Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ট্রেন কোথায়, ভুল তথ্য সাইটে

কলকাতার বাসিন্দা শিবাজী বসু নিউ জলপাইগুড়ি থেকে পদাতিক এক্সপ্রেসে ফিরছিলেন। তিনি জানান, ডানকুনি ছাড়ার পরেই তিনি রেলের ওয়েবসাইটে দেখতে পান, তাঁর ট্রেন শিয়ালদহে পৌঁছে গিয়েছে!

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৭ ১৩:৩৮
Share: Save:

শতকরা ৯০ ভাগ ট্রেনই সময়ে চলে। বছরের পর বছর এমনই দাবি করে এসেছেন রেলের শীর্ষ কর্তারা। কিন্তু সেই দাবি কত়টা ঠিক, সে প্রশ্ন তুলে দিল খোদ রেলেরই তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ। রেলের ওয়েবসাইটে ‘ন্যাশনাল ট্রেন এনকোয়ারি সিস্টেম’ নামে যে ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে, তার তথ্য দেখে যাত্রীরা বলছেন, ট্রেন চলাচলের বাস্তব সময়ের সঙ্গে ওই ওয়েবসাইটের তথ্যের মিল নেই।

কলকাতার বাসিন্দা শিবাজী বসু নিউ জলপাইগুড়ি থেকে পদাতিক এক্সপ্রেসে ফিরছিলেন। তিনি জানান, ডানকুনি ছাড়ার পরেই তিনি রেলের ওয়েবসাইটে দেখতে পান, তাঁর ট্রেন শিয়ালদহে পৌঁছে গিয়েছে! রেলের ওয়েবসাইটের সময় দেখে বোলপুর স্টেশনে ট্রেন ধরতে গিয়েছিলেন ঈশানী মুখোপাধ্যায়। পাঁচ মিনিট লেট দেখালেও ট্রেন এসেছিল ৪৫ মিনিট দেরিতে। কলকাতার চিকিৎসক সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় নিয়মিত ইস্পাত এবং স্টিল এক্সপ্রেসে ঝাড়গ্রাম ও ঘাটশিলা যাওয়া-আসা করেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওই সাইটের তথ্য কখনওই মেলে না। অযথা সময় নষ্ট হয়।’’

রেলের সাইট দেখভালকারী সংস্থা ‘সেন্টার ফর রেল ইনফরমেশন সিস্টেম’ (ক্রিস)-এর কর্তারা জানান, বেশির ভাগ ট্রেনে জিপিএস চালু না হওয়ায় বিভিন্ন জোনের কন্ট্রোল রুমের তথ্যের উপরেই নির্ভর করে ওই সাইট। ফলে সেই তথ্যে ভুল থাকলে সেটাই সাইটে দেখা যাচ্ছে। রেলকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, এত দিন জোনগুলি দক্ষতা দেখানোর জন্য ট্রেনের ৩০-৪০ মিনিট দেরিকেও চেপে যেত। এ বার যাত্রীরা ওই তথ্য হাতে পেয়ে বাস্তবে মেলাতে যাওয়ায় ‘ঝুলি থেকে বেড়াল’ বেরিয়ে পড়েছে।

রেলকর্তাদের অনেকেরই দাবি, সাধারণত একটি ট্রেন ১৫ মিনিট বা তার কম দেরিতে চললে রেলের সাইটে তা ঠিক সময়ে চলছে বলেই দেখানো হয়। কিন্তু এক শ্রেণির কর্মী ঝামেলা এড়াতে এখন ৩০-৪০ মিনিট দেরিকেও ঠিক সময় বলে দেখাচ্ছেন। কারণ, একটি ট্রেন দেরি করলে তার জবাবদিহি করতে হয় জোনগুলিকে।

তা হলে কি এ ভাবেই চলবে রেল?

রেল সূত্রের খবর, ইসরো-র সহযোগিতায় ইতিমধ্যেই রেল একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। পাইলট প্রকল্প হিসেবে ১০০টি ট্রেনে জিপিএস যন্ত্র বসানো হচ্ছে। যাতে ওই সব ট্রেনের তথ্য সরাসরি পেয়ে যায় এনটিইএস। রেলকর্তারা জানিয়েছেন, এক-একটি ট্রেনের ইঞ্জিনে জিপিএস প্রযুক্তি বসাতে খরচ হবে ৭০ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকা। এই প্রযুক্তি ট্রেনের সময় জানতেই নয়, কাজে আসবে দুর্ঘটনা রুখতেও। সর্ব ক্ষণ নজরদারি চালানোর জন্য ইঞ্জিনের পাশাপাশি জিপিএস যন্ত্র বসানো হচ্ছে বিভিন্ন লেভেল ক্রসিং ও বড় রেল সেতুতেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Wrong information Rail Indian Railways
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE