মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাঁটতে যাওয়ার পার্কেই হার ছিনতাই হয়েছিল এক মহিলার। তার প্রেক্ষিতে সমালোচনার মুখে পড়ে লালবাজার। প্রশ্ন ওঠে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়েও। লালবাজার সূত্রের দাবি, সেই ঘটনার পরপরই ইলিয়ট পার্কে ৫০টি ক্লোজ্ড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেন লালবাজারের শীর্ষকর্তারা। ওই পার্কের দেখভালকারী সংস্থা, কলকাতা পুরসভার সঙ্গেও এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হয়েছে।
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিকেলে ইলিয়ট পার্কে হাঁটতে যান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে থাকেন পুলিশ-প্রশাসনের অনেক শীর্ষকর্তাও। পুলিশ সূত্রের খবর, ২০০৪ সালে বিড়লা তারামণ্ডলের কাছে ইলিয়ট পার্ক তৈরি করা হয়। উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কিন্তু সে সময়ে পার্কের পরিবেশ অনেক খোলামেলা ছিল। পুলিশের একাংশের ব্যাখ্যা, তখন কোনও ভিআইপি ওই পার্কে নিয়মিত যেতেন না। তাই নিরাপত্তার কড়াকড়িও করা হয়নি।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়মিত ইলিয়ট পার্কে যাওয়ার পরেই এ ব্যাপারে সতর্ক হয় পুলিশ। লালবাজার সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্যের গোয়েন্দারা বার্তা পাঠান কলকাতা পুলিশের সদর দফতরে। তার ভিত্তিতেই ইলিয়ট পার্কের চারপাশে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। লাগানো হয়েছে বাতিস্তম্ভ।
পুলিশের একাংশের অবশ্য দাবি, বাঁশের বেড়া কিংবা আলো লাগানোই যথেষ্ট নয় বলে মনে করা হচ্ছে। “তাই মাসখানেক আগে ওই পার্কে সিসি-ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল।”বলছেন যুগ্ম কমিশনার (সদর) রাজীব মিশ্র। তবে লালবাজারের একাংশের ব্যাখ্যা, সপ্তাহখানেক আগে ইলিয়ট পার্কে প্রাতর্ভ্রমণ করতে আসা এক মহিলার সোনার হার ছিনতাই হয়। তার পরেই বিষয়টি নিয়ে আরও নড়েচড়ে বসেন লালবাজারের কর্তারা। ঠিক হয়, ইলিয়ট পার্কের কাছেই একটি অস্থায়ী ঘর তৈরি করে কন্ট্রোল রুম করা হবে। সেখানে পুরসভার কর্মীদের পাশাপাশি মোতায়েন থাকবে পুলিশও।
লালবাজারের ব্যাখ্যা, মুখ্যমন্ত্রী বেশির ভাগ সময় বিকেলেই পার্কে আসেন। কিন্তু নাশকতার ছক কষলে জঙ্গিরা সকালে এসেও বিস্ফোরক লুকিয়ে রেখে যেতে পারে। তাই ওই পার্কে সব সময়ে নজরদারি প্রয়োজন। “দরকারে যাতে তড়িঘড়ি পুলিশ পৌঁছতে পারে, তাই কন্ট্রোল রুমে পুলিশকর্মীদেরও রাখা হবে।”মন্তব্য এক পুলিশকর্তার। ইলিয়ট পার্কে সিসি-ক্যামেরা বসানোর কথা স্বীকার করে নিয়েছেন পুরসভা কর্তৃপক্ষও। মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, “ক্যামেরা বসানোর জন্য দরপত্রও ডাকা হয়েছে।”
পুরসভা সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর ‘পছন্দের’ পার্কে সিসি-ক্যামেরা বসানোর পরে শহরের আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পার্কে সিসি-ক্যামেরা বসানোর চিন্তাভাবনা রয়েছে। পুলিশের একাংশের বক্তব্য, শহরের বিভিন্ন পার্কে সন্ধ্যার পরেই নানা অসামাজিক কাজকর্ম হয়। কিন্তু সেখানে সব সময়ে পুলিশ মোতায়েন করা সম্ভব নয়। তাই সিসি-ক্যামেরা বসিয়ে নজরদারি ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মেয়র পারিষদ দেবাশিসবাবুও বলেন, “ইলিয়ট পার্কে সিসি-ক্যামেরা বসানোর বিষয়টিকে আমরা পাইলট প্রোজেক্ট হিসেবেই দেখছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy