Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

আঁধারে ঢাকা জাতীয় সড়ক

হাতে গোনা কয়েকটি আলো। তা-ও দীর্ঘ পথের কিছু অংশে। বাকি পথটুকুতে গাড়ির হেডলাইটটুকুই ভরসা। এ দিকে, রাস্তা অনেক জায়গায় বেশ সংকীর্ণ। দু’ধারে বিশাল বিশাল গাছ। কোথাও কোথাও ইট-বালি ফেলা।

আঁধার পথের ধারে পড়ে ইমারতী দ্রব্য। ইনসেটে, নম্বর প্লেটহীন গাড়ি রাতের যশোর রোডে।—ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

আঁধার পথের ধারে পড়ে ইমারতী দ্রব্য। ইনসেটে, নম্বর প্লেটহীন গাড়ি রাতের যশোর রোডে।—ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

সীমান্ত মৈত্র
শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৬ ০২:১১
Share: Save:

হাতে গোনা কয়েকটি আলো। তা-ও দীর্ঘ পথের কিছু অংশে। বাকি পথটুকুতে গাড়ির হেডলাইটটুকুই ভরসা।

এ দিকে, রাস্তা অনেক জায়গায় বেশ সংকীর্ণ। দু’ধারে বিশাল বিশাল গাছ। কোথাও কোথাও ইট-বালি ফেলা। উল্টো দিক থেকে আসা বড় গাড়ির আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে যে কোনও সময়ে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। রাস্তার পাশে বড় বড় গাছ। রাস্তার আলো বলতে উল্টো দিক থেকে আসা গাড়ির হেডলাইট। তার মধ্যে রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে আছে ট্রাক। ফেলে রাখা হয়েছে ইমারতী দ্রব্য।

বারাসত থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত পর্যন্ত প্রায় ষাট কিলোমিটার ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কটির এই অবস্থা। তারমধ্যে আবার নিরাপত্তার অভাবও চোখে পড়ে। পেট্রোল পাম্পগুলিতে কোনও নিরাপত্তারক্ষী দেখা মিলল না। তবে রাতে তেলও মেলে না। এটিএমগুলি ফাঁকা। কোনও পাহারা নেই। পেট্রাপোল সীমান্তে বাণিজ্য করতে আসা ট্রাকগুলি বেপরোয়া ভাবে যাতায়াত করে। নম্বরপ্লেটহীন কিছু ট্রাকও এই রাস্তায় দেখা গিয়েছে। এ ভাবে যে কোনও সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। প্রাণ হাতে নিয়ে মানুষকে যাতায়াত করতে হয়। রাতে যশোর রোডে দুর্ঘটনা কমাতে কিছু দিন আগে গাছে রিফলেক্টর বসানো হয়েছিল। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যে তার বেশির ভাগই উধাও হয়ে গিয়েছে।

চাঁপাডালি মোড়ে পুলিশ মোতায়েন ছিল। এরপর থেকে অশোকনগরের ব্লিডিং মোড়ের আগে পর্যন্ত কোথাও পুলিশ চোখে পড়েনি। দত্তপুকুর ও বিড়ার মাঝে অবশ্য একটি পুলিশ গাড়িকে চলে যেতে দেখা গেল। বিল্ডিং মোড় থেকে বনগাঁ পর্যন্ত পথে পুলিশের টহল দেখা গিয়েছে। বিল্ডিং মোড়, হাবরা ১ নম্বর রেলগেট এলাকায় পুলিশ টহল ছিল। গাইঘাটা থানার সামনে ও দোগাছিয়া এলাকায় পুলিশ গার্ডরেল ফেলে গাড়ি আটকে তল্লাশি চালানো হচ্ছিল। বনগাঁর আইসি নন্দনকুমার পানিগ্রাহীকে গাড়ি নিয়ে টহল দিতেও দেখা গিয়েছে। বাজার এলাকায় কিছু সিভিক ভলান্টিয়ার্স ছিল।

বামনগাছি মোড় ও দত্তপুকুরে নৈশপ্রহরী দেখা গেল। বামনগাছি, চৌমাথা, নরসিংহপুর, গুমা খালের কছে সড়কে দু’দিকে ট্রাক দাঁড়িয়েছিল। বিড়া ও গুমার মাঝে সড়ক দখল করে ইট-বালি-পাথর ফেলে রাখা হয়েছে।

গোটা সড়কে আলো বলতে, হাবরা, অশোকনগর, বনগাঁর শহর এলাকায়। এ ছাড়া বামনগাছি, দত্তপকুর, গাইঘাটা, চাঁদপাড়া বাজার এলাকার মতো কিছু জায়গায় রাস্তায় আলো দেখা গিয়েছে। রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘জাতীয় সড়কে আলো লাগানোর কথা কেন্দ্রীয় সরকারের।’’ রিফলেক্টর কথা থাকার বিষয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বনগাঁ মহকুমার সহকারী বাস্তুকার জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই সব রিফলেক্টর চুরি হয়ে যাচ্ছে, ভ্যান চালকেরা তা চুরি করে নিজেদের ভ্যানের পিছনে লাগাচ্ছে। এ বিষয়ে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ ডাকবাংলো মোড় থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত পর্যন্ত প্রায় ষাট কিলোমিটার রাস্তা চওড়া করার প্রকল্প তৈরির কাজ এখন শেষ পর্যায়ে ওই প্রকল্পের মধ্যে আলো বিষয়টিও আছে বলে তিনি জানান।

পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই রাস্তার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় রাতে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। মোবাইল টহলের মাধ্যমেও এলাকায় ঘোরা হচ্ছে। মধ্যমগ্রাম থেকে বারাসত পর্যন্ত বাইক টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

national highway safety
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE