Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal Lockdown

খাদ্যাভাবে মরছে মুরগি, মাংসের জোগানে প্রশ্ন

অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের আওতায় পশুখাদ্য। লকডাউনে সেই পণ্য পরিবহণে ছাড় রয়েছে। তা হলে মুরগির খাবার জোগানে বাধা কোথায়?

শূন্য মুরগির খামার। আরামবাগে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

শূন্য মুরগির খামার। আরামবাগে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২০ ০১:৩০
Share: Save:

লকডাউনের জেরে কার্যত স্তব্ধ জনজীবন। রাজ্যের বহু খামারে মুরগি মরছে। মিলছে না ছানাও। ফলে শিকেয় উঠেছে মুরগি পালন। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে রাজ্যে মুরগির মাংসের অভাব দেখা দেবে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

এ রাজ্যে মুরগির মাংসের অন্যতম উৎপাদক জেলা হুগলিতে রয়েছে প্রায় ৮০০টি খামার। সেখান থেকে কলকাতা ও অন্যান্য জেলায় মুরগি সরবরাহ করা হয়। উদ্বিগ্ন খামার-মালিক থেকে রাজ্য পোলট্রি ফেডারেশনের কর্তারা। ফেডারেশনের জেলা কমিটির সভাপতি সুজয় সাধু বলেন, “খাবারের অভাবে খামারে মুরগি মরছে। প্রচুর ক্ষতি হচ্ছে। করোনার ধাক্কা সামলানোর পরেও হয়তো বাজারে মুরগির মাংসই
থাকবে না।’’

অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের আওতায় পশুখাদ্য। লকডাউনে সেই পণ্য পরিবহণে ছাড় রয়েছে। তা হলে মুরগির খাবার জোগানে বাধা কোথায়? জেলা প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের উপ-অধিকর্তা রূপম বড়ুয়ার দাবি, ‘‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হিসেবে মুরগির খাবার সরবরাহ করতে কোথাও বাধা নেই। ডিলাররা চাইলেই পাবেন।’’ যদিও মুরগির কারবারি একটি সংস্থার আরামবাগ শাখার সুপারভাইজার সৌরভ দে বলছেন, “কিন্তু সেই খাবার সংগ্রহ করতে শ্রমিক বা গাড়ি কোথায়? দেড় লক্ষেরও বেশি মুরগি আমাদের বিভিন্ন খামারে মরতে বসেছে।”

রাজ্য পোলট্রি ফেডারেশনের হুগলি শাখা সূত্রের খবর, জেলার খামারগুলিতে সপ্তাহে গড়ে ৪-৫ লক্ষ মুরগি পালন হয়। বিভিন্ন সংস্থা সেখানে মুরগির ছানা সরবরাহ করে। ৩৮-৪০ দিন পর মুরগি ন্যূনতম দু’কেজি ওজনের হলে সংস্থাই বিক্রির ব্যবস্থা করে। মুরগি-ছানার খাবার এবং ওষুধ দিতে সংস্থাগুলির কেজি প্রতি ৭৫-৮০ টাকা খরচ হয়। আর প্রতিপালন করে খামারগুলি প্রতি কেজিতে সাড়ে ৬ টাকা কমিশন পায়।

দেশজোড়া লকডাউন ঘোষণার আগে-পরে দু’দিন পাইকারি ২০-৩০ টাকা কেজি দরে মুরগি বিক্রি করে সংস্থাগুলি। চাহিদা অনুপাতে বর্তমানে জোগান কমে যাওয়ায় দু’দিন ধরে পাইকারি ৫০ টাকা কেজি দরে তা বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু খোলা বাজারে অনেক বেশি দামে বিক্রি হওয়ায় কালোবাজারির অভিযোগও উঠেছে।

অভিযোগ পেয়েই হুগলি জেলা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখা এ দিন হুগলির কয়েকটি বাজারে অভিযান চালায়। ওই জেলার এক পুলিশকর্তা বলেন, “কেজি প্রতি ৯০-১০০ টাকার বেশি দরে বিক্রি করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে ব্যবসায়ীদের। সাড়ে পাঁচ টাকার বেশি দামে ডিমও বিক্রি করা যাবে না।”

পশুখাদ্যের অভাবে গোঘাটের কুমুড়শায় একটি খামারে প্রায় ১৫০০ মুরগি মারা গিয়েছে বলে দাবি মালিক দেবীপ্রসাদ গুঁইয়ের। চোখের সামনে মুরগি মরতে দেখেও কিছু করতে পারছেন না গোঘাটেরই বামনিয়া গ্রামের খামার-মালিক কাশীনাথ চক্রবর্তী। তিনি জানান, প্রতিদিন তিন হাজার মুরগির জন্য চার বস্তা খাবার লাগে। খাবার না পেয়ে সব মুরগি মরে যাচ্ছে।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Lockdown Poultry Farms
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE