E-Paper

সংস্কৃতের পাঠ্যবই বেরোলেও রয়েই গেল বিতর্ক 

দ্বাদশের পড়ুয়ারা জানাচ্ছে, আগামী সেপ্টেম্বরে তাদের তৃতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা। তাতে প্রশ্ন থাকবে পুরোপুরি মাল্টিপল চয়েস ভিত্তিক (এমসিকিউ) ধরনের।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:৪৪
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

অনেক প্রতীক্ষার পরে অবশেষে উচ্চ মাধ্যমিকের তৃতীয় সিমেস্টারের সংস্কৃতের পাঠ্যবই প্রকাশ করল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। তবে, বই প্রকাশে দেরি দেখে বহু পড়ুয়াই ইতিমধ্যে বাজারে আসা সহায়িকা বই কিনে পড়তে শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু তাদের অভিযোগ, সংসদ প্রকাশিত বইয়ের সঙ্গে বাজারে পাওয়া বইয়ের মিল নেই বললেই চলে। ফলে, এক দিকে যেমন বিপাকে
পড়েছে তারা, তেমনই যে সব প্রকাশনা সংস্থা আগেই সহায়িকা বই বার করেছে, তারা সেগুলি নিয়ে কী করবে, তা নিয়ে রীতিমতো ফাঁপরে পড়েছে।

দ্বাদশের পড়ুয়ারা জানাচ্ছে, আগামী সেপ্টেম্বরে তাদের তৃতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা। তাতে প্রশ্ন থাকবে পুরোপুরি মাল্টিপল চয়েস ভিত্তিক (এমসিকিউ) ধরনের। ফলে, হাতে সময় খুব বেশি নেই। দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের বক্তব্য, বাজারে কোনও সংস্কৃত বই নেই। সংস্কৃতের পাঠ্যবই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ প্রকাশ করলেও সেটি বেরোয় একটি নির্দিষ্ট প্রকাশনা সংস্থা থেকে। সেই বই কিনতে হয় পড়ুয়াদের। স্বাভাবিক ভাবেই তাদের প্রশ্ন, সংসদ এত দিন সংস্কৃতের পাঠ্যবই প্রকাশ না করলেও বাজারে সহায়িকা বই চলে
এসেছে। যা তারা কিনে পড়তে শুরু করে দিয়েছে। সেই বইগুলি নিয়ে তারা কী করবে?

অন্য দিকে, যে সব প্রকাশনা সংস্থা সহায়িকা বই প্রকাশ করেছে, তাদের প্রশ্ন, বেরিয়ে যাওয়া কয়েক হাজার কপি ফের যদি তাদের কাছে ফেরত আসে, তারা কোন দিকে যাবে? কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সংস্কৃতের পাঠ্যবই প্রকাশের আগেই কী ভাবে একাধিক প্রকাশনা সংস্থা সহায়িকা বই প্রকাশ করল? এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি কার্যত দায় চাপিয়েছে সংসদের ঘাড়েই। এমনই একটি প্রকাশনা সংস্থার আধিকারিকেরা জানান, ২০২৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ যে পাঠ্যক্রম প্রকাশ করেছিল, সেখানে থাকা সংস্কৃতের বিষয়-সূচি অনুযায়ী তাঁরা সহায়িকা বই প্রকাশ করেছেন। গত ১৩ ডিসেম্বর সংসদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, বাংলা ও ইংরেজির পাঠ্যক্রমে কিছু পরিবর্তন হবে। সেখানে সংস্কৃতের পাঠ্যক্রমের কোনও পরিবর্তনের কথা বলেনি তারা। তা হলে এখন কী ভাবে সংসদ পাঠ্যক্রম বদলে বই বার করে?

যদিও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই অভিযোগ ঠিক নয়। আমরা পাঠ্যক্রমে এক-একটি অধ্যায়ের নাম লিখে বলেছিলাম, তার কিছু অংশ পাঠ্যবইতে থাকবে। কিন্তু কোন অংশ, সেটা উল্লেখ করা হয়নি। আমাদের বই প্রকাশের আগে কোনও প্রকাশনা সংস্থা সহায়িকা বই বার করলে সেই দায় তো তাদের।’’ যদিও সংস্থাগুলির পাল্টা দাবি, সংসদ যে অধ্যায়গুলির কথা বলেছিল, সেগুলি তারা পাঠ্যবইতে দেয়নি।

বঙ্গীয় প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতা সভার সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘সহায়িকা বইয়ের সঙ্গে সংসদের বইয়ের যেমন অনেক ক্ষেত্রে মিল নেই, তেমনই সংসদের পাঠ্যবইও সহায়িকা বইয়ের ধাঁচে হয়েছে। যা কাম্য নয়।’’
সব দেখেশুনে অভিভাবকদের প্রশ্ন, একে তো বই প্রকাশে দেরি হচ্ছে। তার উপরে এই বিতর্কে আখেরে ক্ষতি হচ্ছে পড়ুয়াদের। সেই দায় কে নেবে?

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

WBCHSE

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy