Advertisement
E-Paper

কলকাতার কড়চা

.....

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:০০

বাজার-ঐতিহ্যের শেষ চিহ্ন

গঙ্গার পশ্চিম তীরে বেতড় আর পুব তীরে সুতানুটি। সতেরো শতকের শেষে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ব্যবসার জন্য ঠিকঠাক ঘাঁটি খুঁজতে গিয়ে জোব চার্নক এমন জায়গা সাধে বেছে নেননি। জল আর স্থল-- দুই পথেই যেখানে রমরমা বাণিজ্য রয়েছে, সেটাই তো আদর্শ জায়গা। ১৭৫৭-য় কোম্পানির হাতে এল কলকাতা সুতানুটি গোবিন্দপুর, তিনটেই জমাটি বাজার। পরে ফোর্ট উইলিয়াম তৈরির জন্য গোবিন্দপুর বাজার সরাতে হয়।

শহরের বাড়বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাজারের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। আঠেরো শতকের মধ্যেই কলকাতায় কত বাজার গড়ে উঠেছিল তার হদিশ রয়েছে মার্ক উড আর আপজনের মানচিত্রে। রাজা রামলোচনের বাজার, পুরনো সিমলা বাজার, নবকৃষ্ণের বাজার, শ্যামবাজার, বড়বাজার, মেছুয়াবাজার, তালতলা বাজার, কলিঙ্গা বাজার, চাঁদনিচক বাজার, ফেনউইক বাজার-- আজ তার অধিকাংশই টিকে আছে শুধু স্থাননামে। বাজার নিয়ে দলাদলি, লাঠালাঠির অন্ত ছিল না, তার নানা বৃত্তান্ত ছড়িয়ে আছে পুরনো পত্রপত্রিকার পাতায়। সম্প্রতি আঠারো ও উনিশ শতকে কলকাতার বাজার (অলকানন্দা পাবলিশার্স) নামে একটি ছোট্ট কিন্তু তথ্যসমৃদ্ধ বই লিখেছেন জ্যোতির্ময় সেন। মানচিত্র, পুরসভা ও হাইকোর্টের নথি, বেভার্লি-র সেন্সাস ইত্যাদি সযত্নে কাজে লাগিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে অনেক বড় কাজ হতে পারে, এটি তার মুখবন্ধ হয়ে রইল।
বাজারের স্থাপত্য নিয়ে সে কালে বিশেষ মাথা ঘামানো হত না। ১৮৭৪-এ তৈরি হগ মার্কেট, এবং ১৯১৭-য় তৈরি কলেজ স্ট্রিট মার্কেট ব্যতিক্রম, দুটিই ছিল পেশাদার স্থপতিদের পরিকল্পিত। দ্বিতীয়টির ইন্দো-সারাসেনিক শৈলীর সুবিস্তৃত বাড়ির কেন্দ্রীয় টাওয়ার (সঙ্গে বাঁ দিকের ছবি) বাদে বাকি অংশ এখন অতীত, সেখানে মাথা তুলেছে বহুতল ‘বর্ণপরিচয়’। শ্যামবাজারের তেমন স্থাপত্য-কৌলীন্য না থাকলেও পুরনো বাড়ির চমত্‌কার টাওয়ারটি এত কাল বিজ্ঞাপনে মুখ ঢেকে ছিল (ডান দিকের ছবি)। এখন দুটিরই পুরোদমে সংস্কার চলছে। তবু তো কিছু বেঁচে রইল। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।

রাজনীতি ও রবীন্দ্রনাথ

কবি, সংগীতস্রষ্টা, চিত্রশিল্পী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গত সাত দশক ধরে বহু চর্চিত, কিন্তু কর্মী রবীন্দ্রনাথ সে তুলনায় আলোচিত হন না। সে ভাবে আলোচিত হয় না তাঁর রাজনীতি-ভাবনাও। অথচ রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পরে পরেই রাজনীতি-ভাবুক রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে বিশিষ্ট কিছু বই প্রকাশিত হয়েছিল, যেমন শচীন সেনের দ্য পলিটিক্যাল থট অব টেগোর, বা বিজলি সরকারের রাজনীতির রবীন্দ্রনাথ। সেই ধারাতেই এ বার বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগ থেকে প্রকাশিত হল অশোক সেনের রাজনীতির পাঠক্রমে রবীন্দ্রনাথ। তবে এ বইয়ে শুধু রাজনীতি-ভাবনা নয়, সমাজকর্মী ও রাজনীতি-দার্শনিক রবীন্দ্রনাথের পরিচয়ও রয়েছে।

বইপাড়ার ঐতিহ্য

কলেজস্ট্রিট বইপাড়ায় বাঙালির ঐতিহ্যকে আজও বহন করে চলেছে দাশগুপ্ত অ্যান্ড কোং। ১৯৮৬-তে প্রতিষ্ঠানের শতবর্ষ উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছিল শতপত্র, গুণীজনের রচনায় সমৃদ্ধ হয়ে। এ বারেও তেমনই সব রচনায় ঋদ্ধ ১২৮ বছরের স্মারক সংকলন প্রকাশ পেল শতপত্র ২ (সম্পা: সত্যব্রত ঘোষাল)। এই সংকলনের রচনাদিতে ‘‘বইপাড়ার ইতিহাস যেমন ধরা পড়েছে। তেমনি ‘দাশগুপ্ত’ পাবলিকেশানের ইতিহাসও রচিত হয়েছে।’’ প্রকাশনার পক্ষ থেকে জানিয়েছেন অরবিন্দ দাশগুপ্ত। এ ছাড়াও এই প্রতিষ্ঠান থেকে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক একটি বার্ষিকপত্রও প্রকাশ পেতে চলেছে ইতিবৃত্ত (সম্পা: ফণিভূষণ মণ্ডল)। থাকছে শম্ভু মিত্র, কমলকুমার মজুমদার, সবুজ পত্র পত্রিকা ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে ক্রোড়পত্র। দুটিরই প্রকাশ মহালয়ায়।

বই বাজার

আকাশে মেঘ করলে বাজারের মন খারাপ হয়। বাংলা বইয়ের বাজারেরও। বেশ কিছু বছর হল বইবাজার চলে এসেছে পুজোর ঠিক মুখে মুখে। ‘এতে লাভও হয়েছে বেশ কিছু। প্রথমত পুজোর মুখে পকেট একটু কী কিনি কী কিনি করে, ফলে বিক্রিটা বেশি হয়, দ্বিতীয়ত গরমটাও এড়ানো যায়,’ বলছিলেন পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। গিল্ডের সঙ্গে বাংলা আকাদেমির যৌথ আয়োজনে শারদ বইপার্বণ শুরু হচ্ছে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন ১২ সেপ্টেম্বর বিকেল পাঁচটায়। চলবে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, ২-৮টা।

বিতর্ক

চল্লিশের দশকে প্রেসিডেন্সি কলেজের আই এ ক্লাসের ছাত্র হিসেবে শুরু করে দীর্ঘ দিন কলকাতার ছাত্রমহলে সুধাংশু দাশগুপ্ত ছিলেন সমস্ত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অনিবার্য বিজয়ী। অর্থনীতির ছাত্রটি কলেজকে অনেক শিরোপা এনে দিয়েছেন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এল এল এম পরীক্ষায় প্রথম হয়ে ল’কলেজে অধ্যাপনা করেন, আইনের জার্নালের প্রধান সম্পাদক ছিলেন। কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্টের সচিব হয়ে নগর পরিকল্পনা বিশেষজ্ঞ হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। সুলেখক, সুপণ্ডিত সুধাংশুর স্মরণে তাঁর স্ত্রী নন্দিতা দাশগুপ্তের অনুদানে প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী সংগঠন বার্ষিক বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। প্রথমটি ১২ সেপ্টেম্বর ডিরোজিও হল-এ, বিকেল চারটেয়।

উজ্জ্বল

নারীর বেদ পাঠের অধিকার নিয়ে পুরীর শংকরাচার্যের প্রশ্নের সফল মোকাবিলা করেছিলেন তিনি (১৯৯৩)। জন্ম ১৯৩৫, প্রয়াত হয়েছেন ছ’বছর আগে। তাঁর উদাত্ত, সুরেলা কণ্ঠে পরিবেশিত শ্রীমা মীরার সাধনধ্যান ‘অহনা’, শ্রীঅরবিন্দের জীবনালেখ্য ‘আস্পৃহা’, মীরাবাঈ-এর জীবনালেখ্য ও ভজনগীতিমালিকা ‘সাধিকা মীরাবাঈ’, বেদ-উপনিষদের নির্বাচিত মন্ত্রপাঠ ও তার মর্মার্থ ব্যাখ্যা ‘বেদবাণী’র সদ্য প্রকাশ (এ বি মিউজিক) সেই অরুন্ধতী রায়চৌধুরীকে স্বমহিমায় ফিরিয়ে আনল শ্রোতার কাছে। শিল্পীর কণ্ঠে গ্রন্থনা তাঁর গাওয়া গান ও স্তোত্রপাঠকে গভীর সূত্রে বেঁধেছে। নষ্ট সময়ে এমন উজ্জ্বল সত্যের আলোয় উদ্ভাসিত হওয়ার সুযোগ নিঃসন্দেহে বড় প্রাপ্তি।

বিকল্প চিন্তা

‘ক্ষমতা ও ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে দূরে দারুচিনি দ্বীপের মতো যিনি দাঁড়িয়ে। সাহিত্যিক-দার্শনিকদের গজদন্ত মিনার ভেঙে বেরিয়ে আসা, সমাজের মুখোশ টেনে-হিঁচড়ে খুলে ফেলা একক অপ্রতিরোধ্য সার্ত্র।’ জাঁ-পল সার্ত্র-কে নিয়ে বলছিলেন চিন্ময় গুহ, তাঁর আলোচনায় উঠে আসছিল প্রচলিত ব্যবস্থার বিরুদ্ধবাদী ও বিকল্প চিন্তার মনীষী হিসেবে সার্ত্র আজও কতটা প্রাসঙ্গিক এবং সমকালীন। কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের (১৯২০-১৯৮৫) ৯৫তম জন্মদিন উপলক্ষে ২ সেপ্টেম্বর শিশির মঞ্চে এক অনুষ্ঠানে ‘বীরেন্দ্র স্মারক বক্তৃতা’ দিলেন চিন্ময় গুহ। আয়োজনে কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় স্মরণ কমিটি। অন্য দিকে সুইজারল্যান্ডের সমাজ ব্যবচ্ছেদকে বিষয় করে একগুচ্ছ সাম্প্রতিক ছবির উত্‌সব নন্দনে ১১-১৩ সেপ্টেম্বর। উদ্যোগে নন্দন, দিল্লির সুইস দূতাবাস ও সিনে সেন্ট্রাল।

নীরা

‘দীর্ঘশ্বাসকে উড়িয়ে নিয়ে যায় হু-হু হাওয়া, নদীর জলে হালকা মেঘের ছায়া পড়ে।’ কবিতার এমন পংক্তি যাঁর কলমে, সেই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় আজও সদাজাগ্রত বাঙালি মননে,তাঁর ‘নীরা’ও বাঙালির রোমান্টিকতায় অবিচ্ছেদ্য। ৭ সেপ্টেম্বর তাঁর আশি বছর পূর্ণ হল। সেই উপলক্ষে রবীন্দ্রসদনে ৬ সেপ্টেম্বর ছিল ‘বৃষ্টিভেজা নীরা’। নীরা-কে নিয়ে কবিতা থেকে সিনেমাস্কোপে বালি দিয়ে অ্যানিমেশন তৈরি করলেন যে শিল্পী, ‘স্যান্ড কৌশিক’ নামেই সুপরিচিত তিনি। নীরা-র স্মৃতিতে দর্শক-শ্রোতাদের ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন আবৃত্তিকার বৃষ্টি, নীরা-কে নিয়ে লেখা কবিতাদি পাঠ করে। পরিচালনায় অনির্বাণ চৌধুরী। অন্য দিকে সুনীলের কবিতার অনুষঙ্গে ২৭ অগস্ট প্রকাশ পেল রূপনার দত্তের প্রথম গানের অ্যালবাম ‘স্বপ্ন নিয়ে’ (রাগা মিউজিক)। ‘তাঁর কবিতার সঙ্গে আমার গানের এই সাযুজ্য-ভাবনা পছন্দ হয়েছিল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের, রেকর্ড করার অনুমতি দিয়েছিলেন আমায়।’ জানালেন রূপনার। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, অতুলপ্রসাদ এবং নিজের সুরে বাংলা গান গেয়েছেন রূপনার, শুরুতে সুনীলের কবিতা পাঠ করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।

মাটি খুঁড়ে

এক সময় সি এম ডি এ-র ডাকনাম ছিল ‘খুঁড়ছি মাটি দেখবি আয়’। মেট্রো রেল, ফ্লাইওভার, কি জলের পাইপ বসানোর এই সব আটপৌরে খোঁড়াখুঁড়ি আমাদের খুব চেনা। কিন্তু প্রত্নবিদ্‌রা যখন লুপ্ত ইতিহাস উদ্ধারে মাটি খোঁড়েন, তার খবর আমরা কতটুকু রাখি? রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব ও সংগ্রহালয় অধিকার সম্প্রতি মেদিনীপুরের মোগলমারি (সঙ্গে তারই একটি ছবি) আর হুগলির গড় মান্দারনে উত্‌খনন করেছে, অনুসন্ধান চালিয়েছে নানা জেলায়, সংরক্ষণ করেছে সুপুর, আঁটপুর, উচকরণের মন্দির কি দার্জিলিঙের রায় ভিলা। প্রকাশিত হয়েছে পাথরের ভাস্কর্যের চমত্‌কার ক্যাটালগ। আগ্রহী মানুষকে এ সব জানাতেই গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় ১২-১৫ সেপ্টেম্বর প্রদর্শনী (২-৮টা), জানা যাবে সেন্টার ফর আর্কিওলজি এবং রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের কাজের কথাও। ১৫ তারিখ বেলা ১১টায় অবনীন্দ্র সভাগৃহে এ বিষয়েই আলোচনা, বলবেন এ এস আই, বিশ্বভারতী, সেন্টার ফর আর্কিওলজি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতত্ত্ব বিভাগ, এবং প্রত্নতত্ত্ব অধিকারের প্রতিনিধিরা।

চিনিয়ে দিতে

১২ অগস্ট ১৯৭১-এ উত্‌পল দত্ত তাঁর লেখা ‘টিনের তলোয়ার’ প্রথম মঞ্চস্থ করেন রবীন্দ্রসদনে। এ-নাটক আজও সমকালীন, অথচ আজকের প্রজন্মের কাছে এ সব এখন গল্পকথা। চারপাশের অস্থির সময় নতুন প্রজন্মকে চিনিয়ে দিতেই ‘টিনের তলোয়ার’ প্রযোজনায় মেতে উঠেছে ক্যালকাটা পারফরমার্স, মূল উদ্যোক্তা উত্‌পল দত্তের একনিষ্ঠ ছাত্র ও পিএলটি-র দীর্ঘ দিনের সদস্য সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরই নির্দেশনায় ১০ সেপ্টেম্বর, নাট্যগোষ্ঠীটির তেইশতম প্রতিষ্ঠা দিবসে, অ্যাকাডেমি’তে সন্ধে সাড়ে ৬টায়, তমাল রায়চৌধুরী রজত গঙ্গোপাধ্যায় জয়ন্তমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় সুদীপ মুখোপাধ্যায় প্রমুখের অভিনয় সংবলিত এ-নাটকের প্রথম অভিনয়। অন্য দিকে ঠিক এই একই অভিপ্রায়ে বের্টোল্ট ব্রেশট-এর ‘শোয়াইক গেল যুদ্ধে’ (ভাষান্তর: অশোক মুখোপাধ্যায়, সুর: দেবাশিস দাশগুপ্ত) নতুন করে মঞ্চস্থ করল টোটাল থিয়েটার, নাটকের মাধ্যমে আজকের শ্বাসরোধী সমাজের চেহারাটা বেআব্রু করতে। ১৯৮১-তে বিভাস চক্রবর্তীর নির্দেশনায় থিয়েটার ওয়ার্কশপ প্রযোজনার ৩৩ বছর পর নতুন বিন্যাস ও নির্দেশনায় শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়।

নতুন ভূমিকায়

ফেলুদা থেকে অ্যাগামেমনন, সত্যজিতের গোয়েন্দা থেকে হোমারের মহাকাব্যিক চরিত্র কেমন লাগছে? ‘একেবারেই আলাদা অভিজ্ঞতা, তবু বলব অভিনেতার প্রস্তুতির দিক থেকে দেখতে গেলে অনেকটাই এক।’ খুব সহজ অথচ গভীর ভঙ্গিতে কথা বলেন সব্যসাচী চক্রবর্তী, সন্দীপ রায় যাঁকে তাঁর ছবিতে বাঙালির প্রিয় ফেলুদা করে তুলেছিলেন। নোবেল অ্যাসোসিয়েটস-এর প্রযোজনায় (সহযোগিতায় আরশি নাট্যগোষ্ঠী) ক’দিন বাদেই মঞ্চস্থ হতে চলেছে ‘ট্রয়’, ইলিয়াড অবলম্বনে, নির্দেশনায় অবন্তী চক্রবর্তী। ট্রোজান-যুদ্ধে গ্রিক বীর অ্যাগামেমননের ভূমিকার কথা কে না জানে! তাঁর নেতৃত্বেই গ্রিকরা লড়াইয়ের শক্তি খুঁজে পেয়েছিল। কিন্তু তা বলে একবগ্গা চরিত্র হিসেবে উপস্থাপিত হচ্ছেন না অ্যাগামেমনন, এ-নাটকে সে চরিত্রে নানা স্তর, নানা রং ‘এটাই আমার অসম্ভব ভাল লাগছে। চরিত্রটা চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে আমার কাছে। রক্তমাংসের মানুষ, কত আবেগ-অনুভূতি। কঠোর পৌরুষের পাশাপাশি নারীর কোমলতায় বোনা এ-চরিত্র।’ এর আগেও নিয়মিত থিয়েটার করেছেন সব্যসাচী, চার্বাক-সহ নানা নাট্যগোষ্ঠী এবং বিভিন্ন নির্দেশকের তত্ত্বাবধানে। ‘কিন্তু অবন্তীর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাটা একেবারে নতুন। ওঁর নির্দেশনার ধরন, অভিনয় করানোর প্যাটার্ন একেবারে আলাদা। এতে আমার অসুবিধে তো হয়ইনি, বরং বেশ এনজয় করেছি। আর একজন অভিনেতা হিসেবে নির্দেশকের কথা মেনে চলাই তো দায়িত্ব আমার, সে দিক থেকে এই চরিত্রটা করতে গিয়ে শিখলামও অনেক কিছু। যতদিন কাজ করব ততদিনই শিখব। থিয়েটার আমার প্যাশন।’ ১৪ সেপ্টেম্বর সন্ধে সাড়ে ৬টায় রবীন্দ্রসদনে ‘ট্রয়’-এর প্রথম অভিনয়।

শিল্পী

পণ্ডিত রবিশংকর সেতারে নতুন সুর করে মেয়েটিকে তুলিয়ে দিতেন, তিনি তখন শেখাতেন অন্যদের। রবিশংকরের পরিচালনায় ‘সারে জাঁহা সে’র মূল গায়িকাদের অন্যতম প্রীতি সরকার। রাজশাহির মেয়েটির প্রাতিষ্ঠানিক সঙ্গীতশিক্ষা ছিল না। বাড়িতে ছিল রাধিকামোহন মৈত্র সহ নানা শিল্পীর আনাগোনা, আর বিধবা সুগায়িকা মায়ের প্রভাব। ছাত্রজীবনেই এলেন কমিউনিস্ট পার্টিতে। ভারতীয় গণনাট্য সংঘের কেন্দ্রীয় স্কোয়াডে যোগ দিতে বলা হল প্রীতিকে। তবে রক্ষণশীল পরিবারে কাজটি সহজ ছিল না। মা’কে নিয়ে প্রীতি কলকাতায় আসেন। পরে নিজে চলে যান আন্ধেরিতে শিল্পীদের কমিউনে। সেখানে যোগ দেন উদয়শংকরের আলমোড়া কেন্দ্র ভাঙা একগুচ্ছ শিল্পী, পরে পণ্ডিত রবিশংকর ও অন্নপূর্ণা দেবী। এই কেন্দ্র থেকেই তৈরি হয় ‘স্পিরিট অব ইন্ডিয়া’, ভারতের নানা প্রান্তের লোকসঙ্গীতের অসামান্য কোলাজ। এর কণ্ঠসঙ্গীতে ছিলেন প্রীতি। এখানেই রবিশংকর ও অন্নপূর্ণার কাছে শেখার সুযোগ পান তিনি। কেন্দ্রীয় স্কোয়াড ভেঙে যাওয়ার পর কলকাতায় ফিরে প্রীতি বিয়ে করেন রমেন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। দেবব্রত বিশ্বাসের শিক্ষকতায় রেডিয়োতে গানও গাইতেন। খাজা আহমেদ আব্বাসের ‘ধরতি কে লাল’ ও ঋত্বিক ঘটকের ‘কোমল গান্ধার’-এ গান গাইলেও বাণিজ্যিক শিল্পজগত্‌ তাঁকে টানেনি কখনও। পরে তিনি দলাদলির আবহ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। নব্বই বছর বয়সে সম্প্রতি প্রয়াত হলেন শিল্পী। ১৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫-৩০-য় নেহরু চিলড্রেন্স মিউজিয়ামে তাঁর স্মরণসভা, আয়োজনে আইপিটিএ, আইপিসিএ, সংস্কৃতি সমন্বয়, পরিবারের সদস্যরা।

kolkatar karcha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy