Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

....

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৫ ০১:০০
Share: Save:

নব সাজে অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস

বারাণসীর অধ্যাপক ফণীভূষণ অধিকারীর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সুসম্পর্ক ছিল। তাঁর কন্যা রাণুকে স্নেহ করতেন কবি। লেডি রাণুর সংগ্রহে ছিল কবির নানা উপহার। কলম, কলমদানি, চাদর, চিঠি, তাঁর আঁকা ছবি, প্রথম সংস্করণের এক আলমারি বই। এই সবের সঙ্গে অন্য শিল্পীদের ছবি, এনগ্রেভিং, মুঘল অণুচিত্র, রাগমালাচিত্র, লেসলি মার্টিনের দেওয়া কার্পেট এবং বীরেন মুখোপাধ্যায়, সজনীকান্ত দাস ও রাণুদেবীর নিজস্ব সংগ্রহ নিয়ে গড়ে উঠেছিল অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস সংগ্রহশালা। ১৯৩৩-এ একটি প্রদর্শনীর মধ্যে দিয়ে পথচলা শুরু হলেও নন্দলাল বসুর একটি চিত্রপ্রদর্শনী দিয়ে বার্নার্ড ম্যাথিউ-এর নকশায় তৈরি বর্তমান বাড়িটির উদ্বোধন হয় ১৯৬০-এ। নানা টানাপড়েনে মাঝে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এই সংগ্রহশালা। অবহেলায় পড়ে ছিল শিল্পদ্রব্যগুলি। আশার কথা, সম্প্রতি এই অচলাবস্থা কাটিয়ে প্রাথমিক ভাবে রবীন্দ্রনাথের ৩৫টি ছবিসহ মোট ৭৮টি প্রদর্শ নিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে তিনটি ঘর। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক থেকে পাওয়া অর্থে শুরু হয়েছে সংস্কারপর্ব। সাত বছর বন্ধ থাকার পর গত ১১ জানুয়ারি খুলল প্রদর্শশালা।

এ দিকে, ফ্রান্স প্রবাসী শিল্পী শক্তি বর্মনের একান্ত ইচ্ছে এই শহরে একটি প্রদর্শনী করবেন। কিন্তু জায়গা কোথায়? যোগাযোগ হল অ্যাকাডেমির ট্রাস্টিদের সঙ্গে। গ্যালারি দেখে বললেন, ‘জায়গা অসাধারণ, কিন্তু একটু পরিচ্ছন্ন করতে হবে।’ তিনি প্রথম পর্বেই দিয়ে দিলেন কুড়ি লক্ষ টাকা। তাতেই সেজে উঠল গ্যালারি। সেখানেই এখন চলছে শঙ্খ ঘোষ উদ্বোধিত (সঙ্গে মাঝের ছবি) ওঁর প্রদর্শনী। এ শহরে ওঁর ছবি এবং ভাস্কর্য নিলামের অর্থও দেবেন অ্যাকাডেমির জন্য। এখানকার কেউ কি এগিয়ে আসবেন এ কাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে, প্রসূন মুখোপাধ্যায়ের এমত আবেদনে সে দিন সভা ছিল নিস্তব্ধ। শক্তিবাবুর একান্ত ইচ্ছে, ‘এখানে নবীন প্রতিভা ফুটে উঠুক, আরও অনেক মানুষ সমবেত হোক।’ এই উপলক্ষে শক্তি বর্মন একটি আড্ডায় বসেছিলেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তের সঙ্গে (বাঁ দিকের ছবি)। শিল্পীর জীবন, শিল্পের নানা দিক নিয়ে আলোচনা হল। বিদেশের গ্যালারির সঙ্গে কথা বলে শক্তিবাবু আরও বড় মাপের প্রদর্শনী এখানে আনার আশ্বাস দিলেন। দুই আলোচকেরই ইচ্ছে অ্যাকাডেমিকে ঘিরে একটি সংস্কৃতিকেন্দ্র গড়ে উঠুক, যেখানে থিয়েটার, গান, ছবি-ভাস্কর্য সব মিলেমিশে যাবে। ১৯৬৮-তে যেমনটি চেয়েছিলেন সে কালের বিশিষ্টজনেরা, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি।

ছবি: গোপী দে সরকার।

শেষ নবাব

অযোধ্যার দশম ও শেষ নবাব ওয়াজিদ আলি শাহ-র শেষ জীবন কেটেছিল মেটিয়াবুরুজে। সাহিত্য-সঙ্গীত-শিল্পকলায় পারদর্শী নবাব রাজ্য হারিয়ে কলকাতায় নজরবন্দি হওয়ার পর এখানেই গড়ে তুলেছিলেন নিজের ভুবন। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে নানা সময়ে সংগৃহীত হয়েছে তাঁর বেশ কিছু নিদর্শন। যেমন কত্থক নাচ নিয়ে ওঁর লেখা একটি চিত্রিত বই এবং একটি চিত্রিত ক্যালেন্ডার। এ মাসের দ্রষ্টব্যে ক্যালেন্ডারটি (সঙ্গের ছবিতে) প্রদর্শিত হবে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সংগ্রহ থেকে।

এ দিকে আজ বিকেলে এখানেই মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ বস্তু সংগ্রহালয়ের মহানির্দেশক সব্যসাচী মুখোপাধ্যায় বলবেন ‘রি-ইমাজিনিং মিউজিয়ামস: অ্যান ইভ্যালুয়েশন অব ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামস’ শীর্ষকে। থাকবে স্বচ্ছ ভারত মিশনের প্রেক্ষিতে অ্যাকটিভিটি ক্লাবের সদস্যদের একটি পোস্টার কর্মশিবির।

রবীন্দ্রভারতীর উদ্যোগ

বিশ্ব নাট্য দিবস, ২৭ মার্চ জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির ঠাকুরদালানে অভিনীত হবে রবীন্দ্রনাথেরই নাটক ‘রবিবার’। অভিনয়ে রাজশাহি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের কলাকুশলীরা। ২৬ মার্চ থাকবেন শ্রুতি বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘বসন্ত রাস’ নিয়ে। এখানে যোগ দেবেন মণিপুরের শিল্পীরাও। নাটক সেই সঙ্গে নৃত্যনাট্য এবং সনাতনী সৃষ্টির নানা অনুষ্ঠানে উদ্‌যাপিত হবে দিনটি। থাকছে ধ্রুপদী ওড়িশি নৃত্য, সেতার এবং কণ্ঠসঙ্গীত। দু’দিনের এই ‘বসন্ত উত্‌সব’-এর উদ্যোক্তা রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ অন মডার্ন ডান্স। এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়েরই নাটক বিভাগের উদ্যোগে শেক্সপিয়ারের জন্মের সাড়ে চারশো বছর পূর্তি উপলক্ষে জোড়াসাঁকোয় ছিল চার দিনের আন্তর্জাতিক সেমিনার ‘শেক্সপিয়ার রিকনসিডার্ড’। বললেন লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের রবার্ট গর্ডন, পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের মোহন মহর্ষি, শেক্সপিয়ার বিশেষজ্ঞ অমিতাভ রায় আর অশোক মুখোপাধ্যায়। দিনে সেমিনারের পর রাতে নাটক। মঞ্চস্থ হল দিল্লির বোস স্টুডিয়োর প্রযোজনায় ‘ম্যাকবেথ কোয়েশ্চেন’, অসমের ও এফ টি এস-এর প্রযোজনায় ‘ফল অব আ কিং’, বাংলাদেশ পদাতিকের ‘ম্যাকবেথ’, আর শেষ দিন রবীন্দ্রভারতী রেপার্টরি করল মিড সামার নাইটস ড্রিম অবলম্বনে ‘ফাগুন রাতের গপ্পো’।

তত্ত্ববোধিনী

একটানা প্রায় নব্বই বছর (১৬ অগস্ট ১৮৪৩ থেকে মার্চ ১৯৩৩) প্রকাশিত হয়েছে ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’। সূচনায় সম্পাদকমণ্ডলীতে ছিলেন অক্ষয়কুমার দত্ত, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাজেন্দ্রলাল মিত্র ও রাজনারায়ণ বসু। ব্রাহ্ম সমাজের ধর্মীয় মুখপত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও, এতে বিজ্ঞান ও অন্যান্য তত্ত্ব আলোচনা, সমাজভাবনা, সমাজসংস্কার, শিক্ষার প্রসার, গদ্য-সাহিত্য ইত্যাদি স্থান পেয়েছে। আচার্য দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর কোনও দিনই সম্পাদকের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেননি। ঠাকুরবাড়ির ইতিহাসও নানা সূত্রে ধরে রেখেছে পত্রিকাটি। সম্প্রতি ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’-র সম্পূর্ণ ইতিহাস পর্যালোচনা করেছেন দিতি রায়, তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা কাল থেকে কালান্তরে (আশাদীপ)। সম্পাদকদের সম্পাদনার বিশেষত্বও বিশ্লেষণ করেছেন তিনি। পরিশিষ্টে ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’র সম্পূর্ণ সূচিপত্র ও পত্রিকায় প্রকাশিত ব্রহ্মসংগীতের তালিকা যুক্ত হয়েছে।

শ্রদ্ধার্ঘ্য

স্বাধীনতার অব্যবহিতে প্রধান শিক্ষক হিসেবে জগদ্বন্ধু ইনস্টিটিউশনের এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা করেন উপেন্দ্রনাথ দত্ত, তাঁর আমলেই এ-স্কুলের ছাত্রদের মনের দিগন্ত উন্মোচনের নানা উদ্যোগ কার্যকর হতে থাকে। স্কুলের অ্যালমনি অ্যাসোসিয়েশন শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে ‘উপেন্দ্রনাথ দত্ত স্মারক বক্তৃতা’র আয়োজন করেছে। ‘যথার্থ উন্নয়নের স্বার্থে এই দেশীয় ভাষায় স্কুল শিক্ষার ক্ষেত্রটিকে দৃষ্টির কেন্দ্রে নিয়ে এসে... শতবর্ষ অতিক্রান্ত একটি বাংলা স্কুলের... এক আদর্শ শিক্ষককে সম্মান জানাতে আমাদের এই প্রয়াস।’ জানিয়েছেন শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়, উপেন্দ্রনাথ দত্ত স্মারক সমিতির পক্ষে। অবনীন্দ্র সভাঘরে ২৯ মার্চ সন্ধে সাড়ে ৬টায়, বক্তা: সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই স্কুলের আর-এক শিক্ষক জ্যোতিভূষণ চাকীর হাতে ছাত্র হিসেবে তৈরি হয়েছেন এ কালের বহু বিশিষ্ট জন। শিক্ষকতার বাইরেও জ্যোতিভূষণ ছিলেন বহুভাষাবিদ পণ্ডিত, ভাষাভাবুক, অনুবাদক, ছড়াকার, সঙ্গীতজ্ঞ। গত ১৩ মার্চ জ্যোতিভূষণ চাকী স্মারক সমিতি’র উদ্যোগে জীবনানন্দ সভাঘরে জ্যোতিভূষণ চাকী স্মারক বক্তৃতা দিলেন তাঁরই প্রিয় ছাত্র চিন্ময় গুহ। বিষয়: ‘লা রোশফুকো-র জীবনভাবনা’।

ফিরে দেখা

পঁচিশ বছর আগে পথচলার শুরুতে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন যাঁরা, তাঁরা আজ প্রয়াত। বিকাশ ভট্টাচার্য, গণেশ পাইন (সঙ্গে তাঁরই একটি ছবি), পরিতোষ সেন, ধর্মনারায়ণ দাশগুপ্ত এবং শ্যামল দত্ত রায় এই পঞ্চরথীর উত্‌সাহেই শিল্পের আকাশে ডানা মেলেছিল আলিপুর পার্কের গ্যালারি সংস্কৃতি। পঁচিশের পূর্তিতে তাঁদেরই ফিরে দেখা। ২৬ মার্চ এখানেই এই পাঁচ শিল্পীর কাজ নিয়ে শুরু হচ্ছে প্রদর্শনী ‘আ ট্রিবিউট ইন মেমোরি অব দ্য বেঙ্গল লিজেন্ডস’। চলবে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত।

লোকবাদ্য

লোকগান, লোকশিল্পী ও শিল্পের সংরক্ষণে দায়বদ্ধ একটি সংস্থা ভ্রমরা। ২৯ মার্চ দুপুর দুটোয় এদেরই উদ্যোগে চিত্রকূট আর্ট গ্যালারিতে আয়োজিত হয়েছে আলোচনা ‘প্রচলিত লোকবাদ্য : বাস্তব ও ভবিষ্যত্‌’। লোকসঙ্গীতে ব্যবহৃত বাদ্যযন্ত্র এবং কিছু লোকশিল্প নিয়ে চলবে প্রদর্শনী, ৩১ মার্চ পর্যন্ত, ২-৭ টা। অন্য দিকে, ‘সুতানুটি হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি’ দীর্ঘ দিন কাজ করছে সমাজের অনুন্নত শ্রেণির ছেলেমেয়েদের জন্য। সে কাজে অর্থ সংগ্রহের জন্য আইসিসিআর-এর বেঙ্গল গ্যালারিতে আয়োজিত হয়েছে প্রদর্শনী ‘ল্যান্ডস অ্যান্ড লাইভস’। আলোকচিত্রী তন্ময় দাস, সোনালি সরকার ও সপ্তর্ষি করের সাম্প্রতিক কাজের প্রদর্শনীটি শেষ হচ্ছে আজ।

প্রকৃতি ২০১৪

পরিবেশ, মানবাধিকার এবং উন্নয়ন নিয়ে একগুচ্ছ তথ্যচিত্রের উত্‌সব ‘প্রকৃতি ২০১৪’, সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের অডিটোরিয়ামে। ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তথ্যচিত্রকারেরা আসছেন তাঁদের ছবি নিয়ে। ২৩-২৫ মার্চ, রোজ ১০-৫টা। ছবি দেখানোর সঙ্গে চলবে পরিচালক-দর্শক-সমালোচকের পারস্পরিক আলোচনা। সিলেবাসের বাইরে পড়ুয়াদের সামাজিক সমস্যা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করতেই এ উত্‌সব। আয়োজক: ই এম আর সি— আশির দশক থেকে টানা শিক্ষামূলক তথ্যচিত্রের বিপুল ভাণ্ডার গড়ে তুলেছে সেন্ট জেভিয়ার্স-এর এই মিডিয়া গবেষণা কেন্দ্র। প্রতি রোববার সকালে ডিডি ৭-এ প্রচারিত শিক্ষামূলক তথ্যচিত্রের অনুষ্ঠান ‘বর্ণালী’রও প্রযোজক এ-সংস্থা। অন্য দিকে নকশাল আন্দোলন নিয়ে নতুন শতকে আলোড়ন-তোলা ছবি ‘হাজারোঁ খোয়াইশেঁ অ্যায়সি’র পরিচালক সুধীর মিশ্রকে নিয়ে তৈরি জয়দীপ বর্মা পরিচালিত পূর্ণ দৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্র ‘বাভারা মান’ দেখানো হবে ২৬ মার্চ সন্ধে ৬টায় নন্দনে। নন্দনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ছবিটির নির্মাতা ফিল্মস ডিভিশন।

ডাকবাক্স

কেউ তাকায় না, বিবর্ণ দশায় দরজার শরীরে সেঁটে থাকি, কোনও দিন হয়তো খসে যাব... এমনটাই হতে পারে লেটারবক্সের আত্মকথা। যার কোটরে জায়গা নিত অনেক ভাল লাগা বা খারাপ লাগার বার্তা, ইন্টারনেটের দাপটে সে এখন মৃতপ্রায়। গত কয়েক বছর ধরে কলকাতার নানা বিষয়কে ক্যালেন্ডারের পাতায় তুলে আনছেন আলোকচিত্রী বিজয় চৌধুরী। এ বার তাঁর টেবল ক্যালেন্ডারের বিষয় বিস্মৃতপ্রায় লেটারবক্স (সঙ্গে ছবি)। বারোটি পাতায় সাদা-কালো আলোকচিত্রে লেটারবক্সের সে সব দিন।

সংস্কৃতের প্রসারে

সংস্কৃত ভাষার সংরক্ষণ ও প্রসারের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন বিনায়ক সমাদ্দার চৌধুরী। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গণিতবিদ এবং শিবপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির বেসিক ও অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সেস বিভাগের ডিন বিনায়কের প্রচেষ্টায় সম্প্রতি অরবিন্দ ভবনে আয়োজিত হল সংস্কৃত সম্মেলন এবং প্রদর্শনী। প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়। ভারতীয় ভাষাগুলিকে রক্ষা করার স্বার্থেই যে সংস্কৃতের প্রসার জরুরি, সম্মেলনে সেই বার্তাই দেন বক্তারা।

স্মৃতির পথে

সাত দশক পেরিয়ে গেছে স্বাধীনতার পর, অথচ আমাদের বেঁচে থাকায় এখনও কী বৈষম্য। দরিদ্র মানুষজন আর ক্রমাগত হেরে যাওয়া মধ্যবিত্তের সঙ্গে প্রাচুর্য আর ক্ষমতায় স্থিত লোকজনের কত তফাত। বৈপরীত্যের এই লড়াইয়ে অশোক বিশ্বনাথনের নতুন ছবির নায়ক হঠাত্‌ স্মৃতির রাস্তায় হেঁটে ফিরে যায় তার একদা প্রিয় বান্ধবী, কলকাতা, কবিতা, লিটল ম্যাগাজিন, কলেজ স্ট্রিট, কফি হাউস, প্রেসিডেন্সি কলেজ, এমন আরও অনেক কিছুর কাছে। ‘১ + ১ = ৩’, নিজের পরিচালিত এই ছবিটি নিয়ে অশোক জানালেন ‘এ তো শুধু নরনারীর সম্পর্কের অনির্বচনীয় নয়, রাষ্ট্র আর তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের মাঝখানে টাইম আর স্পেস ভেঙে এসে পড়ে উত্তাল সময়, রক্তক্ষরণের ইতিহাস, দিনবদলের বেপরোয়া স্বপ্ন, আর মনকেমন!’

কুড়ি বছর আগেই প্রথম ছবি ‘শূন্য থেকে শুরু’তে দর্শককে চমকে দিয়েছিলেন অশোক, বিষয়বস্তু বা আঙ্গিকের নতুন ধরনের নিরীক্ষায়, এ শহর আর নকশাল আন্দোলন ছিল সে ছবিতেও। এর পর একে একে ‘কিছু সংলাপ কিছু প্রলাপ’, ‘স্বপ্নের সন্ধানে’ ইত্যাদি ছবি। একাধিক জাতীয় পুরস্কারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। আশির দশকের গোড়ায় পরিচালনার কাজ শেখেন পুণে-র ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট থেকে। ছোট পর্দার ছবির পরিচালক, তথ্যচিত্রকার, চমত্‌কার অভিনেতা, নাট্যনির্দেশক, নিবন্ধকার, সুবক্তা, চলচ্চিত্রবিদ্যার শিক্ষক এই মানুষটি কালিদাস নাগের দৌহিত্র, পারমিতা ও এন বিশ্বনাথনের পুত্র। তাঁর ‘১ + ১ = ৩’ মুক্তি পাচ্ছে ২৭ মার্চ।

রবীন্দ্র-গবেষক

লেখাপড়ার পরিবেশেই বেড়ে ওঠা, বাবা নির্মলকান্তি মজুমদার ছিলেন অধ্যাপক। ১৯৬০-এ আনন্দবাজার পত্রিকায় ‘রবীন্দ্রনাথের নোবেল পুরস্কার’ বিষয়ে লিখে নজর কেড়েছিলেন উজ্জ্বলকুমার মজুমদার। বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির সম্বন্ধে আগ্রহ ছোট থেকেই। প্রেসিডেন্সি কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্যের কৃতি ছাত্র। আচার্য সুকুমার সেনের কাছে ‘পাশ্চাত্য প্রভাব ও বাংলা কাব্য’ বিষয়ে গবেষণা করেছেন। প্রমথনাথ বিশী, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়, অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়, চিন্তাহরণ চক্রবর্তীর কাছে শিক্ষালাভ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষকতাও করেছেন। সাহিত্যের নানা বিষয় নিয়ে গত পাঁচ দশক ধরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তিনি নিয়মিত লেখক। রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে বহু নিবন্ধ ও আটটি গ্রন্থ লিখেছেন। কবির ১২৫ বছরে সংকলনগ্রন্থ রাতের তারা দিনের রবি-র (আনন্দ) সম্পাদনা তাঁরই। রবিবাসর, টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও কলকাতা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সঙ্গে বর্তমানে যুক্ত। বিবেকানন্দের সার্ধশতবর্ষে তাঁর ব্যতিক্রমী জীবন, সাহিত্য ও শিল্প নিয়ে লিখেছেন বিবেকানন্দ জীবন ও শিল্প (পারুল)। তাঁর সাহিত্যের বিভিন্ন নিবন্ধ একত্র করে সদ্য বইমেলায় প্রকাশ পেয়েছে নির্বাচিত প্রবন্ধ সংগ্রহ (এবং মুশায়েরা)। ১ এপ্রিল ৮০তম জন্মদিনের সন্ধ্যায় বাংলা আকাদেমি সভাঘরে শঙ্খ ঘোষ, কাশীকান্ত মৈত্র, পবিত্র সরকার প্রমুখের উপস্থিতিতে প্রকাশ পাবে হীরেন চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত সম্মাননা গ্রন্থ উজ্জ্বল উদ্ধার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kolkatar karcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE