বাসে বসে বেশ একটু ঝিমুনি ভাব এসেছিল পার্থ বিশ্বাসের। হঠাৎ মনে হল উল্টে যাচ্ছেন। চোখ মেলে দেখলেন বাসটা নৌকার মতো হেলতে-দুলতে চলেছে। কিন্তু চালকের ভুলে নয়। রাস্তাটিই বেশ উঁচুনিচু।
শুধু পার্থবাবু নন, গাড়িতে স্ট্র্যান্ড রোড দিয়ে যাওয়ার সময় এই অভিজ্ঞতা অনেকেরই হয়। কারণ, এই রাস্তার এক দিক অনেকটা উঁচু। এই রাস্তায় গাড়ি চালাতে নাস্তানাবুদ হন চালকরা। অন্যমনস্ক হলেই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানান তাঁরা। কলকাতার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাওড়া স্টেশন যেতে অনেকেই স্ট্র্যান্ড রোড ব্যবহার করেন। এটি কলকাতার অন্যতম ব্যস্ত রাস্তা। কিন্তু চক্ররেলের বিবাদী বাগ স্টেশন থেকে বড়বাজারের দিকে এগলেই চোখে পড়বে রাস্তার এক পাশ অন্য পাশের তুলনায় অনেকটা উঁচু। গাড়ি যেতে গিয়ে হেলে যাচ্ছে। এই রাস্তা দিয়ে সারা দিনই প্রচুর যান চলাচল করে। তাই ঝুঁকিও বেশি।
বাসযাত্রীদের অভিযোগ, রাস্তার মাঝ বরাবর যেতে গিয়ে গাড়ি এত কাত হয় যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে রাস্তাটি সারানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। শুধু গাড়ি নয়, পথচারীদেরও সমস্যা হয়। অন্যমনস্ক হয়ে হোঁচট খেয়ে রাস্তায় পড়েও গিয়েছেন অনেকে।
মোটরসাইকেল আরোহীদের ক্ষেত্রে সমস্যা আরও ভয়াবহ। হাওড়ার বাসিন্দা প্রসেনজিৎ কর্মকার এই রাস্তা দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে মাঝেমধ্যে যাতায়াত করেন। তিনি বলেন, “এই রাস্তায় গাড়ির চাপ খুব বেশি। ফলে পাস কাটিয়ে কাটিয়ে যেতে হয়। কিন্তু বেখেয়ালে কোনও ভাবে এই উঁচু-নিচুর মাঝে চাকা পড়লেই বিপদ। তখন ভারসাম্য রক্ষা করা খুবই কঠিন। সব সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।”
রাতে এই রাস্তায় সমস্যা আরও বাড়ে। যাত্রীদের অভিযোগ, এই রাস্তার এক পাশে আলো রয়েছে। তা ছাড়া রাস্তার দু’ধারে বড় গাছ রয়েছে। ফলে আলো কম, উঁচু-নিচু ভালো করে বোঝা যায় না। তাই রাতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেশি। তা ছাড়া রাস্তার কয়েকটি জায়গায় প্রচণ্ড গরমে পিচ গলে ইট বেরিয়ে পড়েছে। এতে বিপদের আশঙ্কা আরও বেড়েছে বলে অভিযোগ।
পুরসভা সূত্রের খবর, এই ইটগুলির উপর দিয়ে গাড়ি চালানো বা পায়ে হাঁটা বেশ বিপজ্জনক। কারণ, ইটগুলি প্রচণ্ড পিছল। কয়েক বছর আগে পোর্ট ট্রাস্ট এই রাস্তার কিছুটা সংস্কার করেছিল বলে পুরসভা সূত্রের খবর। পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) সুশান্ত ঘোষ বলেন, “রাস্তাটির কেন এই অবস্থা তা বলতে পারব না। তবে পুরসভা রাস্তা সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”