রূপম মজুমদার
সিটের দখল ঘিরে নিত্যযাত্রীদের দলবদ্ধ আক্রমণে গুরুতর জখম হলেন আর এক যাত্রী। অভিযোগ, ট্রেনের অসংরক্ষিত কামরায় বসার জায়গা নিয়ে বচসার জেরে ট্রেনের মেঝেতে ফেলে টানা আধঘণ্টা চড়-কিল-ঘুষি চলে ওই যাত্রীর উপরে। জ্ঞান হারালে বাথরুমে ঢুকিয়ে ওই ব্যাক্তির চোখ-মুখে জল দিয়ে আবার সকলের সামনেই চলে অমানবিক প্রহার। এই ঘটনা অন্য যাত্রীদের চোখের সামনে ঘটলেও প্রতিবাদ তো দূরের কথা, তাঁকে বাঁচাতেও এগিয়ে আসেননি কেউ। শুক্রবার এমনই বর্বরতার সাক্ষী রইল পূর্ব রেলের অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসে।
লোকাল ট্রেনের কামরার দেওয়ালে বা সিটে লিখে রেখে নিত্যযাত্রীদের জায়গায় দখল রাখার অভ্যাস নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তা নিয়ে বহু বার গোলমালও হয়েছে। কিন্তু অগ্নিবীণার মতো এক্সপ্রেস ট্রেনে এমন ঘটনা কী ভাবে ঘটে, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়ে।
কী ঘটেছিল এ দিন? রেলপুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন সকাল ৬টা ২৪-এ দুর্গাপুর থেকে অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসে ওঠেন রূপম মজুমদার নামে এক যুবক। রেলপুলিশ জানায়, রূপমবাবু ছিলেন ট্রেনের ইঞ্জিনের পরে একটি অসংরক্ষিত কামরায়। উঠেই তিনি বসার জায়গাও পেয়ে গিয়েছিলেন। বর্ধমান পর্যন্ত কোনও অসুবিধে হয়নি।
আরও পড়ুন: রাজ্যে হাব এ বার বাতাসা, নকুলদানারও
রেলপুলিশ জানায়, ওই মারধর চলার সময়ে তাতে বাধা দেওয়া তো দূরে থাক, ওই যুবককে কোনও সাহায্য পর্যন্ত করতে এগিয়ে আসেননি কামরার বাকি যাত্রীরা। শেষে তিনি নিজেই রেলের ১৮২ নম্বরে ফোন করেন। হাওড়া স্টেশনে ট্রেন ঢোকার পরে তাঁকে আরপিএফ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে অভিযোগ দায়ের করার পরে আহত অবস্থায় তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ দিন হাওড়া জেলা হাসপাতালের মেল সার্জিক্যাল বিভাগের ১৭ নম্বর বেডে শুয়ে ওই যুবক বলেন, ‘‘এক সময়ে মনে হচ্ছিল ওরা আমাকে মেরেই ফেলবে।’’ রূপমবাবু জানান, বর্ধমান থেকে ট্রেনে উঠেই ওই যাত্রীরা দাবি করেছিলেন, যে সিটে তিনি বসেছেন সেটি অনেক আগে থেকেই বর্ধমানের নিত্যযাত্রীদের জন্য সংরক্ষিত। ওখানে তাঁরাই বসবেন। তিনি তাঁদের কথা মানতে না চাওয়ায় শুরু হয় প্রহার।
রূপমবাবু বলেন, ‘‘হাওড়া স্টেশনে নামার পরে আরপিএফ আমাকে উদ্ধার করতে এলে আমি আক্রমণকারীদের দু’জনকে শনাক্ত করি। তাঁদের ধরে জিআরপির হাতে তুলেও দেয় আরপিএফ।’’ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রূপমবাবুর মাথায় আঘাত গুরুতর। কোমরের হাড়েও চোট লেগেছে। আঘাত রয়েছে পাঁজরেও।
হাওড়া রেলপুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘একটা মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি। দু’জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁরা দু’জনে রেলেরই কর্মী।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy