উদ্ধার হওয়া মাদক। —ফাইল চিত্র
কলকাতায় ধৃত চিনা মাদক পাচারকারীর সঙ্গে যোগ থাকতে পারে মার্কিন যুক্তরা্ষ্ট্রেরও। আর সেই আশঙ্কা থেকেই এ বার ধৃত পাঁচ চিনা নাগরিককে জেরা করতে কলকাতায় এলেন তিন সদস্যের মার্কিন গোয়েন্দা-দল। মঙ্গলবার সিআইডির সদর দফতর ভবানী ভবনে তাঁরা যাবেন ধৃতদের জেরা করতে।
২৯ জুন কলকাতা স্টেশনে রেলপুলিশের হাতে প্রায় ৩৯ কোটি টাকার পার্টি ড্রাগ নিয়ে ধরা পড়ে পাঁচ চিনা নাগরিক। প্রায় দুই কুইন্টাল ড্রাগ বাজেয়াপ্ত হয় ধৃতদের কাছ থেকে।
জেরায় জানা যায়, ধৃতরা চিনের গুয়াংঝৌ প্রদেশের বাসিন্দা। আন্তর্জাতিক মাদকের বাজারে, এই গুয়াংঝৌর মাদক কারবারীরা কুখ্যাত সারা বিশ্ব জুড়ে পার্টি বা সাইকোট্রপিক ড্রাগ সরবরাহ করার জন্য। এই ড্রাগ চক্রের জাল ছড়িয়ে চিন-ভারত-মায়ানমার-হংকং হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: কলকাতায় ভর সন্ধ্যায় অফিসের মধ্যে ধর্ষিতা তরুণী
সম্প্রতি মার্কিন মুলুকে বেশ কয়েক বার এ রকম মাদক ধরা পড়েছে, যার পেছনে চিনা মাদক কারবারীদের যোগ খুঁজে পেয়েছেন মার্কিন গোয়েন্দারা। আর সেই সূত্র ধরেই গোয়েন্দাদের সন্দেহ, কলকাতাতে ধৃত চিনারাও ওই গুয়াংঝৌ চক্রেরই সদস্য।
২০০৩ সালেও এই গুয়াংঝৌ চক্রের হদিশ পাওয়া গিয়েছিল কলকাতাতে। সে বারও মার্কিন গোয়েন্দাদের দেওয়া সূত্র ধরেই নিউইয়র্ক, চিনের একাধিক জায়গা, হংকং এবং কলকাতাতে একই সময়ে হানা দেন বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দারা। সেই সময়তেই প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাসের বাড়িতে ভাড়া থাকা মায়ানমারের নাগরিক বইখ্যা কিমাকে গ্রেফতার করে নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো। বইখ্যা কিমাকে জেরা করেও উঠে এসেছিল চিন যোগ।
আরও পড়ুন: খাস কলকাতায় অন্তঃসত্ত্বাকে ‘যৌন হেনস্থা’
কলকাতায় গত মাসে ধৃতদের সঙ্গে থাকা মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার রেলের টিকিটের সূত্র ধরে রাজ্য সিআইডি মুর্শিদাবাদের নওদাতে একটি কাঠ কয়লা কারখানার হদিশ পায়। সেই কারখানার আড়ালেই চলছিল মাদক তৈরির কাজ। সিআইডির গোয়েন্দারা ওই কারখানা থেকে আরও প্রায় দু’কিলো একই ধরণের ড্রাগের হদিশ পান। গত বেশ কয়েক বছর ধরে এই চিনা নাগরিকরা এই কারখানাকে সামনে রেখে মাদকের ব্যবসা চালাচ্ছিল বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
কিন্তু সেই মাদকের কাঁচামাল কোথা থেকে আসত, বা তৈরি হওয়া মাদক কোথায় যেত তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে সিআইডি। কারণ ধৃত চিনাদের মধ্যে একজন ছাড়া বাকিরা চিনের একটি নির্দিষ্ট আঞ্চলিক ভাষা ছাড়া কিছু জানেন না বলে দাবি তাঁদের। তাই ধৃতদের জেরা করতে সমস্যায় পড়েছেন গোয়েন্দারা।
সূত্রের খবর— সোমবারই কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট এজেন্সির (ডিইএ)-র তিন সদস্য। তিনজনের মধ্যে একজন চিনা দোভাষীও আছেন। তাঁরা ধৃতদের জেরা করে এই চক্রের মার্কিন যোগ খুঁজবেন। প্রয়োজনে তাঁরা রাজ্য সিআইডি-কেও তদন্তে সহযোগিতা করবেন তথ্য দিয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy