তখনও জ্বলছে দাউদাউ আগুন। শনিবার রাতে, পাক সার্কাসে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক ।
১২ ঘণ্টা আগেই মাথার উপরে ছাউনিটুকু হারিয়েছেন পার্ক সার্কাস রেল লাইনের ধারের বস্তির বাসিন্দা জেমিমা বিবি। প্রশাসন ত্রিপল দিয়েছে। কিন্তু তা টাঙানোর বাঁশের খুঁটি কেনার সার্মথ্য নেই। দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে জেমিমার তাই রাত কাটবে খোলা আকাশের নীচেই।
শনিবার রাতের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া ৩০০টি ঝুপড়ির প্রায় সব বাসিন্দারই একই হাল। এক বাসিন্দা শেখ সেলিম বলেন, “ঘরের ছাউনির বাঁশও পুড়ে খাক। ত্রিপল কোথায় লাগাব?”
রবিবার দুপুরে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বস্তির ধারের মাঠে বিলি হওয়া খিচুড়ি নিতে হুড়োহুড়ি চলছে। সরকারি সাহায্য এসে পৌঁছলেও ধাক্কাধাক্কিতে তা নিতে পারছেন না অনেকেই। বাসিন্দারা জানান, সকালে কলা, বিস্কুট মিলেছিল। দুপুরে খিচুড়ি দেওয়া শুরু হয়েছে। বস্তা বস্তা জামাকাপড় এনে ঢেলে দেওয়া হচ্ছে। জলের সরবরাহ স্বাভাবিক। কিন্তু ঘরের বালতি, গামলা সব পুড়ে যাওয়ায় তা অনেকেই সংগ্রহ করতে পারছেন না।
সকাল দশটা নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় স্বাস্থ্য দফতরের ‘সিভিল ডিফেন্স অ্যান্ড ক্যাজুয়ালটি সার্ভিসেস’ টিম। এক জন সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার, বেশ কয়েক জন ডাক্তার এবং দুই মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী-সহ প্রায় দশ জন চিকিৎসার কাজে হাত দেন। আনা হয় অ্যাম্বুল্যান্স। কিছু আহতকে হাসপাতালেও পাঠানো হয়। অনেককে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও এগিয়ে আসে। স্বাস্থ্যশিবিরের এক চিকিৎসক বিভাস আঢ্য বলেন, “প্রচণ্ড ভয় পেয়ে কয়েক জন মানসিক ভাবেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন।”
বস্তির বাসিন্দাদের জন্য কী ব্যবস্থা নিচ্ছে পুরসভা? স্থানীয় ৫৯ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর দেবাংশু রায় বলেন, “নির্বাচনী বিধি থাকায় সাহায্য করা সমস্যার। তবু ত্রাণ এবং মেডিক্যাল টিম পাঠিয়েছি। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে সাহায্য করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy