Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

নিয়ম ভেঙে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা, অভিযুক্ত শিক্ষক

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশ লঙ্ঘন করে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ উঠল আনন্দমোহন কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, তদন্তে অভিযোগ প্রমাণ হলে ওই পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত শিক্ষক অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

সাবেরী প্রামাণিক
শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৪ ০১:১৯
Share: Save:

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশ লঙ্ঘন করে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ উঠল আনন্দমোহন কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, তদন্তে অভিযোগ প্রমাণ হলে ওই পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত শিক্ষক অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলিতে এখন স্নাতক স্তরের পার্ট থ্রি-র প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা চলছে। ওই কলেজে প্রাণিবিদ্যার পরীক্ষা ছিল ২৫, ২৬, ২৭ মার্চ। কলেজের তরফে জানানো হয়েছে, ২৫ তারিখের পরীক্ষাটি না হলেও ২৬ ও ২৭ মার্চ সেটি হয়েছে। অভিযোগ, কলেজের যে শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয় অভ্যন্তরীণ বা ইন্টার্নাল পরীক্ষক হিসেবে নিয়োগ করেছিল, তাঁর জায়গায় বিভাগীয় প্রধান গৌতম দাস নিজেই পরীক্ষাগুলি নেন। বিশ্ববিদ্যালয় বহিরাগত বা এক্সটার্নাল পরীক্ষক হিসেবে যাঁদের মনোনীত করেছিল, তাঁদেরও বাদ দিয়ে গৌতমবাবু নিজের পছন্দের পরীক্ষক নিয়ে আসেন।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ (টিচার-ইন-চার্জ) দেবব্রত ভট্টাচার্য শনিবার বলেন,“২৭ মার্চ গোলমালের কথা জানতে পারি। সে দিনই লিখিত ভাবে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানাই।” বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ওই পরীক্ষায় অভ্যন্তরীণ পরীক্ষক হওয়ার জন্য গৌতমবাবু বেশ কিছু দিন ধরেই চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। বিভিন্ন ভাবে সংশ্লিষ্ট মহলে যোগাযোগ করে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষক হওয়ার জন্য তদ্বির করতে থাকেন তিনি। কিন্তু সে সবে কান দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়।

গৌতমবাবু অবশ্য এ সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দেওয়া নোটিস অনুযায়ীই পরীক্ষাটি নিয়েছেন তিনি। তাই নিয়ম-বিরুদ্ধ কোনও কাজ তিনি করেননি। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, “গৌতমবাবু ১২ মার্চ একটি নোটিস নিয়ে আসেন। বিভাগীয় প্রধান বলে ওঁর উপরে আস্থা রেখে আমি সেটিতে স্বাক্ষর করি। পরে যখন নজরে আসে, সেখানে উনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশ লঙ্ঘন করে পরীক্ষক ও পরীক্ষার দিন বদলেছেন, তখন ১৮ মার্চ ফের একটি নোটিস দেওয়া হয়।” পরীক্ষার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশের কথাই সেই নোটিসে জানানো হয় বলে দেবব্রতবাবুর বক্তব্য। কিন্তু তার পরেও নির্দিষ্ট দিনে পরীক্ষা না নেওয়া, পরীক্ষক বদল করার অভিযোগ উঠেছে গৌতমবাবুর বিরুদ্ধে।

যদিও অভিযুক্ত শিক্ষক জানান, এ সব ঠিক নয়। বরং ২৫ মার্চ অন্য একটি কলেজে পরীক্ষক হিসেবে যাওয়ায় তিনি কলেজের পরীক্ষা নিতে পারেননি। এ জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, এই গোলমালের পুরো দায় স্বীকার করেছেন গৌতমবাবু। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাদের তিনি জানান, এমন ঘটনা আর ঘটবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য (শিক্ষা) ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় শনিবার জানান, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হবে। তিনি বলেন, “ভুল করেই হোক বা যে ভাবেই হোক, বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশ অমান্য করে কেউ খামখেয়ালি আচরণ করবেন, সেটা মেনে নেওয়া যায় না। তদন্তে যদি দেখা যায় যে অভিযোগ সঠিক, তা হলে ওই কলেজের জন্য নতুন করে পরীক্ষার দিন দেওয়া হবে। আগের পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে প্রাণিবিদ্যার প্র্যাকটিক্যাল হবে কলেজে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE