মৃত দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সঙ্গীতা দাস। —নিজস্ব চিত্র।
ভোরবেলা সাঁতার শিখতে গিয়েছিলেন। কিন্তু, সুইমিং পুল থেকে আর বাড়ি ফেরা হল না কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সঙ্গীতা দাসের। মঙ্গলবার সকালে উত্তর কলকাতার হেদুয়ায় এক সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এই ঘটনা ঘটেছে। ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে মৃত ছাত্রীর পরিবার।
পুলিশ ও মৃত ছাত্রীর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, এ দিন সকাল পাঁচটা নাগাদ অন্যান্য দিনের মতো পিসি অণিমা দাসের সঙ্গে সাঁতার শিখতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল সঙ্গীতা। একটু লম্বা হওয়ার ইচ্ছে নিয়েই দিন কয়েক আগে হেদুয়ার ওই সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। ভাইঝিকে সাঁতারের ক্লাসে পৌঁছে দিয়ে অণিমা দেবী প্রাতঃভ্রমণ সারেন প্রতিদিনই। সাড়ে ছ’টা নাগাদ সঙ্গীতার ক্লাস শেষ হওয়ার পর তাঁকে নিয়ে একসঙ্গে দু’জন বাড়িতে ফেরেন। গত দিন পনেরো ধরে এমনটাই রুটিন। কিন্তু, অন্য দিনের মতো এ দিন সাড়ে ছ’টা বেজে গেলেও ভাইঝি না বেরোনোয় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তিনি। পুল চত্বরে ঢুকে সবাইকে জিজ্ঞেস করতে থাকেন। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্মীরা খোঁজ শুরু করেন। তখনই দেখা যায়, দু’নম্বর পুলের জলে ভাসছে সঙ্গীতার দেহ। উদ্ধারের পর সঙ্গে সঙ্গে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিত্সকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
অস্বাভাবিক এই মৃত্যুর পর ওই সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছে। প্রতি দিন খাতায় সই করিয়ে জলে নামানে-ওঠানো হয়। তবে কেন এ দিন এক জন জল থেকে উঠল কি না সেটা কর্তৃপক্ষে নজরে এল না? প্রথম যাঁরা সাঁতার শিখতে যান, তাঁদের জন্য এক নম্বর পুল বরাদ্দ হলেও কী করে সঙ্গীতা দু’নম্বর পুলে চলে গেলেন? এ ছাড়াও আরও মারাত্মক অভিযোগ তুলেছেন অণিমাদেবী। তাঁর কথায়, ‘‘এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সমস্ত ট্রেনারের বয়স ৫৫ বছরের উপরে। অথচ এমনটা তো হওয়ার কথা নয়। তাঁরা উপর থেকেই সাঁতার শেখান। জলে নামেন না।’’ সমস্ত অভিযোগ জানিয়ে পুলিশের কাচে সঙ্গীতার পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বাবা মুদিখানার দোকানে কাজ করেন। দুই মেয়ের মধ্যে সঙ্গীতা ছোট। মা মণিকা দাস বলেন, ‘‘আমার মেয়ের এ ভাবে মৃত্যু কোনও বাবেই মেনে নিতে পারছি না। ওদের আমি শাস্তি চাই।’’ তিনি জানিয়েছেন, সঙ্গীতার কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল না।
আরও খবর
হেদুয়ায় তরুণীর মৃত্যু দেখাল সাঁতার শিক্ষায় বিশেষ সাবধানতা জরুরি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy