এমনই দশা ত্রিফলার। ছবি: প্রদীপ আদক।
সৌন্দর্যায়নের জন্য কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে শহর জুড়ে ত্রিফলা আলোকস্তম্ভ বসিয়েছিল পুরসভা। বেহালা এলাকায় ডায়মন্ড হারবার রোডের দু’ধারে সেই ত্রিফলা আলোকস্তম্ভগুলিই বেহাল হয়ে পড়ে আছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই আলোকস্তম্ভগুলির এমন পরিণতি।
বেহালা চৌরাস্তা, চোদ্দ নম্বর বাসস্ট্যান্ড, অজন্তা, সখেরবাজার, শীলপাড়া, ব্লাইন্ড স্কুল এবং শিল্পতালুক সংলগ্ন এলাকায় অনেকগুলি বাতিস্তম্ভ ন্যাড়া দাঁড়িয়ে রয়েছে। কোনও বাতিস্তম্ভে দু’টি শেড নেই।
কোথাও শেডগুলির ঢাকনা ভেঙে বাল্ব বেড়িয়ে এসেছে। আবার কোথাও শেডগুলি ফুটো হয়ে রয়েছে।
কোথাও কোথাও বেহাল বাতিস্তম্ভে ঝুলছে বিজ্ঞাপনের বোর্ড।
স্থানীয় বাসিন্দা রাজা মৈত্রের কথায়: “এই আলোকস্তম্ভগুলি বসানোর পরে রাতে দেখতে ভাল লাগত। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অল্প দিনের মধ্যেই সেগুলি কঙ্কালসার চেহারা।” বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, রাতে এখানকার ত্রিফলা আলোক স্তম্ভগুলিতে নিয়মিত আলো জ্বলে না। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানান, শুধু রক্ষণাবেক্ষণ নয় আলো জ্বালানোর বিষয়ে নিয়মিত নজরদারির কোনও ব্যবস্থা নেই। স্থানীয় পুর-কর্তৃপক্ষ প্রথম দিকে এলাকার সৌন্দর্যায়নের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারেই দেখতেন বলে বাসিন্দারা জানান। কিন্তু কয়েক মাস পরেই সেই রাশ আলগা হতে শুরু করে। তার ফলেই ত্রিফলা স্তম্ভগুলির এমন হাল।
তবে বাসিন্দাদের এই অভিযোগ মানতে নারাজ কলকাতা পুরকর্তৃপক্ষ। তাঁরা ত্রিফলা আলোকস্তম্ভগুলির এই হালের জন্য ডায়মন্ড হারবার রোডের বেহাল দশা এবং নির্মীয়মান মেট্রোর কাজকে দায়ী করেছেন। তেরো নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তৃণমূলের সুশান্ত ঘোষ বলেন, “এই সমস্যা আমাদের নজরে এসেছে। ডায়মন্ড হারবার রোড সারাইয়ের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ত্রিফলা আলোকস্তম্ভগুলি ঠিক করা যাবে না।” চোদ্দ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তৃণমূলের মানিক চট্টোপাধ্যায়ের কথায়: “রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। মেট্রোর কাজ চলার জন্য তা ঠিকমতো করা যাচ্ছে না। খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসে খুব একটা ভরসা রাখতে পারছেন না বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, শুরু থেকে বাতিস্তম্ভগুলার ঠিক মতো রক্ষণাবেক্ষণ হলে কয়েক বছরের মধ্যে এই হাল হত না। বাতিস্তম্ভগুলির বেহাল দশার কথা একাধিক বার জাননো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেননি স্থানীয় পুর-কর্তৃপক্ষ।
রক্ষণাবেক্ষণের দুর্বলতার জন্য নয়, ত্রিফলা আলোকস্তম্ভগুলির এমন দুর্দশার পিছনে চোরের হাত থাকতে পারে বলে মনে করছেন পুরসভার মেয়র পারিষদ (আলো) মনজর ইকবাল। তিনি বলেন, “আলোকস্তম্ভের শেডগুলি চুরিও যেতে পারে। কী হয়েছে তা বিভাগীয় কর্মীদের কাছে জানতে চাইব। তার পরে ব্যবস্থা নেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy