Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ঘুমের বড়ি নিয়ে মামলা, কুণালের হাজিরা ২০শে

সারদা মামলা তো ছিলই। তার সঙ্গে জুটল ঘুমের বড়ির মামলা।তৃণমূলের সাসপেন্ডেড সাংসদ কুণাল ঘোষ সারদা কেলেঙ্কারিতে অন্যতম অভিযুক্ত। আপাতত জামিনে মুক্ত। কিন্তু জেলে থাকাকালীন ঘুমের বড়ি খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন এক বার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:৩০
Share: Save:

সারদা মামলা তো ছিলই। তার সঙ্গে জুটল ঘুমের বড়ির মামলা।

তৃণমূলের সাসপেন্ডেড সাংসদ কুণাল ঘোষ সারদা কেলেঙ্কারিতে অন্যতম অভিযুক্ত। আপাতত জামিনে মুক্ত। কিন্তু জেলে থাকাকালীন ঘুমের বড়ি খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন এক বার। এখন সেই মামলায় কলকাতা পুলিশ তাঁকে চার্জশিট দিয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ারি, শুক্রবার পুলিশ কোর্টে হাজির হতে হবে কুণালকে।

বছর দুই আগে প্রেসিডেন্সি জেলের ‘পয়লা বাইশ’ সেলের ২০ নম্বর ঘরে বসে অনেকগুলি ঘুমের বড়ি খেয়েছিলেন। ঘটনার তদন্তে নেমেছিল কলকাতা পুলিশ। প্রেসিডেন্সি জেল হেস্টিংস থানা এলাকায় পড়ে। হেস্টিংস থানার পুলিশ দিন তিনেক আগে ব্যাঙ্কশালের পুলিশ কোর্টে ওই মামলার চার্জশিট জমা দিয়েছে।

কুণালের অভিযোগ, গত দু’বছরে কলকাতা পুলিশের অফিসারেরা এক বারই তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। ২০১৪ সালের ১৪ নভেম্বর। ঠিক তার আগের রাতেই ঘুমের ওষুধ খান তিনি। কুণালের কথায়, ‘‘সে দিন বিকেলে এসএসকেএম-এর বিছানায় আমি আচ্ছন্ন অবস্থায় শুয়ে ছিলাম। পুলিশ এসে একটা কাগজে সই করিয়ে নেয়। তার পরে কেউ আর আমার সঙ্গে কথা বলেনি।’’ কুণালের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কেউ আত্মহত্যা করতে গিয়ে বেঁচে গেলে আগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৯ নম্বর ধারায় মামলা হতো। তাতে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ডের বিধানও আছে। কিন্তু এই আইন বাতিল করতে সংসদে সর্বসম্মতির পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে।’’ ওই আইনজীবীর প্রশ্ন, সংসদ যে ধারাকে বাতিল-যোগ্য মনে করছে, তার প্রয়োগ হয় কী করে!

কুণাল জানান, সেই রাতে জেলে ঘরে বসে লজেন্সের ভিতরে ঘুমের বড়ি ভরে একের পর এক লজেন্স খেয়ে যাচ্ছিলেন। পাহারায় যে দু’জন ছিলেন, তাঁদেরও লজেন্স দিয়েছিলেন। তবে তাতে ঘুমের ওষুধ ছিল না। লজেন্স খেতে খেতে এক সময় ঘুমিয়ে পড়েন কুণাল। তাঁকে অঘোরে ঘুমোতে দেখে রাতে টহলরত এক অফিসারের সন্দেহ হয়। এর ৭২ ঘণ্টা আগেই যে কুণাল আদালতে দাঁড়িয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছিলেন, ওই অফিসার তা জানতেন। দ্রুত তিনিই ঘরের লোহার কপাট খুলিয়ে কুণালকে নিয়ে যান হাসপাতালে। প্রাণে বেঁচে যান কুণাল।

লজেন্স খাওয়ার আগে সুইসাইড নোটও লিখেছিলেন কুণাল। তাতে বেশ কয়েক জন প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছিলেন তিনি। ঠিক কাদের নাম ছিল, এখন আর মনে নেই বলে দাবি করলেন। তবে ঘুমের ওষুধ খাওয়ার তিন দিন আগে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে তিনি যে বিচারককে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রভাবশালীদের গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছিলেন, সে কথা মনেআছে। প্রভাবশালীদের গ্রেফতার না করলে তিনি আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকিও দিয়েছিলেন।

এ দিন কুণাল বলেন, ‘‘৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রভাবশালীদের কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় ঘুমের ওষুধ খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। সেই ঘটনার কিছু দিনের মধ্যে তৃণমূল সাংসদ সৃঞ্জয় বসু এবং রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রী মদন মিত্রকে গ্রেফতার করা হয়।’’ সেই সঙ্গে তিনি ঘুমের ওষুধ খাওয়ায় জেলের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে যায়। অফিসার-কর্মী মিলিয়ে জেলের চার জন সাসপেন্ড হন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kunal Ghosh Sleeping pills
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE