প্লাস্টিক এবং প্লাস্টিকজাত সামগ্রী ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে জোর বাড়ানো হয়েছে এবং
মাঝেমধ্যেই বাজার ও দোকানে নিয়মিত অভিযান চলে। পুরসভা এমন দাবি করলেও খালে, জলাশয়ে, যত্রতত্র আবর্জনায় প্লাস্টিকজাত সামগ্রীর দেখা মিলছে। পুজোর পরে এমন ছবি দেখা গিয়েছে দমদম ও দক্ষিণ দমদমের একাধিক জায়গায়।
চলতি বছরে ওই দুই এলাকায় ডেঙ্গিতে কয়েক হাজার বাসিন্দা আক্রান্ত হয়েছেন। ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশের আশঙ্কা, খালে, জলাশয়ে ভাসতে থাকা কাগজের কাপ, থার্মোকল-সহ প্লাস্টিকজাত সামগ্রীর মধ্যে জল জমে ফের তা মশার আস্তাকুঁড়ে পরিণত হতে পারে। যদিও পুর প্রশাসনগুলির দাবি, বছরভর লাগাতার তারা সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী প্লাস্টিক এবং প্লাস্টিকজাত সামগ্রীর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালাচ্ছে। নিমিত অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। সচেতনতার প্রচারেও জোর বাড়ানো হয়েছে। তাই পুজোর কারণেই প্লাস্টিক ও প্লাস্টিকজাত সামগ্রীর ব্যবহার ফের বেড়েছে বলে মনে করছেন সকলে। পুজোর ফুল, পাতা ফেলতে যেমন প্লাস্টিকের ব্যবহার
হয়েছে, তেমনই মণ্ডপসজ্জা থেকে খাবার সরবরাহ, সবেতেই দেদার ব্যবহৃত হয়েছে সেই নিষিদ্ধ প্লাস্টিকই।
দমদমের এক বাসিন্দা শুভেন্দু ঘোষের কথায়, ‘‘যে সব জলাশয়ে প্রতিমা নিরঞ্জন হয়েছে, সেখানে দ্রুত কাঠামো তোলা হয়েছে। পুজোর ফুল-পাতা জলে ফেলতে দেওয়া হয়নি। এটা খুব ভাল প্রচেষ্টা। কিন্তু তার বাইরে একাধিক জলাশয়ে ভাসছে আবর্জনা। তার মধ্যে পুজোর ফুল-পাতা থেকে থার্মোকল ও প্লাস্টিকের কাপ, বাটিও রয়েছে।’’ আর এক বাসিন্দা দেবব্রত দে বলছেন, ‘‘আমাদেরও দোষ আছে। পুজোর সময়ে দোকান থেকে খাবার প্লাস্টিকের বাটিতে আনা হয়েছে। পুরকর্মীরা নিয়মিত আবর্জনা তুললেও লক্ষ্মীপুজোর পরে ফুল-পাতা প্লাস্টিকে মুড়েই জলে ফেলা হয়েছে। তবে এটা ঠিক যে, বিকল্পের প্রয়োজন।’’
দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বরুণ নট্ট জানান, এই বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার কাজ চলছে। অনেকটাই সাড়া মিলেছে। তাই তুলনায় অবস্থার উন্নতি হয়েছে, তবে তা পর্যাপ্ত নয়। পুজোর সময়ে প্লাস্টিক এবং প্লাস্টিকজাত সামগ্রীর ব্যবহার বেশি হয়েছে বলে পুনরায় এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে বলেই জানিয়েছেন তিনি। একই সুরে দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (পরিবেশ) মুনমুন চট্টোপাধ্যায় জানান, নিয়মিত বর্জ্য সংগ্রহ, বর্জ্য পৃথকীকরণ, প্লাস্টিক এবং প্লাস্টিকজাত সামগ্রীর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে অভিযানের ফলে আগের থেকে অনেকটাই বেশি সাড়া মিললেও তা পর্যাপ্ত নয়। তাই পুরসভার চেষ্টায় আরও গতি বাড়ানো হবে। তবে এই সমস্যা মেটাতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে বলেও মনে করছেন তিনি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)