E-Paper

কাটা মুণ্ডর কানে সোনার দুল, টাটকা রক্ত দেখে শিউরে উঠলাম

জঞ্জালের স্তূপের মধ্যে একটি সাদা প্লাস্টিকের মোড়ক ঘিরে ভিড় করে রয়েছেন লোকজন। ঝুঁকে দেখি, ওই প্লাস্টিকে এক মহিলার কাটা মুণ্ড! কানে সোনার দুল। চাপ চাপ টাটকা রক্ত।

অচিন্ত্য গুহ রায়

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:৪৫
প্লাস্টিকে এক মহিলার কাটা মুণ্ড!

প্লাস্টিকে এক মহিলার কাটা মুণ্ড! —প্রতীকী চিত্র।

খবরটা যখন আসে, তখন সকাল প্রায় পৌনে ৯টা। ব্যবসার কাজে সবে বাড়ি থেকে বেরোনোর তোড়জোড় করছি। গিয়ে দেখি, জঞ্জালের স্তূপের মধ্যে একটি সাদা প্লাস্টিকের মোড়ক ঘিরে ভিড় করে রয়েছেন লোকজন। ঝুঁকে দেখি, ওই প্লাস্টিকে এক মহিলার কাটা মুণ্ড! কানে সোনার দুল। চাপ চাপ টাটকা রক্ত।

দৃশ্যটা দেখেই শিউরে উঠলাম। নিজেকে সামলাতে না পেরে সরে এলাম। ৬৫ বছরের এই জীবনে কোনও কিছু এ ভাবে আমাকে নাড়া দিয়ে যায়নি। দিনভর এই নিয়েই কেটে গিয়েছে। ব্যবসার কাজে আর যাওয়া হয়নি। কবে এই রহস্য কাটবে, জানি না। মহিলাটি কে? কারও ঘরের বৌ, কারও মা, কারও স্ত্রী হয়তো। কে বা কারা এমনটা করল, সেটাই ভেবে পাচ্ছি না। পাড়ায় যাঁর সঙ্গেই কথা হচ্ছে, দেখছি ভয় পেয়ে গিয়েছেন। যেখানে মুণ্ডটা পড়ে ছিল, সেখানে দু’জন পুরপ্রতিনিধি এসেছিলেন। তাঁরা আশ্বস্ত করে গেলেও কারও ভয় কেটেছে বলে মনে হচ্ছে না। এমন ঘটনার পরে প্রতিবেশীরা সকলেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

গল্ফ গ্রিন থানার এই এলাকা কলকাতা পুরসভার ৯৫ এবং ৯৭ নম্বর ওয়ার্ডের সীমানায়। স্থানীয়দের অনেকের অভিযোগ, সীমানা বলেই কিনা জানি না, কোনও পুরপ্রতিনিধিরই তেমন নজর নেই এই এলাকায়। আমরা নিজেদের মতো করে অনেকেই এলাকায় কাজ করি। তবে, যে জায়গা থেকে মাথাটি উদ্ধার হয়েছে, সেখানে পর্যাপ্ত আলো নেই। বিভিন্ন এলাকার লোক এসে সেখানে আবর্জনা ফেলে দিয়ে চলে যান। পুরপ্রতিনিধিদের বলা হলে তবেই পরিষ্কার করা হয়। না-হলে এখানে হয়তো চোদ্দোতলা ময়লার স্তূপ তৈরি হয়ে যেত! কিন্তু সেখান থেকেই যে এমন কাটা মাথা উদ্ধার হবে, তা ভাবিনি।

এ দিন সকালে শুনলাম, ওই আবর্জনা পরিষ্কার করতে এসে একটি ছেলে প্লাস্টিকবন্দি অবস্থায় কাটা মাথাটি প্রথম দেখতে পায়। তার পর থেকে দফায় দফায় পুলিশ এবং পুরপ্রতিনিধিদের ভিড় লেগেই রয়েছে। দেখলাম, পুলিশ কুকুর নিয়ে এসেও তদন্ত হচ্ছে। কাছের একটি আবাসনেও পুলিশ কুকুর গিয়েছিল। কিন্তু নিশ্চিত ভাবে কিছু জানা যায়নি। ওই মহিলাকে আগে দেখেছেন বলেও কেউ কেউ দাবি করেছেন। সব মিলিয়ে রহস্যজনক পরিস্থিতি।

বাড়িতে স্ত্রী এবং ছেলে রয়েছেন। ওঁদেরও নাওয়া-খাওয়া হয়নি। এর মধ্যে ফোন করে স্ত্রীর প্রশ্ন, ‘‘কিছু কি জানা গেল? আমাদের পাড়ায় এমন ঘটে গেল!’’ ওঁকে কী উত্তর দেব, জানি না। নিজেরই এখনও ঘোর কাটছে না!

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Golf Green Murder dead body

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy