পরিকল্পনা করতে করতেই কেটে গেল এক বছর। গত বছর বর্ষবরণের উৎসবে নিউ টাউন, রাজারহাট, সল্টলেকের বিভিন্ন মল থেকে শুরু করে বিনোদন পার্কে নেমেছিল সাধারণ মানুষের ঢল। যা দেখে বিধাননগর কমিশনারেট সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নিরাপত্তার খাতিরে যত দ্রুত সম্ভব গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিতে বসানো হবে ক্যামেরা। কিন্তু এক বছর পার হয়ে ফের বর্ষবরণের সময় চলে এলেও এখনও বসেনি সেই ক্যামেরা।
বড়দিন, বর্ষবরণ উৎসবে যেমন পার্ক স্ট্রিটে সাধারণ মানুষের ঢল নামে, তেমনই গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে নিউ টাউন, সেক্টর ফাইভ, ভি আই পি রোড এলাকার শপিং মল ও রেস্তোরাঁগুলিতেও বেশ ভিড় জমছে। নিউ টাউনে কয়েকটি বিনোদন পার্ক তৈরি হওয়ার পরে তো তা আরও বেড়েছে। নতুন বছরের নৈশ পার্টিই হোক বা বড়দিন, অনেক রাত পর্যন্ত মানুষ রাস্তা বা পার্কে থাকছেন। তাই স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, নতুন বছরের উদ্যাপনকে কেন্দ্র করে যদি পার্ক স্ট্রিটে ক্যামেরা বসতে পারে, তা হলে নিউ টাউন, সল্টলেক বা রাজারহাটে নয় কেন? এখানেও তো উৎসবে জনসমাগম হয় প্রচুর।
গত বছর বর্ষবরণের রাতে কয়েকটি ছোটখাটো গোলমাল হয়েছিল নিউ টাউন, ভি আই পি রোডের রেস্তোরাঁয়। পুলিশ গিয়ে মিটমাট করে। কিছু ঝামেলা হয় ভি আই পি রোডেও। বেপরোয়া মোটরবাইক চালকদের নিয়ে নাজেহাল হতে হয় পুলিশকে। বিধাননগর কমিশনারেটের এক কর্তার মতে, রেস্তোরাঁয় কোনও গণ্ডগোল হলে সামাল দিতে খুব একটা অসুবিধা হয় না। কারণ, বেশিরভাগেই ক্যামেরা থাকে। কিন্তু রাস্তায় বা অন্য কোথাও গোলমাল হলে কারা তা করছে, তার নজরদারি করা সব সময় সম্ভব হয় না। অপরাধী সহজেই অপরাধ করে পালিয়ে যায়। তার পরিচয় জানতে পরে অসুবিধা হয়।
যদিও কমিশনারেটের দাবি, এ বার বড়দিনের উৎসবকে কেন্দ্র করে বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ অতিরিক্ত সতর্কতা নিচ্ছে। বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান কঙ্করপ্রসাদ বারুই বলেন, “সাদা পোশাকের পুলিশ থাকছে রাস্তা, শপিং মল ও বিনোদন পার্কগুলিতে। গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গাগুলিকেও। যে সব জায়গায় ভিড় বেশি হবে, সেখানে প্রতিটি গাড়িকে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করে তবেই পার্কিং করতে দেওয়া হবে। এ ছাড়া, রাস্তায় মোবাইল ভ্যান ও মোটরসাইকেল তো থাকছেই।” হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন অবশ্য জানিয়েছেন, ইকো পার্কে ইতিমধ্যেই বসানো হয়েছে ৩৯টি ক্যামেরা। বড়দিনের উৎসবে সিসিটিভির মাধ্যমে সব সময়ে নজরদারিও চলবে।” এমনকী নিউটাউনের বেশির ভাগ বড় বড় শপিং মল তাদের নিজেদের উদ্যোগে মলের আশেপাশেও ইতিমধ্যেই কয়েকটি ক্যামেরা বসিয়েছে।
কিন্তু এক বছর ধরে পরিকল্পনার পরেও এখনও নিউ টাউন, সল্টলেক বা রাজারহাটের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে ক্যামেরা বসল না কেন? কমিশনারেটের তরফে এসিপি (ট্রাফিক) প্রবীর রায় বলেন, “আমাদের কাজও অনেকটা এগিয়েছে। বেশ কয়েকটি জায়গা নির্বাচন হয়ে গিয়েছে। নিউ টাউনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়, রেস্তোরাঁ ও শপিং মলের রাস্তার সামনে খুবই উচ্চ মানের ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। যা রাতেও স্পষ্ট রাস্তার ছবি তুলতে পারে।” কমিশনারেটের এক কর্তার দাবি, “উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ক্যামেরা কত দ্রুত বসানো যায় সে নিয়ে উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের মধ্যে কয়েকটি মিটিংও হয়েছে।” তাঁর দাবি, “উৎসবের মরসুম তো সবে শুরু। জরুরি ভিত্তিতে অন্তত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কয়েকটি ক্যামেরা বসানো যায় কি না, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy