Advertisement
E-Paper

জামিন পেতে কোর্টের ভুলের আশায় কুণাল

আদালতেও ভুল হয় এবং সেই ভুলের সূত্রে জামিনও হয় বলে শুনেছেন তিনি। তাই তিনি চান, তাঁর ক্ষেত্রেও আদালতে কিছু ‘ক্লারিক্যাল মিস্টেক’ বা ছোটখাটো ভুল হোক! সেটা তাঁকেও জামিন পেতে সাহায্য করবে বলে সাংসদ কুণাল ঘোষের আশা। সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় প্রথমে রাজ্য পুলিশ, পরে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়ে কুণাল প্রায় দেড় বছর ধরে জেল-হাজতে রয়েছেন। শুক্রবার ওই মামলায় তাঁর হাজিরা ছিল আলিপুর আদালতে। কুণালের সঙ্গে এ দিন অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট হারাধন মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে হাজির করানো হয় ওই মামলায় ধৃত সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন এবং ওই সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৫ ০৩:১৮

আদালতেও ভুল হয় এবং সেই ভুলের সূত্রে জামিনও হয় বলে শুনেছেন তিনি। তাই তিনি চান, তাঁর ক্ষেত্রেও আদালতে কিছু ‘ক্লারিক্যাল মিস্টেক’ বা ছোটখাটো ভুল হোক! সেটা তাঁকেও জামিন পেতে সাহায্য করবে বলে সাংসদ কুণাল ঘোষের আশা।

সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় প্রথমে রাজ্য পুলিশ, পরে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়ে কুণাল প্রায় দেড় বছর ধরে জেল-হাজতে রয়েছেন। শুক্রবার ওই মামলায় তাঁর হাজিরা ছিল আলিপুর আদালতে। কুণালের সঙ্গে এ দিন অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট হারাধন মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে হাজির করানো হয় ওই মামলায় ধৃত সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন এবং ওই সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে।

কুণাল শুরুতেই বিচারকের উদ্দেশে বলেন, “হুজুর, আমার জানা প্রয়োজন, আদালতের ভুলে কী করে জামিন পাওয়া যায়। তা হলে আমিও সেই ভুলের সুযোগ নিয়ে জামিন নেওয়ার চেষ্টা করব।” কেন এমন কথা আদালতে বললেন কুণাল?

আলিপুর আদালতের কৌঁসুলিদের একাংশ জানান, আলিপুর জেলা জজ সমরেশপ্রসাদ চৌধুরীর আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন সারদা মামলায় ধৃত সৃঞ্জয় বসু। তাঁর আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় সওয়াল করেন, সৃঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় ফৌজদারি আইনের ৪০৯ নম্বর ধারা প্রয়োগ করা হয়নি। সাধারণত সরকারি কর্মী বা ব্যাঙ্ককর্মী, এজেন্ট বা ব্যবসায়ীরা অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে থাকলে ওই ধারা প্রয়োগ করা হয়। ওই ধারায় মামলা হলে অভিযুক্ত ব্যক্তি ৯০ দিনের আগে জামিন পান না। সৃঞ্জয়ের বিরুদ্ধে যে-সব ধারা প্রয়োগ করা হয়েছিল, তাতে ৬০ দিন জেল-হাজতে থাকার পরেই অভিযুক্ত জামিন পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হন। সৃঞ্জয় ৬০ দিনেরও বেশি জেল-হাজতে ছিলেন।

আইনজীবীদের একাংশ মনে করেন, মিলনবাবুর সেই যুক্তি মেনেই সৃঞ্জয়কে জামিন দেয় আদালত। পরে জানা যায়, আলিপুর আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট হারাধন মুখোপাধ্যায়ের আদালতের কর্মীদের অনিচ্ছাকৃত ভুলেই সৃঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ৪০৯ নম্বর ধারা প্রয়োগ করা হয়নি। পরে সেই ভুল সংশোধন করে নেন বিচারক মুখোপাধ্যায়। সৃঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ৪০৯ নম্বর ধারা প্রয়োগ করা হয় সারদা মামলায়। তার ভিত্তিতেই সিবিআই কলকাতা হাইকোর্টে সৃঞ্জয়ের জামিন খারিজের আবেদন জানিয়ে কয়েক দিন আগে মামলা দায়ের করেছে। সেই মামলার শুনানি হবে এপ্রিলে।

আইনজীবীদের একাংশ জানান, সৃঞ্জয়ের উদাহরণ দিয়েই বিচারকের উদ্দেশে ওই মন্তব্য করেন কুণাল। সেখানেই থামেননি। বৃহস্পতিবার সিবিআইয়ের তদন্তকে আক্রমণের নিশানা করেছিলেন রাজ্যসভার ওই সদস্য। এ দিন বিচারকের উদ্দেশে কুণালের প্রশ্ন, “সারদা কাণ্ডে সিবিআই খারাপ আর নদিয়ার রানাঘাট কাণ্ডে সিবিআই ভাল এই রহস্য আদালত জানে কি?”

কেন এই কথা বললেন কুণাল?

আইনজীবীদের ওই অংশ মনে করেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারদা কাণ্ডে সিবিআইয়ের ভূমিকা একপেশে বলে মন্তব্য করলেও রানাঘাটে বৃদ্ধা সন্ন্যাসিনাকে ধর্ষণের ঘটনায় তিনি তদন্তের জন্য সিবিআই-কে চেয়েছেন। সিবিআইয়ের ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর দু’রকম দৃষ্টিভঙ্গির

জন্যই তাঁকে কটাক্ষ করে কুণাল এই মন্তব্য বলে মনে করেন ওই আইনজীবীরা।

দেবযানীর আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা এ দিন আদালতে অভিযোগ করেন, সিবিআই মামলার সব নথিপত্রের প্রত্যয়িত প্রতিলিপি তাঁর হাতে তুলে দিচ্ছে না। সেই কারণে বিচারের সময় সওয়াল করতে তাঁর অসুবিধা হতে পারে। সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, তিনি সব নথি শীঘ্রই দাখিল করবেন।

বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী ১৭ জুন ওই তিন অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করাতে হবে।

Kunal Ghosh Poloice CBI Sudipta Sen Saradha money scam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy