Advertisement
০৩ মে ২০২৪

টাকার দাবিতে বধূকে পুড়িয়ে ‘খুন’, গ্রেফতার স্বামী ও শ্বশুর

পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১০ সালে বিহারের বেগুসরাই-এর বাসিন্দা পিঙ্কির সঙ্গে বিয়ে হয় ফুলবাগানের কাদাপাড়ার বাসিন্দা সাজন মল্লিকের। সাজন পেশায় একশো দিনের কর্মী। পিঙ্কির বাবা দিলীপ মল্লিক বিহার পুলিশে কর্মরত। তিনি সপরিবার বেগুসরাইয়ে থাকেন।

পিঙ্কি মল্লিক। নিজস্ব চিত্র

পিঙ্কি মল্লিক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৫৩
Share: Save:

টাকার দাবিতে এক গৃহবধূকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে মৃতার স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেফতার করল পুলিশ। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে লাগাতার অত্যাচার চলত ফুলবাগানের বাসিন্দা পিঙ্কি মল্লিকের (৩০) উপরে। পুলিশ জানায়, ৩১ অক্টোবর পিঙ্কিকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তাঁর দেহের নব্বই শতাংশই পুড়ে গিয়েছিল। পরে তাঁকে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হলেও রবিবার দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনায় সোমবার পিঙ্কির স্বামী সাজন মল্লিক ও শ্বশুর রাজকুমার মল্লিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১০ সালে বিহারের বেগুসরাই-এর বাসিন্দা পিঙ্কির সঙ্গে বিয়ে হয় ফুলবাগানের কাদাপাড়ার বাসিন্দা সাজন মল্লিকের। সাজন পেশায় একশো দিনের কর্মী। পিঙ্কির বাবা দিলীপ মল্লিক বিহার পুলিশে কর্মরত। তিনি সপরিবার বেগুসরাইয়ে থাকেন।

পিঙ্কির পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে মেয়ের উপরে লাগাতার শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাত সাজন ও তার বাড়ির লোকেরা। জামাইয়ের দাবি মেনে বিহার থেকে সাধ্য মতো টাকাও পাঠাতেন শ্বশুর। কিন্তু গত ৩১ অক্টোবর এক লক্ষ টাকা দাবি করে সাজন। দিলীপবাবুর অভিযোগ, এত টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় মেয়েকে পুড়িয়ে মারা হয়। দিলীপবাবু ফুলবাগান থানায় জামাই, মেয়ের শ্বশুর-সহ চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, ৩১ অক্টোবর পিঙ্কি মাকে ফোনে জানান, স্বামী ও শ্বশুরবাড়ি থেকে এক লক্ষ টাকা দাবি করছে। পিঙ্কির মা মনোরমাদেবীর অভিযোগ, ‘‘মেয়ে ফোনে বলে, টাকা না দিলে জামাই ওকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। এখনই অত টাকা আমরা কোথায় পাব বলায় জামাই ফোন কেটে দেয়।’’ মনোরমাদেবীর আরও অভিযোগ, ‘‘৩১ তারিখে গভীর রাতে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে জানানো হয়, পিঙ্কি দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।’’

দুর্ঘটনার কথা জানতে পেরে দিলীপবাবু চেতলারই বাসিন্দা তাঁদের এক আত্মীয়কে ফোন করেন। পিঙ্কির মাসি শান্তি মল্লিকের বাড়ি পিঙ্কির শ্বশুরবা়ড়ির লাগোয়া। এ দিন শান্তিদেবী বলেন, ‘‘তখন রাত প্রায় দু’টো। পিঙ্কির আর্তনাদ শুনে বেরিয়ে দেখি, অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় পিঙ্কি ঘর থেকে বেরিয়ে ছোটাছুটি করছে। শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই ওকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’’ ১ নভেম্বর বিহার থেকে কলকাতায় আসেন পিঙ্কির বাবা-মা, দাদারা।

পিঙ্কির মা মনোরমাদেবীর অভিযোগ, ‘‘জামাই মেয়ের গায়ে কেরোসিন ঢেলে পু়ড়িয়ে মেরে ফেলেছে। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি চাই।’’ পিঙ্কির চার শিশুসন্তান রয়েছে। তাদেরও মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে আটকে রাখার অভিযোগ জানান পিঙ্কির মা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

arrest burned to death murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE