Advertisement
E-Paper

বেআইনি বাড়ি নিয়ে মন্ত্রীর মন্তব্যে বিপাকে পুরসভা

পুরসভা ও পুলিশের একাংশের মদতে কলকাতায় বেআইনি বাড়ি নির্মাণ বাড়ছে বলে মন্তব্য করলেন রাজ্যেরই মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। আগামী বছর পুরভোট। তার আগে তৃণমূলেরই দখলে থাকা পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে সাধনবাবু তোপ দাগায় অস্বস্তিতে পুর প্রশাসন। সাধনবাবুর বক্তব্য, “সব কিছু তো আর মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে দেখা সম্ভব নয়, আমাদেরও সজাগ থাকতে হবে।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৪ ০২:২৩

পুরসভা ও পুলিশের একাংশের মদতে কলকাতায় বেআইনি বাড়ি নির্মাণ বাড়ছে বলে মন্তব্য করলেন রাজ্যেরই মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। আগামী বছর পুরভোট। তার আগে তৃণমূলেরই দখলে থাকা পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে সাধনবাবু তোপ দাগায় অস্বস্তিতে পুর প্রশাসন। সাধনবাবুর বক্তব্য, “সব কিছু তো আর মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে দেখা সম্ভব নয়, আমাদেরও সজাগ থাকতে হবে।”

সাধনবাবুর ওই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কোনও মন্তব্য করতে চাননি মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। বোর্ডে শুরু থেকেই বিল্ডিং বিভাগের ভার শোভনবাবুর হাতে রয়েছে।

সম্প্রতি উত্তর কলকাতার গোয়াবাগান বস্তিতে বেআইনি ভাবে একটি বাড়ি নির্মাণের প্রসঙ্গ তুলে পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন সাধনবাবু। পুরসভার সরকারি অফিসারেরা না পারলেও সাধনবাবু নিজে গিয়ে ওই বাড়ির গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। তার পরেই দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুর কমিশনার খলিল আহমেদকে একটি চিঠি দেন তিনি। সেই চিঠি পেয়েই টনক নড়ে পুরকর্তাদের।

যে ব্যক্তি ওই বাড়ি বানিয়েছেন তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে পুর প্রশাসন। আপাতত তিনি পুলিশ হেফাজতে। তবে বেআইনি বাড়ি তৈরি রোখা যাঁদের কাজ, বিল্ডিং দফতরের সেই অফিসারদের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কেন ব্যবস্থা নেওয়া হল না, তা নিয়ে সরব মন্ত্রী। তাঁর কথায়, “বেআইনি বাড়ি তৈরি যিনি করেছেন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর সেই কাজে মদত দেওয়ায় বিল্ডিং দফতরের যাঁরা জড়িত, তাঁদেরও শাস্তি দেওয়া দরকার।” মেয়র শুধু বলেছেন ‘‘অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।” তবে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনও ইঙ্গিত এখনও দেখাতে পারেনি পুর প্রশাসন।

ঠিক কী হয়েছে গোয়াবাগান বস্তিতে?

পুরসভা সূত্রের খবর, কলকাতা পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ওই বস্তি। ১৯ গোয়াবাগান স্ট্রিটের বস্তিতে প্রায় হাজার চারেক লোকের বাস। বস্তির মধ্যেই রয়েছে সদ্য সমাপ্ত একটি তিনতলা বাড়ি। ভেতরে মার্বেল বসানো। বস্তির বাসিন্দারা জানান, স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বাবলু জায়সবাল ওই বাড়ি তৈরি করেছেন। গত ডিসেম্বর মাস থেকে বাড়ির কাজ শুরু হয়। পুরসভার বিল্ডিং দফতরের এক পদস্থ অফিসার জানান, বস্তি ‘ঠিকা টেনান্সির’ অধীনে। সেখানে কোনও রকম নির্মাণ কাজ করতে হলে ‘ঠিকা টেনান্সির’ কন্ট্রোলারের অনুমতি দরকার। এ ক্ষেত্রে সেই সব নিয়মের তোয়াক্কা না করেই ওই বাড়ি তৈরি করা হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।

বস্তির একাধিক বাসিন্দার দাবি, বাড়ি তৈরির শুরুতেই প্রতিবাদ করা হয়েছিল। পুরসভার দু নম্বর বরোর বিল্ডিং দফতরের সংশ্লিষ্ট অফিসারদেরও জানানো হয়েছিল। স্থানীয় পুর প্রতিনিধি শুক্লা ভোঁড়কেও বলা হয়েছিল। তার পরেও কিছু হয়নি। পুর প্রতিনিধি স্বীকার করেছেন তিনি বিষয়টি জানতেন।

তা হলে কিছু করেননি কেন?

তাঁর জবাব, “বারণ করেছিলাম। শোনেনি তো কী করব।” মেয়রকে জানিয়েছিলেন কি না প্রশ্ন করা হলে শুক্লাদেবী বলেন, “জানিয়েছিলাম। তারপরও কিছু হয়নি।”

বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পুর প্রতিনিধি কিছু করতে পারবেন না বলায় তাঁরাও কিছু দিন চুপ করে থাকেন। তার পরে সাধনবাবুকে বিষয়টি জানান তাঁরা। সাধনবাবুর কথায়, “স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ওই বেআইনি নির্মাণের খবর পেয়ে আমি গিয়ে বাড়িটির দুই সদর দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি।”

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই ঘটনায় বিল্ডিং দফতরের কারা জড়িত, তা জানার জন্য বাবলু জায়সবালকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

sadhan pande trouble municipality in trouble illegal property
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy