, কী ভাবে তারা তলিয়ে গেল— সে বিষয়ে বিশদে জানতে তাদের বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্তকারীরা। তবে প্রাথমিক ভাবে তাঁদের অনুমান, এটি দুর্ঘটনা। তদন্তকারীরা জানান, প্রাথমিক ভাবে ইসরায়েল ও বিলালের বাকি সহপাঠীরা জানিয়েছে, এ দিন পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে হঠাৎ করেই তারা গঙ্গায় গিয়ে স্নান করার পরিকল্পনা করে।

রাতে উত্তর বন্দর থানায় গিয়ে দেখা যায়, দুই ছাত্রের আত্মীয়-পরিচিতেরা উদ্বিগ্ন মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। ইসরায়েলের বাবা ইসলাম আলি বলেন, ‘‘কেন ওরা গঙ্গায় নামতে গেল? সাঁতার জানে না। আমি রোজ পরীক্ষা কেন্দ্রে ছেলেকে ছেড়ে দিয়ে যেতাম। এ দিন ছেলের হাতে ৫০ টাকা দিয়ে বলে দিই, পরীক্ষা শেষ হলেই সোজা বাড়ি যেতে। ছেলে রোজই চলে যায়। আজ কেন এমন দুর্বুদ্ধি হল! ওর মাকে কী জবাব দেব?’’

বিলালের দিদি শম্মা পরভিন বলেন, ‘‘আমরা কিছুই জানতে পারিনি। ভাইকে বলে দিয়েছিলাম, পরীক্ষার পরে যেন সোজা বাড়ি আসে। এটা কী করল ওরা? কেউ সাঁতার জানত না। কিছুতেই মানতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death HS
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE