Advertisement
E-Paper

পলতায় রেললাইনে কিশোরীর দেহ, খুনের অভিযোগ

বাড়ির কাছেই রেললাইনের ধারে এক কিশোরীর মৃতদেহ মিলল। রবিবার পলতায় এই ঘটনার পরে পরিবারের দাবি, খুন হয়েছে মেয়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৬ ০১:০৯
পায়েল দেবনাথ।

পায়েল দেবনাথ।

বাড়ির কাছেই রেললাইনের ধারে এক কিশোরীর মৃতদেহ মিলল। রবিবার পলতায় এই ঘটনার পরে পরিবারের দাবি, খুন হয়েছে মেয়ে। তাঁদের অভিযোগের আঙুল ওই কিশোরীর পরিচিত, স্থানীয় এক যুবকের দিকে। এ দিকে, সোমবার রাতে ওই কিশোরীর মৃতদেহ বাড়িতে আনার পরে ওই যুবকের কাকা কিশোরীর বাবাকে রাস্তাতেই বঁটি দিয়ে কোপান বলে অভিযোগ। এর পরে উত্তেজিত জনতা ওই যুবকের বাড়ি-সহ আরও দু’টি বাড়িতে ভাঙচুর চালায় ও আগুন লাগানোর চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। পুলিশ গেলে ওই যুবকের কাকাকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকে জনতা। প্রথমে স্থানীয় পুলিশ, পরে ব্যারাকপুর কমিশনারেট থেকে বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পুলিশ পিকেটও বসানো হয়।

পুলিশ জানায়, মৃতা পায়েল দেবনাথের বাড়ি (১৭) পলতার ১৯ নম্বর রেলগেটের কাছে উত্তরায়ণে। ব্যারাকপুরের ভোলানন্দ ন্যাশনাল হাইস্কুলে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত সে। রবিবার সন্ধ্যায় মেয়েকে রেখে আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিলেন তার বাবা-মা। তখনই এই ঘটনা।

পুলিশ জানায়, রাত আটটা নাগাদ রেললাইনের ধারে ওই কিশোরীর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন এলাকার মানুষ। তার আগে স্থানীয় ওই যুবকের সঙ্গে মেয়েটির ধস্তাধস্তি হয় বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। রেল পুলিশ জানায়, পায়েলের শরীরের নানা জায়গায় কাটাছড়ার চিহ্ন ছিল। চোট ছিল মাথাতেও। মাথার আঘাত ট্রেনের ধাক্কাতেই বলে রেল পুলিশের অনুমান।

সোমবার থানায় স্থানীয় এক যুবকের বিরুদ্ধে তাঁর মেয়েকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন পায়েলের বাবা-মা পরিতোষ ও কল্পনা দেবনাথ। কল্পনাদেবীর দাবি, ‘‘নবপল্লির বাসিন্দা সঞ্জীব বসু নামে একটি ছেলে মেয়েকে মানসিক চাপে রাখত। ওর সঙ্গে সম্পর্ক না রাখলে খুন করার হুমকি দিত। ওই এই কাজ করেছে। তার পরে ফোন করে জানিয়েছে, মেয়ে আর নেই।’’ ঘটনার পর থেকেই সঞ্জীবের বাড়িতে তালা ও পরিবারের লোকেরা পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পরিবারের দাবি, বছর কয়েক ধরেই সঞ্জীবের সঙ্গে আলাপ পায়েলের। তাঁদের অভিযোগ, মেয়ের স্কুলের সামনে নিয়মিত দাঁড়িয়ে থাকা, স্কুল থেকে ফেরার পথে উত্ত্যক্ত করার ঘটনা একাধিক বার ঘটার পর সঞ্জীবের বাড়ির লোককে বিষয়টি জানান তাঁরা। কিন্তু তাতে উল্টে হুমকি শুনতে হয়েছে বলে জানান ওই ছাত্রীর বাবা পরিতোষবাবু। দু’দিন আগেও পুলিশের নাম ভাঁড়িয়ে ফোন করে তাঁদের ভয় দেখানো হয় বলে অভিযোগ। ফোনে সঞ্জীবের উত্ত্যক্ত করার বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েও লাভ হয়নি বলে কল্পনাদেবীর দাবি।

পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার বিকেলে ছট পুজো উপলক্ষে গঙ্গায় যান পায়েল ও কল্পনাদেবী। কল্পনাদেবীর অভিযোগ, সেখানে সঞ্জীব তাঁদের পিছু নেয়। বাড়ি ফেরার পরে মেয়েকে রেখে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন পরিতোষবাবু ও কল্পনাদেবী। মিনিট পঁয়তাল্লিশ পরে সেখানেই সঞ্জীবের ফোনে মেয়ের মৃত্যুর খবর পান তাঁরা।

ওই যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ স্থানীয়দেরও। অভিযোগ, বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ওই কিশোরীর উপরে অত্যাচার চালায় সঞ্জীব। পায়েলের ঘরের সামনে তার ভাঙা নখের টুকরো, রক্ত পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে।

সোমবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পায়েলের বাড়ি ঘিরে রেখেছেন পাড়ার মহিলারা। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভও উগরে দেন স্থানীয়েরা। প্রতিবেশী সোমা সিংহ, জয়া রায়রা বলেন, ‘‘সাড়ে সাতটা নাগাদ মেয়েটিকে বাড়িতে ঢুকতে দেখি। আমাদের দেখে ওড়না দিয়ে মুখ আড়াল করল। ওর গাল থেকে রক্ত ঝরছিল। কী হয়েছে জানতে চাওয়ায় কিছু বলল না। কিছুক্ষণ পরেই খবর পাই, রেল লাইনের ধারে ও পড়ে আছে।’’ প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, রেললাইনের ধারেও সঞ্জীবের সঙ্গে এক প্রস্ত ধস্তাধস্তি হয় পায়েলের।

শিয়ালদহ ডিভিশনের রেল পুলিশ সুপার দেবাশিস বেজ বলেন, ‘‘খুনের অভিযোগ হয়েছে। বিষয়টিই গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কী ঘটেছে, ময়না-তদন্তের পরে বোঝা যাবে।’’

Girl deadbody Railtrack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy