রাতে মেয়ের পাশেই শুয়ে ছিলেন মা। সকালে পরিজনেদের ঘুম ভাঙলে খেয়াল হয় তিনি নেই। খুঁজতে খুঁজতেই নজর পড়ল বাড়ির পাতকুয়োর দিকে। সেটির ঢাকনা খোলা। ভিতরে কিছু একটা পড়ে রয়েছে। ঠিক মতো দেখতেই বোঝা গেল, পাতকুয়োর ভিতরে জলে ডুবে রয়েছেন ওই মহিলা।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকালে বেলঘরিয়ার বান্ধবনগরে। খবর পেয়ে পুলিশ ও দমকল ওই মহিলাকে পাতকুয়ো থেকে তুলে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃতার নাম মধুছন্দা সাহা (৪৮)। এটি দুর্ঘটনা না আত্মহত্যা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে খবর, বান্ধবনগরের বাসিন্দা, পেশায় রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের ইঞ্জিনিয়ার দিলীপ সাহার স্ত্রী মধুছন্দাদেবী। তাঁদের একমাত্র মেয়ে চিকিৎসক। সম্প্রতি তাঁরা কেষ্টপুরে ফ্ল্যাট কিনেছেন। মাঝেমধ্যেই পরিবারকে নিয়ে বেলঘরিয়ায় পৈতৃক বাড়িতে থাকতে আসতেন দিলীপবাবু। শুক্রবারও তাঁরা এসেছিলেন। এ দিন দিলীপবাবু বলেন, ‘‘স্ত্রী মেয়ের পাশে শুয়েছিলেন। আমি অন্য ঘরে ছিলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনি, উনি বাড়িতে নেই। খোঁজাখুঁজি করে দেখতে পাই পাতকুয়োয় পড়ে রয়েছেন।’’
দিলীপবাবুর দাদা জয়দীপ সাহা জানান, এ দিন ঘুম থেকে ওঠার পরে তিনি জানতে পারেন মধুছন্দাদেবীর খোঁজ মিলছে না। ওই মহিলার শাশুড়ি প্রথম খেয়াল করেন পাতকুয়োর ঢাকনা খোলা। তিনি ছেলেদের বিষয়টি জানানোর পরে জয়দীপবাবু গিয়ে দেখেন, মধুছন্দাদেবী পড়ে রয়েছেন। এ দিন মহিলার পরিজনেরা জানান, কিছু দিন ধরেই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন বলে বেলঘরিয়ায় চিকিৎসকও
দেখানো হচ্ছিল। সব বিষয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়তেন মধুছন্দা। বেশি দিন বাঁচবেন না বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করতেন। কিন্তু ঘুম থেকে উঠে তিনি কেন পাতকুয়োর দিকে গিয়েছিলেন, তা কারও কাছেই স্পষ্ট নয়।