Advertisement
E-Paper

সোনিকার মৃত্যুর পিছনে বিক্রমের বেসামাল ও বেপরোয়া আচরণই দায়ী

গত ২৯ এপ্রিল ভোরে লেক মলের সামনে দুর্ঘটনায় পড়ে বিক্রমের গাড়ি। চালকের আসনে থাকা বিক্রম বেঁচে গেলেও পাশের সিটে বসা সোনিকা মারা যান। পুলিশ বিক্রমের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে মামলা করে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন বিক্রম।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৭ ০১:৫৭
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিছক দুর্ঘটনা নয়। রাতের শহরে বাড়ি ফেরার পথে মডেল সোনিকা সিংহ চৌহানের মৃত্যুর পিছনে গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে থাকা বন্ধু, অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের বেসামাল ও বেপরোয়া আচরণই দায়ী বলে আদালতে জানাল পুলিশ। বিক্রমের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর ধারা যুক্ত করতে মঙ্গলবার আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

আলিপুরে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে পুলিশের ওই আবেদন গৃহীত হয়েছে। বিক্রম অবশ্য এখন জামিনে। কিন্তু পুলিশি তদন্তেই গাড়ি চালানোর সময়ে তাঁর দায়িত্বজ্ঞানহীন কাণ্ডকারখানা নিয়ে তথ্যপ্রমাণ উঠে এসেছে বলে লালবাজারের কর্তারা জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, নতুন ধারা যুক্ত করার ফলে বিক্রমকে গ্রেফতার করতে বাধা থাকল না। আলিপুর আদালতের বিচারকের কাছে এ দিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানো, অর্থাৎ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় আবেদন করেছে পুলিশ। এর ফলে তাঁর সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন সাজাও হতে পারে।

সোনিকার পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে, তাঁরা শুধু চান, প্রকৃত সত্যটা সামনে আসুক। এটা সে দিকেই একটি পদক্ষেপ বলে তাঁরা মনে করেন।

গত ২৯ এপ্রিল ভোরে লেক মলের সামনে দুর্ঘটনায় পড়ে বিক্রমের গাড়ি। চালকের আসনে থাকা বিক্রম বেঁচে গেলেও পাশের সিটে বসা সোনিকা মারা যান। পুলিশ বিক্রমের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে মামলা করে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন বিক্রম। টিভি ও বড়পর্দার ওই অভিনেতা সহজেই জামিন পেয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। নড়েচড়ে বসেন তদন্তকারীরা। দু’দফায় বিক্রমকে থানায় ডেকে জেরা করে পুলিশ। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বিক্রম-সোনিকার বন্ধুদের। অভিযুক্তের পরিচিতদের বয়ান এবং পানশালা থেকে বিভিন্ন নথি সংগ্রহের পরে পুলিশ নিশ্চিত হয়ে যায়, বিক্রম মত্ত অবস্থাতেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন।

আরও পড়ুন, আপনি নাটক করছেন বিক্রম, লিখলেন রুক্মিণী

বিক্রম ও সোনিকার চার বন্ধুর গোপন জবানবন্দির রিপোর্টও এ দিন আদালতকে দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনায় দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া গাড়িটির ফরেন্সিক রিপোর্টও জমা পড়েছে। পরে সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল বলেন, ‘‘বিক্রম এবং সোনিকার চার বন্ধু আদালতের কাছে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, বিক্রম দুর্ঘটনার আগে দু’টি পানশালায় দফায় দফায় মদ্যপান করেছিলেন। আদালতকে এ সব জানিয়েই নতুন ধারা যোগ করা হয়েছে।’’

লালবাজার সূত্রের খবর, ফরেন্সিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই রাতে বিক্রমের গাড়ির গতি এক বারও ৯০-এর নীচে নামেনি। এক সময়ে তা ১১৫ পর্যন্ত উঠেছিল। দুর্ঘটনার ঠিক সাড়ে চার সেকেন্ড আগে ঘণ্টায় ১০৫ কিলোমিটার গতিবেগ ছিল বলে রিপোর্টে প্রকাশ। দু’সেকেন্ড আগে ছিল ঘণ্টায় ৯৩ কিলোমিটার। দুর্ঘটনাটি ঘটার দেড় সেকেন্ড আগেও ব্রেক কষেননি বিক্রম। যে হেতু সামনের দিকে ধাক্কা লাগেনি, তাই গাড়ির এয়ারব্যাগও খোলেনি। বিক্রমের সিটবেল্ট বাঁধা থাকলেও সোনিকার ছিল না বলেই জানিয়েছে পুলিশ।

রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটে, সেখানে একটি বাঁক রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, বিক্রম বেসামাল থাকায় গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। তবে তাঁর রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও আসেনি বলে পুলিশের দাবি। বিক্রম মদ্যপান করেছিলেন কি না, রক্ত পরীক্ষায় তা আরও স্পষ্ট হবে বলেই দাবি পুলিশের।

Vikram Chatterjee বিক্রম চট্টোপাধ্যায় Sonika singh Chauhan সোনিকা সিংহ চৌহান
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy