Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Unknown Fever

বেহালায় জ্বরে কাঁপছে আবাসন আর বস্তি

বেহালায় ডায়মন্ড হারবার রোড সংলগ্ন একটি সরকারি আবাসন ও তার লাগোয়া এক বস্তিতে গত তিন মাসে বহু পরিবার অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে বলে অভিযোগ।

আবাসনের কাছে একটি জমিতে জমে আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র

আবাসনের কাছে একটি জমিতে জমে আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৮ ০১:০০
Share: Save:

বেহালায় ডায়মন্ড হারবার রোড সংলগ্ন একটি সরকারি আবাসন ও তার লাগোয়া এক বস্তিতে গত তিন মাসে বহু পরিবার অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে বলে অভিযোগ।

আবাসন এবং ওই বস্তির বাসিন্দাদের দাবি, জ্বরের সমস্ত উপসর্গই ডেঙ্গির সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। কিন্তু পুরসভা বা সরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই জ্বরকে ডেঙ্গি বলতে নারাজ। যে কারণে পুর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগও তুলেছেন বাসিন্দারা। যদিও পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, মশার লার্ভা

মারতে ও এলাকা সাফসুতরো রাখতে যা যা করণীয়, নিয়মিত ভাবে তা সবই করা হচ্ছে।

কলকাতা পুরসভার ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডে ওই আবাসনের পোশাকি নাম ‘ওল্ড ডগ রেসকোর্স গভর্নমেন্ট হাউসিং’। সেখানে যে সমস্ত সরকারি কর্মী থাকেন, তাঁদের বেশির ভাগেরই অভিযোগ, স্থানীয় কাউন্সিলরকে একাধিক বার ডেঙ্গির বিরুদ্ধে সচেতনতার প্রচার চালাতে বলা হয়েছে। কিন্তু দু’-এক বার দায়সারা ভাবে মশা মারার তেল ও ব্লিচিং ছড়ানো ছাড়া পুরকর্মীরা অন্য কিছু করেননি। ওই সরকারি আবাসনে আগে খোলা নর্দমা ছিল। কিছু দিন আগে নর্দমার উপরে ঢালাই করা হয়েছে। তার জেরে আবার নিয়মিত নর্দমা সাফাইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ বন্ধ।

আবাসনের এক বাসিন্দার অভিযোগ, সেখানকার মূল প্রবেশপথের বাঁ দিকে একটি বটগাছ বড়সড় চেহারা নিয়েছে। তার শেকড় প্রবেশপথের সামনের নর্দমার

ভিতরে এমন ভাবে গেড়ে বসেছে যে, তা কাটা না হলে নর্দমা আদৌ পরিষ্কার করা যাবে না বলে জানিয়ে

দিয়েছেন পুরসভার সাফাইকর্মীরাই। অভিযোগ, স্থানীয় কাউন্সিলর সঞ্চিতা মিত্রকে বটগাছের শেকড় কাটার ব্যাপারে বাসিন্দারা একাধিক বার বললেও তাতে কাজের কাজ হয়নি।

ওই সরকারি আবাসনের বাসিন্দা অনিমেষ চক্রবর্তী, অমিত মণ্ডল, হিমাংশুজ্যোতি চৌধুরীদের

দাবি, নিজেদের উদ্যোগে ও খরচে তাঁরা পুজোর আগে আবাসনে সাফাইয়ের কাজ করছেন। সেখানকার কমবেশি ৪০টি পরিবারেই জুলাই থেকে অজানা জ্বর হানা দিয়েছে

বলে অভিযোগ। তাঁদের দাবি, বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকেরা আবাসনের বাসিন্দাদের বলেছেন, সরকারি ভাবে তাঁরা লিখতে পারবেন না যে, রোগী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। ফলে বেশি টাকা খরচ করে বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে ভর্তি করাতে হচ্ছে আক্রান্তদের। এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতাল ডেঙ্গি না লেখায় রক্তের প্লেটলেট কমে গেলেও সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত বা প্লাজমা মিলছে না।’’

একই অবস্থা আবাসন লাগোয়া দশ নম্বর বস্তির লোকজনের। আবাসনের প্রবেশপথের পাশেই গুমটি রয়েছে রণজিৎ বিশ্বাসের।

তিনি ও তাঁর ছেলে, দু’জনেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সবে সেরে উঠেছেন। ওই দোকানি বললেন, ‘‘পুরসভার কর্মীরা মাসখানেক

আগে কয়েক বার এসে ধরে রাখা জল ফেলে দিতে বলেছিলেন। সেই

সময়ে ফেলে দেওয়া হলেও বস্তিতে জলের অভাব থাকায় সব সময়ে জল ফেলা যায় না।’’ তবে রণজিৎ জানান, এখন বস্তির অনেকেই জল কোনও পাত্রে রেখে দিলে তার উপরে ঢাকনা দিয়ে রাখেন।

কাউন্সিলর সঞ্চিতাদেবীর দাবি, পুরসভার পক্ষ থেকে অজানা জ্বর বা ডেঙ্গি প্রতিরোধী কর্মসূচি পালনে কোনও খামতি নেই। তারাতলা মোড়ের পাশে যে খাল রয়েছে, সেই খালে নিয়মিত নৌকা চালিয়ে মশা মারার তেল ছড়ানো হয়। তাঁর দাবি, ওই আবাসন ও বস্তিতে নিয়মিত সাফাই করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Unknown Fever Behala Mosquito Dengue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE