লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের হস্টেলের বাইরে সাদা পোশাকের টহলদার পুলিশ মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিলেন পুলিশকর্তারা। পাশাপাশি, হস্টেলে কোথায় কোথায় সিসিটিভি বসানো যায়, সে সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন তাঁরা। কলেজ কর্তৃপক্ষ, নিরাপত্তারক্ষী ও ছাত্রীদের সঙ্গে পুলিশের সমন্বয় বাড়ানোর উপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য ছাত্রীদেরও বেনিয়াপুকুর থানার অফিসারদের ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। যে পথে বহিরাগতরা হস্টেলে ঢুকতে পারেন, সেখানে পাঁচিলের উপরে কাঁটাতার লাগানোর পরামর্শও দেওয়া হয়েছে পূর্ত দফতরকে।
প্রশ্ন উঠেছে, হস্টেলে কি তবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছিল না? তা হলে এত দিন কেউ গা করেননি কেন? কলকাতা পুলিশের ডিসি (ইএসডি) ধ্রুবজ্যোতি দে অবশ্য জানান, হস্টেলে খুব গুরুতর (সিরিয়াস) সমস্যা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন না। তবে সামগ্রিক নিরাপত্তা জোরদার করতে কিছু বন্দোবস্ত হচ্ছে।
হস্টেলে নিরাপত্তার দাবিতে সোমবার অবস্থান-আন্দোলন করেন কলেজের এক দল ছাত্রী। মঙ্গলবার হস্টেল পরিদর্শনে যান পুলিশ ও পূর্ত দফতরের প্রতিনিধিরা। বিকেলে অধ্যক্ষা, হস্টেল সুপার-সহ কয়েক জন শিক্ষিকার সঙ্গে কলেজে বৈঠক করেন ধ্রুবজ্যোতিবাবু ও অন্য পুলিশকর্তারা। ছিলেন চার আবাসিক ছাত্রীও। পরে ধ্রুবজ্যোতিবাবু বলেন, “হস্টেলে কোনও নির্দিষ্ট ঘটনার কথা জানা যায়নি। আবাসিকেরা জানান, তাঁদের মনে হয়েছে, বাইরের লোক হস্টেলে ঢুকেছে। তবে তার প্রমাণ নেই।” হস্টেলে নিরাপত্তার অভাব সংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে কিছু বিশেষ ব্যবস্থা করছেন তাঁরা।
কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ নতুন নয়। কিন্তু মেয়েদের হস্টেলে ঢুকে বহিরাগত যুবকেরা উঁকি মারছে, এমন অভিযোগ কার্যত নজিরবিহীন। লেডি ব্রেবোর্নের মতো প্রথম সারির সরকারি কলেজে এ হেন অভিযোগ তাই হস্টেলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
হস্টেলে বাড়তি আলো ও রক্ষীর ব্যবস্থা করেছেন কর্তৃপক্ষ। তবে অধ্যক্ষা শিউলি সরকারের দাবি, স্নাতকোত্তরের ছাত্রীদের অনেকে কলেজের কঠোর নিয়মকানুনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারছেন না। তাই তাঁদের মধ্যে এক ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে। এই সব অভিযোগ তার বহিঃপ্রকাশও হতে পারে বলে মত অধ্যক্ষার। তাঁর কথায়, “স্নাতক স্তরের ছাত্রীরা কিন্তু এই আন্দোলনে নেই। মূলত স্নাতকোত্তরের ছাত্রীরাই অভিযোগ জানাচ্ছে। তারা হয়তো অন্য কলেজ থেকে এসে কঠোর নিয়ম কানুন মানিয়ে নিতে পারছে না।” শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মঙ্গলবারও জানান, ছাত্রীদের নিরাপত্তার সঙ্গে আপস নয়। সিসিটিভি বসাতে প্রয়োজনে কলেজকে অর্থসাহায্য করবে সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy