Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

.....

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:০০
Share: Save:

পিয়ানোর খোঁজে

সে সময় ‘দাদার কীর্তি’-র শ্যুটিং চলছে। এক দিন তরুণ মজুমদার এলেন রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডের এইচ পাল অ্যান্ড কোম্পানিতে। দরকার একটি পিয়ানো। এইচ পাল থেকেই ভাড়া নিলেন সেটি। ছবিতে সেই পিয়ানোটি বাজাতে দেখা গিয়েছিল মহুয়া রায়চৌধুরীকে। সে সময় পিয়ানো পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন তরুণ শ্রীকান্ত পাল। তিনিই বর্তমান মালিক। এইচ পাল মানে হেমন্ত পাল। ১৯০৫-এ ওয়েলিংটন স্কোয়্যারের কাছে দেড়-দু’শো বর্গফুটের ঘরে জন্ম নিয়েছিল দোকানটি। বাংলা চলচ্চিত্রে যত পিয়ানো দেখা যায়, সবই নাকি এই দোকানের সরবরাহ করা। বিভিন্ন ছবিতে ওঁদের পিয়ানো বাজাতে দেখা গেছে প্রমথেশ বড়ুয়া থেকে উত্তমকুমার হয়ে প্রসেনজিতকে। এইচ পাল-এর পিয়ানো আর হারমোনিয়াম ব্যবহার করেছেন শচীনদেব, রাহুলদেব, আশা ভোঁসলে, হেমন্ত, মান্না, আরও কত গুণিজন। বর্তমানে প্রায় জনা পঁচিশ কর্মচারী নিয়ে চলছে চার পুরুষের ব্যবসা। দোকানটির বাড়িওয়ালাও চার পুরুষের। এমনকী যে-সব কুলি পিয়ানো নিয়ে যান, তাঁরাও চার পুরুষ ধরে জড়িত। তাঁরা আর অন্য কোথাও কাজ নেন না।

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।

এইচ পাল মূলত পিয়ানো-হারমোনিয়াম সংস্কারের কাজ করে। ভারতে পিয়ানো তৈরি হয় না। যা হয় সব বিদেশে। সে সব পিয়ানোর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হয় এই দোকানে। পাশাপাশি হারমোনিয়াম তৈরি হয়। দোকানের নিজস্ব পিয়ানো রয়েছে শ’দেড়েক। সেগুলো ভাড়া দেওয়া হয়। মাসিক চুক্তিতে ভাড়া নিলে তিন হাজার টাকা আর অনুষ্ঠানের জন্য দিন প্রতি পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা। চাইলে শ্রীকান্তবাবু নিজের সম্ভার থেকে বা বাইরে থেকে পিয়ানো আনিয়ে দেন। ‘দ্বিতীয় হাত’ পিয়ানোর দাম পড়ে ১৫-১৬ লক্ষ টাকা। আর নতুন? পাঁচ কোটি টাকা। তেমন খদ্দেরও আছেন বইকী। দোকানে এসেছে আমেরিকার নিজস্ব বাদনযন্ত্র— চাইম। ভাল পিয়ানোর লক্ষণ কী? শ্রীকান্ত বাবু জানালেন, ‘‘একটা রিড বাজালে তার ধ্বনি থেকে যাবে রিড না ছাড়া পর্যন্ত, আর ধ্বনিটার মধ্যে একটা ডেপ্থ থাকবে। মেহগনি-ওক কাঠের পিয়ানোই খুব ভাল হয়। শব্দ একদমই আলাদা।” শেষে ওঁর মুখে আত্মবিশ্বাসের হাসি— ‘পিয়ানো সম্পর্কে, সেই সঙ্গে হারমোনিয়ামও বলতে পারেন, পশ্চিমবঙ্গে শেষ কথা আমরা।’

দুই ভারত

‘যেন হতদরিদ্র আফ্রিকার নিম্ন-সাহারা অঞ্চলের মধ্যে একটি অতি-উন্নত ক্যালিফর্নিয়া’: প্রবল বৈষম্য-পীড়িত আমাদের দেশটির দিকে তাকিয়ে ভেবেছেন অমর্ত্য সেন আর জঁ দ্রেজ। আগেও দুই অর্থনীতিবিদ একসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেছেন, লিখেছেন। তাঁদের এ বারের বইটির লক্ষ্য, দুই ভারতের মধ্যেকার এই অতল ফাঁক (কিংবা ফাঁকি)-এর বাস্তবটিকে নানা দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করা। মূল ইংরেজি বইটির নাম (অ্যান আনসার্টেন গ্লোরি: ইন্ডিয়া অ্যান্ড ইটস কনট্র্যাডিকশনস) সঙ্গত ভাবেই অনূদিত বই-এ আর একটু প্রত্যক্ষ হয়ে ওঠে— ভারত: উন্নয়ন ও বঞ্চনা (আনন্দ)। এই বই একটা ধাক্কা দিয়ে মনে করিয়ে দেয় যে, গণতান্ত্রিক প্রচারমাধ্যমের দৌলতে ভারতে সামাজিক সচেতনতা থাকলেও তার প্রায় পুরোটাই সুবিধাভোগী সমাজকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণ্যমান। বাকি যে সমাজ, সর্বার্থে বঞ্চিত সমাজ— তার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টির বিষয়ে আমরা সম্পূর্ণ উদাসীন, অনবহিত। অথচ এই বিষয়ে যথেষ্ট সচেতনতা শুধু মানবিক লক্ষ্য ও সামাজিক সাম্যের জন্যই জরুরি ছিল না, আয়বৃদ্ধি, উন্নয়ন, ‘নতুন ভারত’-এর জন্যও প্রয়োজনীয় ছিল, কেননা ওই বিষয়গুলিতে আর একটু বেশি মনোযোগ দিলে তা ‘স-ক্ষমতা’ ও ‘স্ব-ক্ষমতা’, দুটোকেই এক ধাপে বাড়িয়ে দিতে পারত। অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় ও কুমার রাণার অনুবাদে সুপাঠ্য বইটি শেষ পর্যন্ত পাঠককে ঠেলে দেয় একটা জোরালো নৈতিক অবস্থানের দিকে। অমর্ত্য সেনের উপস্থিতিতে আইসিসিআর প্রেক্ষাগৃহে ২২ ফেব্রুয়ারি, রবিবার, বিকেল ৩টেয় এই বই-এর আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করবেন শঙ্খ ঘোষ।

পুনর্দর্শনায় চ

চলতি হাওয়ার পন্থী হওয়ার বাইরে পা রেখে শুরু হয় তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের পঠন-পাঠন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সূচনালগ্ন থেকে। বাংলা তথা ভারতীয় সাহিত্যের সঙ্গে ইউরোপ, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকার সাহিত্যের পাঠ বিভাগটিকে করে তুলেছিল আন্তর্জাতিক, এ দেশে প্রথম বহুভাষী সাহিত্য বিভাগ। ‘একই সঙ্গে বাংলা ইংরেজিতে বিশ্বসাহিত্যের চর্চা, পড়া আর লেখা— বেনজির। উচ্চশিক্ষায় এই দ্বিভাষিকতার চর্চা আজও মডেল হতে পারে বাঙালির শিক্ষাস্তরে।’ বলছিলেন বিভাগের একদা ছাত্র ও শিক্ষক শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়। পড়ুয়াদের মধ্যে নিত্যনতুন ভাবনা বুনে দিতেন বুদ্ধদেব বসু, নরেশ গুহ, ফাদার আঁতোয়ান, ডেভিড ম্যাককাচ্চন, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, অমিয় দেব, অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, সুবীর রায়চৌধুরী, নবনীতা দেবসেন, মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বপন মজুমদারের মতো শিক্ষক। ওদের পুনর্মিলন ‘পুনর্দর্শনায় চ’, ২১ ফেব্রুয়ারি বিকেল-সন্ধে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রিগুণা সেন মেমোরিয়াল হলে। ভাষাদিবসই তো উপযুক্ত দিন এমন বিভাগের পুনর্মিলন উত্‌সবের!

মনগ্রেস

১৯৬৪-তে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন মঞ্জুশ্রী চট্টোপাধ্যায় আর গ্রেস ওয়াসিম পিনা। দু’জনের নামের প্রথম দুই ধ্বনি মিলিয়েই নামকরণ: মনগ্রেস মন্টেসরি স্কুল। দেখতে দেখতে পঞ্চাশ বছর হয়ে গেল। আর সেই উপলক্ষেই ছিল অনুষ্ঠান। বাচ্চাদের নাচ-গান-নাটক। বাচ্চারা পশুপাখি সেজে নার্সারি রাইমের সঙ্গে নাচবে আর তাদের দেদার মজাদার লাগবে, এ তো জানাই, কিন্তু অফ-বিট চমক ছিল প্রচুর। একটি নাটকে রেড রাইডিং হুড দেখা করতে গেল, তার ঠাকুমার বদলে, ‘জাংগল বুক’-এর মোগলি-র সঙ্গে। পথে অনেক খুদে জানোয়ারের সঙ্গে দেখা, সবাই মিলে বলা হল প্রাণীদের প্রতি অ-নিষ্ঠুর হওয়ার কথা। ছিল এক ‘মাইম ড্রামা’, কলকাতা নিয়ে। ছোটদের অনুষ্ঠানের আগে শোনা গেল নানা নামী মানুষের অভিজ্ঞতা, সন্তানকে মনগ্রেসে দেওয়ার পর মজা আর হইহই ভর্তি স্মৃতি। এ বছর ব্রিটিশ কাউন্সিলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে আন্তর্জাতিক মানের বহু স্কুলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মনগ্রেস।

বহুমুখী

‘গোড়ায় যদি বিয়ে না থেকে থাকে, পরে সমাজে বিয়ের গোড়াপত্তনই বা হল কেন?’— এমন প্রশ্নের উত্তর মিলবে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের বিয়ের তত্ত্ব-এ। কবির কলমে এমন গদ্য সুশোভন অধিকারীর অলংকরণে গ্রন্থিত করেছে সূত্রধর। সঙ্গে, খালেদ চৌধুরীর আত্মস্মৃতি মঞ্চের বাইরে (সম্পা: ফণীভূষণ মণ্ডল), যার প্রথম বাক্যটি: ‘নদীর পাড়ে ছিল আমাদের বাড়ি।... নদী ডিঙিয়ে স্কুলে যেতাম।’ অন্যটি অভিনেতা শ্যামল ঘোষের বহুমুখী সৃজন নিয়ে শ্যামলে শ্যামল (শিবনাথ চট্টোপাধ্যায়)। ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধে ৬টায় ছাতুবাবু-লাটুবাবুর বাড়িতে প্রকাশ করবেন গৌতম ভদ্র ও দেবতোষ ঘোষ। শক্তিনাথ ঝা প্রকাশ করবেন ক্ষিতিমোহন সেনের বাংলার বাউল (পাতাবাহার)। দ্বিতীয় পর্বে সুশান্তকুমার চট্টোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে শোনা যাবে ‘গ্রামোফোন রেকর্ডে বাঙালির গান’।

এ বার রঘুপতি

‘রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘বিসর্জন’ বিভিন্ন সময় মঞ্চস্থ করতে গিয়ে জয়সিংহ আর রঘুপতি, দু’টি চরিত্রেই অভিনয় করতেন। এটা আমার কাছে প্রেরণা। গত তিরিশ বছরে বার কয়েক জয়সিংহের চরিত্রে করেছি, কিন্তু রঘুপতি করার সাধ বরাবর।’ বলছিলেন শুভাশিস মুখোপাধ্যায়। চলচ্চিত্রে তাঁর অভিনয়, বিশেষত ‘হারবার্ট’, এখনও মনে রাখেন সকলে, কিন্তু থিয়েটারই তাঁর প্রথম প্রেম। দেবাশিস দত্তের নির্দেশনায় ইনস্টিটিউট অব ফ্যাকচুয়াল থিয়েটার আর্টস-এর নতুন নাটক ‘রাজরক্ত’-এ রঘুপতি চরিত্রে এ বার শুভাশিস (সঙ্গের ছবি)। ক্ষমতা-ই হিংসার উত্‌স, এই ভাবনা থেকে ‘বিসর্জন’, ‘রাজর্ষি’, ‘স্যাক্রিফাইস’-কে মিলিয়ে দ্বিভাষিক প্রযোজনা ‘রাজরক্ত’, ২০ ফেব্রুয়ারি অ্যাকাডেমিতে সন্ধে সাড়ে ৬টায়। অন্য দিকে কথাকৃতি’রও আয়োজন ‘রবিঠাকুরের নাটক’। ওদের নাট্যোত্‌সবে ‘আনন্দী’, ‘শাস্তি’, ‘মালঞ্চ’, ‘অচলায়তন’ মঞ্চস্থ হবে ১৮-২১ ফেব্রুয়ারি, রোজ সন্ধে সাড়ে ৬টায়, মিনার্ভা থিয়েটারে। উদ্বোধন করবেন অনুপ মতিলাল।

ভাষাদিবস

‘বাঙ্গালাদেশের মাঝখানে দাঁড়াইয়া একবার কাঁদিয়া সকলকে ডাকিতে ইচ্ছা করে— বলিতে ইচ্ছা করে ভাই সকল, আপনার ভাষায় একবার সকলে মিলিয়া গান কর।’ এমন আহ্বান ছিল রবীন্দ্রনাথের। সেই আহ্বানকে আরও প্রাসঙ্গিক করতেই পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির ভাষা উত্‌সবের আয়োজন। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বিদ্যাসাগর স্মারক বক্তৃতায় ‘আত্মপরিচয়ের ভাষা’ নিয়ে বলবেন সুকান্ত চৌধুরী। পর দিন অমিয় দেব স্মরণ করবেন সুভাষ মুখোপাধ্যায়কে। শেষ দিন ‘আমার জীবনানন্দ’ শিরোনামে বলবেন গৌতম বসু। থাকবে গান, নাটক, কবিতা। ৪-১৯ ফেব্রুয়ারি গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় বাংলা সঙ্গীতমেলা উপলক্ষে প্রদর্শনীতে শ্রদ্ধা জানানো হবে শচীনদেব, রাহুলদেব ও কিশোরকুমারকে। আয়োজনে রাজ্য তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর।

ইন্দ্রাশিস

অকালে ঝরে গিয়েছেন নাট্যকার ইন্দ্রাশিস লাহিড়ি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এই প্রাক্তনীর লেখা মৌলিক নাটকগুলো এক সময় সাড়া ফেলেছিল। ‘সেই সুমৌলি’ ‘বাসভূমি’, ‘পিঙ্কি বুলি’, ‘ইচ্ছেগাড়ি’ তার অন্যতম। ইন্দ্রাশিসের নাটককে ফিরিয়ে আনতে এগিয়ে এসেছেন বন্ধুরা। অভিনেত্রী সুদীপা বসুর উদ্যোগে সম্প্রতি ‘চেনামুখ’-এর আয়োজনে ছিল দুই দিনের নাট্যোত্‌সব ‘তুই আছিস ইন্দ্রাশিস’। সুদীপার কথায় ‘এত নাট্যকারের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছিল ও। অথচ ওর নাটক আজও প্রাসঙ্গিক।’ ছিলেন বিজয়লক্ষ্মী বর্মন, বিপ্লব দাশগুপ্ত, অর্ধেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। ৫ ফেব্রুয়ারি ইন্দ্রাশিসের মৃত্যুবার্ষিকী। তাই ফেব্রুয়ারির গোড়ায় মধুসূদন মঞ্চ ও আকাদেমিতে মঞ্চস্থ হল ইন্দ্রাশিসের লেখা ‘বেংলিশ কন্যার রূপকথা’, ‘অঙ্গিরা বাড়ি নেই’, এবং ‘বহিরাগত’। সুদীপা জানালেন, পরে নাটকগুলো মঞ্চস্থ করবে হাওড়ার ‘জোনাকি’। অন্য দিকে কলকাতায় অনেক দিন বাদে নেদারল্যান্ডের ছবি দেখা যাবে নন্দনে, ১৯-২১ ফেব্রুয়ারি, ‘ডাচ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এ। উদ্যোগে ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ-এর সঙ্গে নেদারল্যান্ড দূতাবাস।

স্বতন্ত্র স্বর

এ শহরে ফের ইবসেন চর্চা! হেনরিক ইবসেনের নাটকে যে দুঃসময়, বা রুদ্ধস্বর ব্যক্তির যে মুক্তির কথা বারবার উঠে আসে, তেমনই এক সময়ের মধ্যে দিয়েই তো চলেছি আমরা। ম্যাক্সমুলার ভবনের গ্যেটে ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধে ৭টায় কলামন্দিরে মঞ্চস্থ হবে ‘অ্যান এনিমি অব দ্য পিপল’ (সঙ্গের ছবি)। জার্মান নাটক, ইংরেজি সাবটাইটল সহ। টমাস ওস্টারমায়ার-এর নির্দেশনায় বার্লিনের ঐতিহ্যশালী নাট্যগোষ্ঠী শাউবিউনে-র প্রযোজনা। মুনাফামুখী নির্মম শিল্পনীতির ফলে জলদূষণ নিয়ে নিঃসঙ্গ প্রতিবাদের এই নাটক আজও সমকালীন।

২৩ ফেব্রুয়ারি জ্ঞানমঞ্চে সন্ধে সাড়ে ৬টায় ইবসেন-এর ‘আ ডলস হাউস’ অবলম্বনে নৃত্যনাটক ‘নোরা— আ রেবেল’ পরিবেশিত হচ্ছে এই প্রথম, মহানন্দা কাঞ্জিলালের নির্দেশনায়। কত্থকশিল্পী মহানন্দা অর্থনীতিরও অধ্যাপক। এই অভিনব ভাবনার নৃত্যালেখ্যর ভিতর দিয়ে মহানন্দা উত্থিত করতে চলেছেন নারীর স্বতন্ত্র স্বর। সেই স্বতন্ত্র স্বরের গভীর পরিচয় ধরা থাকবে সুচি (সোসাইটি ফর আন্ডারস্ট্যান্ডিং কালচার অ্যান্ড হিস্টরি ইন ইন্ডিয়া) ও বিদ্যাসাগর কলেজের ইতিহাস বিভাগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অধ্যাপিকা সুকুমারী ভট্টাচার্য স্মারক আলোচনা সভায়, ১৬ ও ২১-২২ ফেব্রুয়ারি। আজ সাড়ে দশটায় বিদ্যাসাগর কলেজ সেমিনার হল-এ উদ্বোধনী ভাষণ: জেরাল্ডিন ফোর্বস। থাকছেন শেফালী মৈত্র, রোশিঙ্কা চৌধুরী, রত্নাবলী চট্টোপাধ্যায় সহ নবীন-প্রবীণ গবেষকরা।

মঞ্চ-কন্যা

কল্কিযুগ-এ তিনি এসপি দিলীপ দত্তর সহধর্মিণী। দেবারতি গুপ্তের পরিচালনায় এখন শ্যুটিং চলছে ওই ছবির। পর্দার ওই থ্রিলার-জীবনে দুজনের যা সম্পর্ক, ব্যক্তিজীবনেও সম্পর্কটা তাই। দিলীপ দত্তর ভূমিকায় অভিনয় করছেন ব্রাত্য বসু, স্ত্রীর ভূমিকায় পৌলোমী বসু। কিন্তু এ নিছক সমাপতন। বাংলা মঞ্চে অনেক দিন ধরেই এক উল্লেখযোগ্য অভিনেত্রী পৌলোমী। বাংলা মঞ্চও ব্রাত্য বসুর নাটকের হাত ধরে ক্রমশ তারকা-উজ্জ্বল হয়েছে। ইতিহাসের সেই বদলে পৌলোমীও আছেন। শুরুটা অবশ্য হয়েছিল পারি নগরীতে, ‘বাবলি’ নাটকে। তার পরে প্রায় এক দশকে মঞ্চ-অভিনেত্রী হিসেবে রীতিমত জায়গা করে নিয়েছেন পৌলোমী। অর্পিতা ঘোষের নির্দেশনায় পঞ্চম বৈদিক-এর প্রযোজনা ব্রাত্যর লেখা নাটক ‘দুটো দিন’-এ প্রধান দুই নারীচরিত্রের একটিতে তাঁর অভিনয় ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছে। এর আগে নানা ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন পৌলোমী। কালিন্দী ব্রাত্যজন-এর ‘সিনেমার মতো’, ‘কে’ এবং তারও আগে সাড়া জাগানো ‘রুদ্ধসঙ্গীত’, বা ‘ব্যোমকেশ’-এর সত্যবতী, ‘চিরকুমার সভা’র পুরবালার চরিত্রে পৌলোমীর অভিনয় মনে রাখার মতো। কিন্তু শুধুই কি মঞ্চ আর বড় পর্দা? ‘‘না, মঞ্চটাই আমার প্রধান অভিনয়ের জায়গা হলেও মাধ্যম সম্পর্কে আমার কোনও ছুতমার্গ নেই। ছোটপর্দা, বড়পর্দা এমনকী পথনাটকেও অভিনয় করতে চাই। তা ছাড়া বিভিন্ন মাধ্যমে অভিনয়ের প্রকৃতিটাও তো বিভিন্ন, সেই চ্যালেঞ্জটাও তো অভিনেতাকে অনেক কিছু শেখায়’’ উত্তর পৌলোমী-র।

শিল্পী

প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো সেতারের বিষ্ণুপুর ঘরানাকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছুটে গেছেন সেতার শেখাতে। টোকিয়ো শহরে সেতারের স্কুল গড়েছেন। তাঁর ছাত্র সংখ্যা প্রায় ১০০০। তিনি সেতারবাদক মণিলাল নাগ। জন্ম ১৯৩৯-এ, বাঁকুড়া জেলায়। বাড়িতে সেতারের আবহ ছিলই। ঠাকুরদা গোবিন্দচন্দ্র নাগ ছিলেন বিখ্যাত সেতারবাদক। বাবা গোকুল নাগের কাছে পাঁচ বছর বয়সে সেতারে হাতেখড়ি। বছর দশেক তাঁর কাছেই শেখা। পেয়েছেন উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, পণ্ডিত ওঙ্কারনাথ ঠাকুর, পণ্ডিত বিনায়ক রাও পট্টবর্ধন, উস্তাদ হাফিজ আলি খাঁ, উস্তাদ আমির খাঁ প্রমুখের সঙ্গ। ১৯৫৩-য় অল ইন্ডিয়া মিউজিক কনফারেন্সে প্রথম অনুষ্ঠান। এক সময় আকাশবাণী ও দূরদর্শনের নিয়মিত শিল্পী ছিলেন।

দেশের নানা স্থানে তো বটেই, ইউরোপ, আমেরিকা, ইতালি, ফ্রান্স, কানাডা, জার্মানির সঙ্গীত সম্মেলনে বাজিয়েছেন। ২০০১-এ সঙ্গীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার, ২০০৫-এ সংস্কৃতি মন্ত্রকের সিনিয়র ফেলোশিপ এবং এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে স্বর্ণপদক পেয়েছেন। সম্প্রতি সর্বভারতীয় সঙ্গীত ও সংস্কৃতি পরিষদ এবং গোকুল নাগ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন শিল্পীর সেতার জীবনের ষাট বছর পালনে উদ্যোগী হয়। আইসিসিআর প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠিত হল ‘মণিলাল নাগ সিক্সটি ইয়ারস উইথ সেতার’। ছিলেন পণ্ডিত অমিয় রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, পণ্ডিত শঙ্কর ঘোষ, গুরু থাঙ্কমণি কুট্টি, পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার প্রমুখ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kolkatar karcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE