Advertisement
E-Paper

মাছের চাষে জলাভাব

মাছেভাতে বাঙালি। কিন্তু সেই বাংলার রাজধানীতেই মাছ চাষের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত মৎস্যজীবীরা। পলি জমা এবং পর্যাপ্ত জলের অভাবে ভবিষ্যতে মাছ চাষ বন্ধ করে দিতে হতে পারে বলেও আশঙ্কা তাঁদের।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৭ ০২:৪৮
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মাছেভাতে বাঙালি। কিন্তু সেই বাংলার রাজধানীতেই মাছ চাষের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত মৎস্যজীবীরা। পলি জমা এবং পর্যাপ্ত জলের অভাবে ভবিষ্যতে মাছ চাষ বন্ধ করে দিতে হতে পারে বলেও আশঙ্কা তাঁদের। এ কথা জানিয়ে চিঠিও গিয়েছে মৎস্যমন্ত্রীর কাছে। কিন্তু সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ।

পূর্ব কলকাতা জলাভূমি এলাকার নাটাভেড়ি মৎস্য কোঅপারেটিভ সোসাইটির চেয়ারম্যান হরিদাস জেলে বলেন, ‘‘আগে ৫০ গ্রামের চারামাছ এক বছরে বেড়ে হত এক কেজি। জলের অভাবে এখন সব চারা জলে ফেলা হলেও পুরো বাঁচে না। তার উপরে কমেছে মাছের বৃদ্ধিও।’’

সুরাহা না হলেও মাছ চাষের এই সমস্যার কথা প্রকাশ্যে মেনে নিয়েছেন মৎস্য দফতরের কর্তারাও। পূর্ব কলকাতার জলাভূমি নিয়ে কর্মশালায় মৎস্যসচিব প্রভাত মিশ্র জানান, বর্তমানে ওই জলাভূমি থেকে বছরে সাড়ে দশ হাজার টন মাছ উৎপন্ন হয়। কিন্তু পর্যাপ্ত নিকাশির জল পূর্ব কলকাতায় পৌঁছচ্ছে না, ফলে ক্ষতি হচ্ছে চাষের। বানতলার দিক থেকে যে পরিমাণ জল আসার কথা, তা আসছে না। মাঝে কোথাও পলি জমে রয়েছে বা কোনও রকম সমস্যা হয়েছে কিনা, তা নিয়ে পুরসভার সঙ্গে কথা বলবে মৎস্য.দফতর।

এ ছাড়া, চিংড়িঘাটা খালটিও মজে যাওয়ায় তার স্রোত কমে গিয়েছে। নিকাশির জলের জোগান বাড়লে মাছের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব।

মৎস্য দফতরের কর্তাদের অনেকেই বলছেন, কলকাতার বাজারে বিক্রি হওয়া মাছের বড় অংশের জোগান দেয় পূর্ব কলকাতার জলা। এই চাষে বহু পরিবারের রুটিরুজি জড়িত। ফলে মাছ চাষ ব্যাহত হলে শুধু বাঙালির পাতে মাছের জোগানে টান পড়বে তা-ই নয়, কাজ হারাবেন বহু মানুষ।

মৎস্য দফতরের খবর, শহরের নিকাশি বর্জ্য নালা বেয়ে ওই জলাগুলিতে পড়ত। প্রাকৃতিক উপায়ে শোধিত হয়ে তা ভূগর্ভের জলস্তরের ঘাটতি পূরণ করত। নিকাশি জলে প্রচুর অতিক্ষুদ্র উদ্ভিদ এবং প্রাণী (প্ল্যাঙ্কটন) তৈরি হয়। সেগুলিই মাছের খাদ্য হিসাবে কাজ করে। ফলে সেখানে মাছ চাষের উপযুক্ত পরিবেশ ছিল। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণে নিকাশির জল না পৌঁছনোয় পরিস্থিতি প্রতিকূল হয়ে উঠেছে।

একে তো জলের জোগান কমেছে, তার উপরে রয়েছে পলির সমস্যাও। চার নম্বর ভেড়ি মৎস্য কো-অপারেটিভ সোসাইটির সম্পাদক বিশ্বনাথ মণ্ডলের দাবি, বছর দশেক আগে জলাশয়ের গভীরতা ছিল দশ ফুট। পলি পড়ে এখন তা দু’ফুটে দাঁড়িয়েছে। কম জল ও অগভীর জলায় প্রচুর মাছ মারা যাচ্ছে। রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের এমডি সৌম্যজিৎ দাস বলেন, ‘‘ওই এলাকার ৯০ শতাংশ জলাশয় মৎস্যজীবী সমবায়ের হাতে। সেখানে পলি জমে মাছ চাষের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।’’

তা হলে কি সত্যিই বাঙালির পাতে টান পড়বে? এর সুরাহায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে?

মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলছেন, ‘‘পূর্ব কলকাতা জলাশয়ের পুরো সংস্কার করা আশু প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। কিন্তু তা করতে গেলে নানা আইনি জটিলতা রয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্র এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কথা বলছি।’’

Fishery Water crisis
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy