Advertisement
E-Paper

শেষ বেলার প্রচারে এগিয়ে রইল তৃণমূলই

বেলা তিনটেয় খেলা শেষ। তার আগে তৃণমূল নেতারা দিনভর দাপিয়ে বেড়ালেন ভোটের ময়দান। তুলনায় অনেক নিচুসুরে বাঁধা রইল বিরোধীদের প্রচার। কাঁথিতে মিছিল বার করতেই পারল না কোনও বিরোধী দল। কাটোয়াতে লকেট চট্টোপাধ্যায় না যাওয়ায় দলীয় কার্যালয়েই ভাঙচুর চালাল বিজেপি সমর্থকরা। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে বড় মিছিল ছাড়া, সিপিএম প্রধানত বাড়ি বাড়ি প্রচারেই সীমাবদ্ধ থাকল। কংগ্রেসের গড় মুর্শিদাবাদ কিংবা কাটোয়াতেও কোনও বড় নেতা প্রচারে নামেননি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:১৮

বেলা তিনটেয় খেলা শেষ। তার আগে তৃণমূল নেতারা দিনভর দাপিয়ে বেড়ালেন ভোটের ময়দান। তুলনায় অনেক নিচুসুরে বাঁধা রইল বিরোধীদের প্রচার। কাঁথিতে মিছিল বার করতেই পারল না কোনও বিরোধী দল। কাটোয়াতে লকেট চট্টোপাধ্যায় না যাওয়ায় দলীয় কার্যালয়েই ভাঙচুর চালাল বিজেপি সমর্থকরা। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে বড় মিছিল ছাড়া, সিপিএম প্রধানত বাড়ি বাড়ি প্রচারেই সীমাবদ্ধ থাকল। কংগ্রেসের গড় মুর্শিদাবাদ কিংবা কাটোয়াতেও কোনও বড় নেতা প্রচারে নামেননি।

তুলনায় তৃণমূল সারা দিনই প্রচারকে বেঁধে রেখেছিল উচ্চগ্রামে। বর্ধমানে অভিনেতা হিরণ, মেদিনীপুরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, শিলিগুড়িতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মালদহে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, নিজের এলাকা কাঁথিতে শুভেন্দু অধিকারী, সকলেই হাজির ছিলেন সকাল থেকে। সেখানে বিজেপির পক্ষে আজ রাহুল সিংহ এবং সাংসদ সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়া শিলিগুড়িতে থাকলেও কোনও মিছিল বা সভা করলেন না। বাবুল সুপ্রিয় মাঠেই ছিলেন না, লকেট চট্টোপাধ্যায় কাটোয়ায় আসবেন না জানতে পেরে বুধবার গভীর রাতে দলের কার্যালয় ভাঙচুর করলেন দলীয় কর্মীরা। তারকা বলতে অভিনেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায় মেমারিতে রোড শো করেন। কেবল রূপা গঙ্গোপাধ্যায় সারা দিন লড়ে গেলেন টাকি, বসিরহাটে। তৃণমূলের বহিরাগতদের বিরুদ্ধে দলের কর্মীদের অবস্থানে গিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ান তিনি।

বিরোধীশূন্য কাঁথি পুরসভা গঠনের জন্য দিন কয়েক আগেই ডাক দিয়েছিলেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর নেতৃত্বে পুরভোট প্রচারের শেষ দিনে শহর জুড়ে দাপাল তৃণমূলের মহামিছিল। কারবালা মাঠে সভাও করে তৃণমূল। অথচ বিরোধী বামফ্রন্ট, বিজেপি বা কংগ্রেসের মিছিল, পথসভার দেখা মিলল না। কেন? সিপিএমের কাঁথি জোনাল সম্পাদক হরপ্রসাদ ত্রিপাঠীর সাফাই, ‘‘শহরে তৃণমূলের মিছিল চলাকালীন পাল্টা মিছিল বের করলে অশান্তি ও অপ্রিয় কিছু ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। যদিও বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রার্থীরা বাড়ি বাড়ি প্রচার করেছেন।”

নবদ্বীপে বিজেপি কিছুটা আশা নিয়ে ভোট লড়াইয়ে নেমেছিল। সেখানেও শেষ বেলায় দাপাল শাসক দলই। সকাল থেকে নবদ্বীপের রাস্তায় গোটা পঞ্চাশ টোটো নামিয়েছিল তৃণমূল। এক একটা ওয়ার্ডে দুটো তিনটে করে টোটো ঘুরেছে সারাদিন, তা থেকে উড়ছে পতাকা, সঙ্গে মাইক, পিছনে ব্যানার। ভিতর থেকে স্লোগান দিচ্ছেন মহিলা কর্মীরা। আড়াইটে নাগাদ পোড়ামা তলায় সব টোটো জড়ো হওয়ায় প্রায় মেলার চেহারা নেয়। তুলনায় বিজেপি গোটা কুড়ি টোটো নামাতে পেরেছে, সিপিএম, কংগ্রেস হাতে-গোণা কয়েকটি। বিমান বসুর পদযাত্রায় অবশ্য হাজার দেড়েক লোক আজ হেঁটেছেন। প্রাচীন মায়াপুরে তাঁর কথা চলতে চলতেই অবশ্য পিছনে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকে তৃণমূলের একটি প্রচার গাড়ি। দশ মিনিটের মধ্যেই কথা সারেন তিনি। সাড়ে এগারোটা নাগাদ তিনি চলে যাওয়ার ঘণ্টা দেড়েক পর শান্তিপুরে প্রচার করতে বেরিয়ে মার খায় সিপিএমের কর্মীরা।

বর্ধমানের কাটোয়া, দাঁইহাট কালনায় এ দিন তৃণমূল পথে নামিয়েছিল তারকা হিরণকে। বিজেপি শেষ দিনে হিরণের টক্করে অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে আনতে চাইলেও বুধবার বেশ রাতে তিনি আসতে পারবেন না বলে জানা যায়। ক্ষুব্ধ কর্মীরা কাটোয়ায় দলীয় কার্যালয়েই ভাঙচুর চালান।

হিরণের সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, সাংসদ সুনীল মণ্ডল প্রমুখেরা। তবে তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে হিরণের বক্তব্য শোনার চেয়ে তাঁকে দেখতে, একটু ছুঁতেই ভিড় ছিল বেশি। কাটোয়া কংগ্রেসের ‘গড়’, সেখানে তারা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার সেরেছে। মালদহের ইংরেজবাজারে সাইকেল মিছিল করেছেন কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী।

বিরোধীরা আগাগোড়া শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে এলেও, এ দিন তৃণমূল নেতাদের মুখের ভাষা, দেহের ভাষা উচ্চকিত ছিল না। বোলপুরে অনুব্রত মণ্ডল প্রার্থীর সঙ্গে বেরিয়ে কখনও হাত জোড় করেছেন, কখনও হাত নেড়েছেন। ‘আমাদেরই ভোটটা দেবেন,’’ বলেছেন বেশ বিনয়ের সুরে। কালিয়াগঞ্জে ছিলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে নিয়ে তৃণমূল একটি মহামিছিল করেছে এলাকায়। রাজীববাবু বলেন, ‘‘আমি কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দাদের কাছে ভোট ভিক্ষা করতে আসিনি। ভোট ঋণ নিতে এসেছি। উন্নয়নের মাধ্যমে ঋণ শোধ করে দেব।’’বনগাঁয়ে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘কথা দিয়ে যাচ্ছি, ভোট অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।’’ শিলিগুড়িতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তৃণমূল কারওকে হুমকি দেয় না।’’

এমন আশ্বাসে কতটা স্বস্তি পাচ্ছেন বিরোধী বা ভোটাররা, বোঝা যাবে শনিবার।

municipal election mamata bandopadhyay trinamool tmc partha chattopadhyay BJP Roopa Gangopadhyay Jay Bandopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy