আগে মুচলেকা, তার পরে অনুমতি।
শুধুই সিসি (কমপ্লিশন সার্টিফিকেট) নয়, নিউ টাউনে আবাসিক এলাকায় ব্যবসা করতে হলে তিন মাসের মধ্যে ফায়ার লাইসেন্স-সহ একাধিক জরুরি নথিপত্র জমা দিতে হবে ‘নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (এনকেডিএ)-র কাছে। এনকেডিএ যদি মনে করে, জমা পড়া সেই সব নথি ব্যবসা চালু করারপক্ষে যথেষ্ট, একমাত্র তা হলেই বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড শুরু করা যাবে আবাসিক বাড়িতে। এর জন্য আবেদনকারীকে আবেদনপত্র ছাড়াও এই মর্মে একটি মুচলেকা জমা দিতে হবে যে, ব্যবসার জন্য এনকেডিএ-র নির্দেশিত প্রয়োজনীয় নথিপত্র তিন মাসের মধ্যে জমাদেওয়া হবে।
গত এপ্রিল মাসের শেষে কলকাতার মেছুয়া এলাকার একটি হোটেলে অগ্নিকাণ্ডে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তদন্তে জানা যায়,হোটেল চালানোর জন্য ফায়ার লাইসেন্স-সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি কর্তৃপক্ষের কাছে ছিল না। ওই হোটেলের বেশ কিছু অংশ পুর আইন না মেনে তৈরি করা হয়েছিলবলেও অভিযোগ। ছাদ ঢেকে ফেলারও অভিযোগ ওঠে হোটেলকর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এর পরে কলকাতা পুরসভাও ছাদে রেস্তরাঁ চালানোর উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। একই পথে হাঁটেএনকেডিএ। ছাদে থাকা একাধিক রেস্তরাঁ, অনুষ্ঠান বাড়ি, ব্যাঙ্কোয়েটহল বন্ধ করে দিয়েছিল তারা। যদিও ধীরে ধীরে আবার সেই সব ব্যবসা চালু হচ্ছে সেখানে। তবে, এনকেডিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যাঁরা ব্যবসা শুরু করার জন্য আবেদনকরছেন, তাঁদের তিন মাসের মধ্যে ফায়ার লাইসেন্স-সহ সব ধরনেরনথি জমা দিতে হবে। সেই সব নথি খতিয়ে দেখে এনকেডিএ সন্তুষ্ট হলে তবেই ব্যবসার অনুমতি দেবে।
প্রসঙ্গত, সল্টলেক কিংবা নিউ টাউনের কোনও আবাসিক বাড়িতে অতিথিশালা, স্পা, রেস্তরাঁ, ব্যাঙ্কোয়েট-সহ নানা ধরনেরব্যবসা চলে। সল্টলেকে এই ধরনের ব্যবসা ঘিরে অতীতে অপরাধের ঘটনাও ঘটেছে। নিউ টাউনে আবার অতিথিশালায় ঘটেছিল যৌন হেনস্থার মতো ঘটনা। মেছুয়ারঘটনার পরে এনকেডিএ কর্তৃপক্ষ তাঁদের এলাকার আবাসিক বাড়িগুলিতে চলা ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের উপরে সামগ্রিক ভাবে একটি সমীক্ষা চালান। আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, ওই সব ব্যবসায়িক স্থল পরিদর্শন করে দেখা গিয়েছে, সিংহভাগ ক্ষেত্রেই নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে নির্দিষ্ট মাপের বাইরে গিয়ে আবাসিক বাড়ি বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এনকেডিএ-র থেকে কোনও রকম অনুমতিওনেওয়া হয়নি। এই বাবদ যে কর এনকেডিএ-র পাওনা হয়, তা-ও তারা পায়নি।
তাই এ বার শুরু থেকেই আবাসিক বাড়িতে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে কঠোর হতে চাইছেএনকেডিএ। আধিকারিকেরা জানান, মুচলেকা না দিলে কোনও ভাবেই আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে না। এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, ‘‘এই ধরনের ব্যবসায় ফায়ারলাইসেন্স ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে সবার আগেদফতরের দিকে আঙুল উঠবে। তার জন্য শুরু থেকেই কঠোর পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)