প্রতীকী ছবি।
লকডাউনের শহরে গাড়ি নেই। তার উপরে রমজান মাসের রোজা চলছে। কিন্তু দু’দিনের একটি শিশুর জন্য ‘ও’ নেগেটিভ রক্তের প্রয়োজন শুনে রিপন স্ট্রিট থেকে হেঁটেই এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছে গেলেন যুবক। তার পরে রোজা ভেঙে শিশুর জন্য রক্ত দিলেন।
নদিয়ার মৌমিতা বিশ্বাস এন আর এস হাসপাতালে দু’দিন আগে কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। কিন্তু মঙ্গলবার শিশুটির রক্তের প্রয়োজন হয়। হাসপাতালের তরফে মৌমিতা ও তাঁর স্বামী মৃত্যুঞ্জয়কে জানানো হয় শিশুর রক্তের গ্রুপ ‘ও’ নেগেটিভ। করোনার আবহে সদ্যোজাত সন্তানের জন্য রক্ত কী করে জোগাড় হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান ওই দম্পতি।
শেষ পর্যন্ত এক পরিচিতের মাধ্যমে রক্তদাতাদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত সপ্তর্ষি বৈশ্য নামে এক যুবকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন মৃত্যুঞ্জয়। দু’দিনের শিশুর রক্তের প্রয়োজনের খবর সপ্তর্ষি হোয়াটসঅ্যাপে রক্তদাতাদের গ্রুপে শেয়ার করে দেন। খোঁজ মেলে রিপন স্ট্রিটের বাসিন্দা মিসবাহ আহমেদের।
মৃত্যুঞ্জয় এ দিন জানান, রক্তদাতারা কেউ এন আর এস নাম শুনে আর আসতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘মিসবাহ বিপদের সময়ে ভগবানের মতো উপস্থিত হন। খালি পেটে রক্ত দেওয়া যাবে না জেনে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে মিসবাহ জল আর কলা খেয়ে রোজা ভেঙে রক্ত দেন।’’
মিসবাহের কথায়, ‘‘আমার রক্তে যদি একটি শিশু সুস্থ হয়ে ওঠে, এর চেয়ে বড় পুণ্য আর কী হতে পারে। উপবাস তো আগামী কালও রাখতে পারব। আমার বন্ধুদের আমি সব সময়ে বলে রাখি, কারও ‘ও’ নেগেটিভ রক্ত প্রয়োজন হলে আমায় ডাকতে।’’
পরে সপ্তর্ষি বলেন, ‘‘শিশুটি বড় হয়ে এক দিন এই ঘটনা জানতে পারবে। তখন ও বুঝবে, মানবতাই সব চেয়ে বড় ধর্ম।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy