Advertisement
০৪ মে ২০২৪

পাকা ঠাঁই পেয়েও ভয়ে দুই উল্লুক

চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, উদ্ধার করে ব়়ড় খাঁচায় রাখার পরে একটু হাত-পা নাড়াতে পারছে উল্লুক দু’টি। আড়ালে দাঁড়িয়ে কর্মীরা দেখেছেন, সুযোগ বুঝে খাঁচার শিক ধরে দোলও খেয়ে নিয়েছে দু’জনে।

উদ্ধারের পরে। নিজস্ব চিত্র

উদ্ধারের পরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৮ ০২:২৯
Share: Save:

ছোট্ট খাঁচা থেকে বেরিয়ে বড় খাঁচায় ঢুকেছে দু’জনে। পেটপুরে খাবারও মিলছে। তবুও ভয় কাটেনি ওদের! মানুষ দেখলেই একে অন্যের গলা জড়িয়ে জড়োসড়ো হয়ে বসে থাকছে।

ওরা দু’জনেই উল্লুক। বৃহস্পতিবার সকালে ভোজেরহাট থেকে ৪২টি বিদেশি পাখি ও ২টি ভামের সঙ্গে ওই দু’জনকেও খাঁচাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার করে ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইনটেলিজেন্স (ডিআরআই)। তার পরে ওদের তুলে দেওয়া হয় আলিপুর চিড়িয়াখানার হাতে। আপাতত চি়ড়িয়াখানার হাসপাতালে বড় মাপের খাঁচায় রাখা হয়েছে দু’জনকে। পাখি ও ভামগুলিকেও হাসপাতালে আলাদা করে রাখা হয়েছে।

চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, উদ্ধার করে ব়়ড় খাঁচায় রাখার পরে একটু হাত-পা নাড়াতে পারছে উল্লুক দু’টি। আড়ালে দাঁড়িয়ে কর্মীরা দেখেছেন, সুযোগ বুঝে খাঁচার শিক ধরে দোলও খেয়ে নিয়েছে দু’জনে। অধিকর্তা আশিসকুমার সামন্ত বলেন, ‘‘ওদের আপেল, আঙুর, কলা এ সব দেওয়া হয়েছিল। একটু চনমনেও হয়েছে। কিন্তু খাঁচার কাছে কেউ গেলেই ভয়ে একে অন্যের গলা জড়িয়ে ধরছে।’’

চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, দু’টি উল্লুকই পুরুষ। আকার দেখে মনে করা হচ্ছে, বছর খানেক বয়স হবে। অর্থাৎ উল্লুক জগতে এখনও ওরা ‘নাবালক’। জঙ্গল থেকে ধরে ছোট্ট খাঁচায় ভরে যে ভাবে পাচার করা হচ্ছিল তাতেই ওদের ভীতি তৈরি হয়েছে। যে ভাবে ছোট খাঁচায় পাচার করা হচ্ছিল তাতে প্রাণী দু’টি মরে যেতেও পারত বলে মনে করছেন অনেকে। বন দফতরের অফিসারেরা বলছেন, ভারতীয় বন্যপ্রাণ আইনের প্রথম তফশিলভুক্ত উল্লুক ‘বিপন্ন’ গোত্রের প্রাণী।

কিন্তু এ ভাবে হাসপাতালে আটকে রাখা হয়েছে কেন? চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, বাইরে কোনও পশুপাখি এলে তাকে আলাদা করে রাখাটাই নিয়ম। অনেক সময় রাস্তা দিয়ে আসার ফলে কোনও সংক্রমণে আক্রান্ত হতে পারে প্রাণীরা। ভিতরে রাখলে সেই সংক্রমণ বাকিদের মধ্যেও ছড়াতে পারে। তাই আলাদা ভাবে নজরে রাখা হয়। বছর কয়েক আগে তিনটি শিম্পাঞ্জির ছানা উদ্ধারের পরে তাদেরও হাসপাতালে রেখে সুস্থ করা হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার প্রাণী পাচারের অভিযোগে বসিরহাটের বাসিন্দা সইদুল গাজি ও সুজাউদ্দিন গাজিকে গ্রেফতার করেছিল ডিআরআই। শুক্রবার ধৃতদের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দীপাঞ্জন সেনের এজলাসে হাজির করানো হয়। ডিআরআইয়ের আইনজীবী তাপস বসু জানান, উদ্ধার হওয়া সব পশুপাখিগুলিকে পাচারকারীরা ১ কোটি ১১ লক্ষ ২ হাজার টাকায় বিক্রি করত। ধৃতদের ৬ জুন পর্যন্ত জেল হেফাজত দিয়েছেন বিচারক। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, এগুলি কোনও বিত্তশালীর ব্যক্তিগত চিড়িয়াখানার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতে এমন চি়ড়িয়াখানা রয়েছে। বস্তুত, শিম্পাঞ্জি ছানা উদ্ধারের সময়েও এমন কথাই শোনা গিয়েছিল। কিন্তু কোনও পরিচয় সামনে আসেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hoolock gibbons panic Cage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE