Advertisement
E-Paper

Attempt to Murder: বড় ছেলের অত্যাচার থেকে ছোট ছেলেকে বাঁচাতে খুনের চেষ্টা মায়ের

পুলিশ সূত্রের খবর, বছর তিরিশের আহত ওই তরুণের নাম সুরজিৎ দাস। তাঁর বাবা প্রফুল্ল দাস পোর্ট ট্রাস্টের কর্মী ছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৫৬
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

অভিযোগ, মানসিক সমস্যায় ভোগা ছোট ছেলের উপরে সর্বক্ষণ অত্যাচার চালান বড় ছেলে। দু’বেলা ঠিকঠাক খেতে পর্যন্ত দেওয়া হয় না ছো‌ট ছেলেকে। পান থেকে চুন খসলেই জোটে বেধড়ক মার! অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে ছোট ছেলেকে বাঁচাতেই ঘুমন্ত বড় ছেলেকে কাটারি দিয়ে কোপালেন মা! বাঁশদ্রোণী থানা এলাকায় মঙ্গলবার গভীর রাতের এই ঘটনায় শেষ পর্যন্ত রক্ষা পেয়েছেন বড় ছেলে। পরে পুলিশ গ্রেফতার করে ওই মহিলাকে। বুধবার আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, বছর তিরিশের আহত ওই তরুণের নাম সুরজিৎ দাস। তাঁর বাবা প্রফুল্ল দাস পোর্ট ট্রাস্টের কর্মী ছিলেন। বাবার মৃত্যুর পরে মা কাবেরী দাস এবং মানসিক সমস্যায় ভোগা এক ভাইকে নিয়ে বাঁশদ্রোণী প্লেস এলাকার বাড়িতে তিনি থাকেন। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে নিজের ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন সুরজিৎ। রাত দেড়টা নাগাদ হঠাৎ কাটারি নিয়ে ছেলের উপরে কাবেরী চড়াও হন বলে অভিযোগ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছেলের মাথার পিছনের দিক লক্ষ্য করে কোপাতে শুরু করেন তিনি। রক্তাক্ত অবস্থায় কোনও রকমে বাড়ি থেকে বেরিয়ে থানায় পৌঁছন সুরজিৎ। রাতে থানায় কর্তব্যরত এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘হঠাৎ দেখি সম্পূর্ণ ভিজে গায়ে, রক্তাক্ত অবস্থায় এক যুবক থানায় এসে ঢুকেছেন। প্রশ্ন করায় বলেন, তাঁর মা তাঁকে খুন করে ফেলবেন।’’ ওই যুবকের থেকে ঠিকানা নিয়ে এর পরে জল ভেঙে ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছয় পুলিশ। সেখান থেকেই আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয় মহিলাকে। মায়ের সঙ্গেই থানায় আসেন ছোট ছেলে। আহত সুরজিৎকে এর পরে পাঠানো হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে তাঁর মাথায় বেশ কয়েকটি সেলাই পড়েছে।

অভিযুক্ত মহিলা পুলিশকে জানান, তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পরে তাঁদের ফেলে মুম্বই চলে গিয়েছিলেন সুরজিৎ। সেখানেই পানশালায় গানবাজনা করতেন তিনি। কোনও মতে পাড়ার এক সহৃদয় ব্যক্তির সাহায্যে এবং স্বামীর পেনশনের দৌলতে ছোট ছেলে ও তাঁর নিজের জীবন চলে যায় বলে কাবেরীর দাবি। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে ফিরে আসেন সুরজিৎ। এর পর থেকে বাবার পেনশনের টাকা নিয়ে মায়ের সঙ্গে তিনি ঝগড়া করতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। ছোট ভাইকে মারধরের শুরুও সেই থেকেই। পুলিশ সূত্রের দাবি, কাবেরী জানিয়েছেন, টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিতেন সুরজিৎ। এত অত্যাচার করতেন যে, পুলিশে যাওয়ার সাহস পাননি কাবেরী। তাঁর দাবি, ‘‘বড় ছেলে বলত, পুলিশে গেলেও বড়জোর দু’দিন ধরে রেখে ছেড়ে দেওয়া হবে। তার পরে ফিরে এসে ও নাকি আমাকে আর ভাইকে খুন করবে। ছোট ছেলেকে বাঁচাতেই সুরজিৎকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে ফেলব বলে ঠিক করি।’’

এ দিন থানায় গেলে দেখা যায়, হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া সুরজিৎকে নিয়ে আসা হয়েছে সেখানে। পুলিশের তরফে মহিলাকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ছেলের মুখোমুখি বসিয়ে। কিন্তু মায়ের থেকে দূরে রাখাই যাচ্ছে না তাঁর ছোট ছেলেকে। থানা থেকেই ব্যবস্থা করা হয়েছে তাঁর পোশাক ও খাবারের। কিন্তু সে দিকে তাঁর নজর নেই। তিনি শুধু বলে চলেছেন, ‘‘দাদা মারে। মা কিছু করেনি।’’ শেষে মহিলাকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়িতে তোলার সময়ে ছোট ছেলের সঙ্গেই রীতিমতো ধস্তাধস্তি হল পুলিশের। কিছুতেই মাকে ছাড়বেন না তিনি। শেষে এক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘মাকে তো গ্রেফতার করা হল, কিন্তু এ বার এই ছেলের কী হবে? মা ছাড়া তো ছেলে মুহূর্তও থাকতে পারবে না!’’ মা-ও আশ্বাস দিয়ে গেলেন, ‘‘পুলিশকাকুদের সঙ্গে থাকো। আমি তাড়াতাড়িই ফিরব।’’

Crime Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy