প্রতীকী ছবি
শ্মশানের চুল্লির সুরক্ষায় প্লাস্টিকের ব্যাগের পরিবর্তে সুতির কাপড়ে মুড়িয়ে কোভিড মৃতদেহ আনার বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আগেই আবেদন জানিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। দিন দুয়েক আগে সেই আবেদন মঞ্জুরও করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু অভিযোগ, এখনও বেশির ভাগ কোভিড মৃতদেহই শ্মশানে আনা হচ্ছে প্লাস্টিকের ব্যাগে মুড়িয়ে। ফলে দূষণের সঙ্গে সঙ্গে শহরের একাধিক শ্মশানে যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে বিকল হয়ে যাচ্ছে বৈদ্যুতিক চুল্লিগুলি।
গত শনিবার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছিল যে, কোভিড দেহ সুতির কাপড়ে মোড়ানোর জন্য হাসপাতালগুলিকে ১৩০০ সুতির ব্যাগ বণ্টন করা হচ্ছে। কিন্তু পুরসভার এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, বাস্তবে হাতে গোনা কয়েকটি মাত্র কোভিড মৃতদেহ ছাড়া বাকি সব ক’টি দেহই প্লাস্টিকে মুড়িয়ে আনা হচ্ছে শ্মশানে।
কিন্তু রাজ্যের নির্দেশ সত্ত্বেও কেন প্লাস্টিকের ব্যবহার চলছে? স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা সঞ্জয় বনশল বলছেন, ‘‘কোভিড মৃতদেহ সুতির কাপড়ে মোড়ানোর জন্য প্রতিটি হাসপাতালকে সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর থেকে সেই কাপড় সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। সেখানে কাপড় পর্যাপ্ত পরিমাণেই রয়েছে। তবে তা পেতে ঠিক জায়গায় আবেদন করতে হবে।’’
প্লাস্টিকে মোড়ানো কোভিড দেহ দাহ করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একের পর এক চুল্লি। কলকাতা পুরসভা এলাকায় কোভিড মৃতদেহ দাহ করার জন্য ধাপায় নতুন ও পুরনো মিলিয়ে মোট চারটি, গড়িয়ায় চারটি, সিরিটি ও বিরজুনালায় দু’টি করে এবং নিমতলা শ্মশানে চারটি— অর্থাৎ মোট ১৬টি বৈদ্যুতিক চুল্লি রয়েছে। অভিযোগ, সংক্রমণের ভয়ে কোভিড মৃতদেহ প্লাস্টিকে মুড়িয়ে চুল্লিতে ঢোকানোর ফলে সেই প্লাস্টিক দলা পাকিয়ে চুল্লির ‘এপিডি’ বা ‘অ্যান্টি পলিউশন ডিভাইস’ নষ্ট করে দিচ্ছে। এই কারণেই বর্তমানে সিরিটির একটি ও গড়িয়ায় একটি চুল্লি বিকল হয়ে গিয়েছে। ‘এপিডি’ খারাপ থাকায় নিমতলা মহাশ্মশানের দু’টি চুল্লি থেকেও প্রচুর ধোঁয়া বেরোচ্ছে, যার ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার অভিযোগ, ‘‘প্লাস্টিকে দেহ মুড়িয়ে আনার জন্য গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে শহরের একাধিক চুল্লি খারাপ ছিল। এ ছাড়া প্লাস্টিক সহজে মাটির সঙ্গে মেশেও না।’’
এ দিকে, বৈদ্যুতিক চুল্লিগুলি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে থাকেন পুরসভার ইলেকট্রিক বিভাগের অধীনে কাজ করা ঠিকাদারেরা। পুরসভার এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, ‘‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আতঙ্কে ঠিকাদারেরা শ্মশানে আসতে চাইছেন না। বহু বলে তাঁদের আশ্বস্ত করলে তবেই আসছেন। যে জন্য চুল্লি বিকল হয়ে গেলেও তা সারাতে সময় লাগছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy