একটি মামলায় তিনি জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন। তবে অন্য একটি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করবেন বলে আদালতের বাইরে ওত পেতে দাঁড়িয়ে ছিলেন গোয়েন্দারা। শেষমেশ অবশ্য আইনজীবীদের একাংশের বাধায় পিছু হটতে হল সিআইডি-কে। এ যাত্রা তারা গ্রেফতার করতে পারল না বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা আইকোর-এর অংশীদার রাধেশ্যাম গিরিকে। শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে।
ওই ঘটনায় সিআইডি অফিসাররা আট বছর আগের একটি ঘটনার তুলনা টানছেন। সে বার কুখ্যাত দুষ্কৃতী হুব্বা শ্যামল একটি মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়েছিল। কিন্তু অন্য একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার করার জন্য জেলের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন গোয়েন্দারা। সে বারও এই রকম বাধার মুখে শ্যামলকে ফের গ্রেফতার করা যায়নি।
কিন্তু শনিবার কী কারণে আইনজীবীরা বাধা দিলেন?
ওই আইনজীবীদের যুক্তি, ‘‘একটি মামলায় জামিন পাওয়ার পরে অন্য একটি মামলায় ওই ভাবে গ্রেফতার করা নীতি-বিরুদ্ধ। সেই জন্যই আমরা বাধা দিয়েছি।’’ সিআইডি অবশ্য ওই যুক্তি মানতে নারাজ। তবে তারা ওই আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পথেও হাঁটছে না। এক গোয়েন্দা অফিসারের কথায়, ‘‘রাধেশ্যাম কোথায় যাবেন? পরে ওঁকে ঠিকই ধরব।’’
ওই বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে রুজু হওয়া মামলায় আট জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে সিআইডি। তাতে অবশ্য রাধেশ্যামের নাম নেই। তবে সিআইডি তাঁকে খুঁজছিল।
সিআইডি সূত্রের খবর, রাধেশ্যাম গিরির বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি এলাকায়। শুক্রবার আইকোর-এ টাকা রেখে প্রতারিত হওয়া কয়েক জন আমানতকারী ও স্থানীয় এজেন্ট রাধেশ্যামকে এলাকায় দেখতে পেয়ে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দেন। রাধেশ্যাম টাকা দিতে না পারায় তাঁকে মারধর করে কাঁথি থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
কাঁথি থানার পুলিশ তখন রাধেশ্যামকে আয়কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে রুজু হওয়া একটি মামলায় গ্রেফতার করে। ওই মামলায় রাধেশ্যামের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল ব্যাঙ্কশাল কোর্ট। ওই গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করে কাঁথি থানার পুলিশ এ দিন সকালে অভিযুক্তকে প্রথমে কাঁথি আদালতে হাজির করায়। সেই আদালত থেকে রাধেশ্যামকে পাঠানো হয়
ব্যাঙ্কশাল কোর্টে।
খবর পেয়ে সিআইডি-র তদন্তকারীরা সেখানে হাজির হন প্রতারণার মামলায় রাধেশ্যামকে গ্রেফতার করার জন্য। সহায়তা চেয়ে হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশকেও খবর দেয় সিআইডি। আয়কর বিভাগের মামলাটিতে আদালতে জামিনে মুক্তি পান রাধেশ্যাম। কোর্ট থেকে বেরোনোর মুখে রাধেশ্যামকে সিআইডি-র গোয়েন্দারা গ্রেফতারের চেষ্টা করলে বিপত্তি বাধে।
সিআইডি-র অভিযোগ, কয়েক জন মহিলার নেতৃত্বে আইনজীবীদের একাংশ গ্রেফতারে বাধা দেন। তার পর আইনজীবীদের এক সংগঠনের অফিসে রাধেশ্যামকে বসিয়ে রেখে পাহারা দেন ওই আইনজীবীরা। সন্ধে পর্যন্ত অপেক্ষা করে সিআইডি-র অফিসাররা ফিরে যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy