Advertisement
E-Paper

১০ হাজারের লোভে দেহ লোপাট করতে আসে যুবক

বালির যুবক আশুতোষ মালিকে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকা দ্বিতীয় যুবক লালু সাউকে গ্রেফতারের পরে এমনই তথ্য উঠে এসেছে তদন্তকারীদের হাতে। কয়েক দিন আগেই তাকে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৯ ০৩:৪১
 রক্ত মাখা মাদুর নিয়ে লালু। শনিবার, বালিতে। নিজস্ব চিত্র

রক্ত মাখা মাদুর নিয়ে লালু। শনিবার, বালিতে। নিজস্ব চিত্র

রক্তাক্ত দেহটি যাতে বাইরে বেরিয়ে না আসে, তার জন্য বস্তার মুখ সেলাই করে দেওয়া হয়েছিল। এমনকি, আগুন যাতে ভাল ভাবে জ্বলে, তার জন্য মৃতদেহের গায়ে জড়ানো হয়েছিল চাদর। তার পরেই গোটা দেহটি পুঁটলির মতো করে অ্যালুমিনিয়ামের তার দিয়ে বাঁধা হয়েছিল। আর দেহটিকে শনাক্তের অযোগ্য করে দিতে মুখের দিকেই বেশি করে কেরোসিন ঢালা হয়েছিল।

বালির যুবক আশুতোষ মালিকে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকা দ্বিতীয় যুবক লালু সাউকে গ্রেফতারের পরে এমনই তথ্য উঠে এসেছে তদন্তকারীদের হাতে। কয়েক দিন আগেই তাকে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তে পুলিশ জেনেছিল, আশুতোষের দেহটি বস্তায় ভরে এনে বেলুড়ের নিস্কো হাউজিংয়ের আবর্জনার স্তূপে ফেলে জ্বালিয়ে দিয়েছিল লালুই। শনিবার তার দেখানো জায়গা থেকেই পুলিশ খুনে ব্যবহৃত ছুরি-সহ আরও কিছু জিনিস উদ্ধার করেছে।

এ দিন সকালে নিশ্চিন্দা থানার পুলিশ লালুকে নিয়ে নিস্কো হাউজিং এলাকায় যায়। ঘটনাস্থল থেকে কয়েক মিটার দূরেই রয়েছে একটি মন্দির। তার পাশে রয়েছে বড় পাঁচিল। সেখানে গিয়ে এ দিন লালু দেখিয়ে দেয় পাঁচিলের ও পারে থাকা জঙ্গলে কোথায় ফেলেছে খুনের অস্ত্র। সেখানে খোঁজার পরেই মেলে রক্তের দাগ লেগে থাকা ৬ ইঞ্চি মাপের আনাজ কাটার সেই ছুরি।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পুলিশকে লালু জানায়, যে মাদুর ও কাঁথায় আশুতোষ শুয়েছিলেন, সেগুলি ও তাঁর পরনে থাকা গেঞ্জি এবং নীল জিনস অন্য জায়গায় ফেলা হয়েছে। ধৃতের দেখানো পথেই তদন্তকারীরা পৌঁছন বেলুড়ের ১২ নম্বর পোলের কাছে আবর্জনার স্তূপের সামনে। সেখানে লালু নিজেই উদ্ধার করে নিয়ে আসে একটি রক্তমাখা মাদুর। ওই মাদুর দিয়েই মোড়া ছিল প্লাস্টিকের ব্যাগ। তাতে ছিল রক্ত মাখা কাঁথা, জামা ও নীল জিনসটি। জেরায় লালু জানায়, ঘটনার প্রায় এক মাস আগে থেকে সে ফোনে কুমকুমের সঙ্গে কথা বলে গোটা ছকটি কষেছিল। সুমনই ওই তরুণীর সঙ্গে লালুর পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। দিল্লি থেকে বেলুড়ে পৌঁছেই একটি দোকান থেকে ওই ছুরিটি কিনেছিল লালু। সে জানিয়েছে, দিল্লি থেকে কুমকুমের জন্য শাড়ি, কাচের চুড়ি ও নেলপলিশ কিনে এনেছিল সুমন।

লালু দাবি করেছে, রাত ১১টা নাগাদ তারা কুমকুমের বাড়িতে গিয়ে দেখে, বিষ মেশানো খাবার খেয়ে তখনও বেঁচে রয়েছেন আশুতোষ। তখন সুমনই ছুরি দিয়ে আশুতোষের বুকে পরপর আঘাত করে। যদিও সুমন বারবারই সেই অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছে, ‘কেউ ছুরি মারেনি।’ কুমকুম আবার পুলিশকে বলেছে, সে-ই ছুরি মেরেছিল আশুতোষের বুকে। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘কুমকুম ও সুমন একে অপরকে বাঁচাতে চেষ্টা করছে। কিন্তু ছুরি যে মারা হয়েছিল, সেটা নিশ্চিত।’’

পুলিশের কাছে লালুর দাবি, ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে দেহ লোপাট করতে এলেও তাকে দেওয়া হয়েছে মাত্র সাড়ে তিন হাজার টাকা। আর সাইকেলটি ফেরত দিয়ে আরও সাড়ে চারশো টাকা নিয়ে সে দিল্লির ট্রেনের টিকিট কেটেছিল।

Crime Murder Money
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy