Advertisement
E-Paper

আলো-ধ্বনিতে অতীত যাপন করবে দক্ষিণেশ্বর মন্দির

সন্ধ্যা নামতেই মন্দির চত্বরে চোখের সামনে ‘হাজির’ হবেন রানি রাসমণি, শ্রীরামকৃষ্ণ, স্বামী বিবেকানন্দ, সুভাষচন্দ্র বসু ও মাইকেল মধুসূদন দত্তের মতো ঐতিহাসিক চরিত্রেরা। আলোর খেলায় তাঁদের দেখার পাশাপাশি শোনা যাবে কথাও।

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৮ ০৩:১১
আলোকিত: মন্দিরের এই প্রাঙ্গণেই হবে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড। মঙ্গলবার, দক্ষিণেশ্বরে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

আলোকিত: মন্দিরের এই প্রাঙ্গণেই হবে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড। মঙ্গলবার, দক্ষিণেশ্বরে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

ওডিশার কোনারক বা গুজরাতের সোমনাথ মন্দিরের মতো এ বার দক্ষিণেশ্বরেও আলো-ধ্বনির মায়াজাল!

সন্ধ্যা নামতেই মন্দির চত্বরে চোখের সামনে ‘হাজির’ হবেন রানি রাসমণি, শ্রীরামকৃষ্ণ, স্বামী বিবেকানন্দ, সুভাষচন্দ্র বসু ও মাইকেল মধুসূদন দত্তের মতো ঐতিহাসিক চরিত্রেরা। আলোর খেলায় তাঁদের দেখার পাশাপাশি শোনা যাবে কথাও। কারণ, দক্ষিণেশ্বরেও এ বার শুরু হতে চলেছে ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’।

প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, আলো আর শব্দের এই খেলা চলবে গোটা মন্দির চত্বর জুড়েই। দক্ষিণেশ্বর কর্তৃপক্ষের দাবি, এ রাজ্যে এই প্রথম কোনও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে এমন শো দেখার সুযোগ মিলবে। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে দর্শনার্থী ও পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বেলুড় মঠ, দক্ষিণেশ্বর ও বাগবাজারকে ঘিরে জলপথে পর্যটনের সার্কিট গড়ে উঠেছে। সেই সঙ্গে দক্ষিণেশ্বরে তৈরি হচ্ছে স্কাইওয়াক।

দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে গঙ্গার তিনটি ঘাটের সংস্কার, গঙ্গাপাড়ের ভাঙন রোধ ও পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা-সহ বিভিন্ন কাজের জন্য ইতিমধ্যেই ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। সেই প্রকল্পেই এই ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’ চালু করার পরিকল্পনা হয়েছে। এমনই জানালেন দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের অছি ও সম্পাদক কুশল চৌধুরী। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে ঐতিহ্যশালী ওই জায়গায় লাইট অ্যান্ড সাউন্ড চালুর প্রস্তাবটি পেয়েছি। বিষয়টি ভাল, সব দিক দেখে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হবে।’’

ঠিক হয়েছে, নাটমন্দিরের উল্টো দিকে ‘ইউ’ আকৃতিতে দর্শকদের বসানো হবে। সেই সঙ্গে শিবমন্দির বা শ্রীরামকৃষ্ণের শয়নকক্ষের বারান্দা ও সিঁড়ি থেকেও দেখা যাবে এই শো। একসঙ্গে কয়েক হাজার দর্শক তা দেখার সুযোগ পাবেন। নাটমন্দিরকে মূল পর্দা হিসেবে ব্যবহার করে ভবতারিণী মন্দির, অফিস ব্লক, রাধাকৃষ্ণ মন্দিরকে ঘিরে লেজারের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হবে ১৮৫৫ সালে মন্দির তৈরির ইতিহাস, শ্রীরামকৃষ্ণের
কালী দর্শন, সাধনা ও তাঁর সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের ঘটনাবলি। সেই সঙ্গে স্বামীবিবেকানন্দ-সহ অন্য শিষ্য এবং ঐতিহাসিক ব্যক্তিদেরও দেখা যাবে, শোনা যাবে তাঁদের কথাবার্তা। মন্দিরকে কেন্দ্র করে উনিশ শতকে বাংলার নবজাগরণও দেখা যাবে এই শো-তে। থাকবে প্রাসঙ্গিক গানও। যেমন, শ্রীরামকৃষ্ণের নির্দেশে বারবার কালীরঘরে ঢুকে বেরিয়ে আসছেন নরেন্দ্রনাথ। এই দৃশ্যের সঙ্গে শোনা যাবে ‘মন চলো নিজ নিকেতনে’ গানটি।

কুশলবাবু বলেন, ‘‘এই মন্দির শুধু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয়। এর সঙ্গে লোকশিক্ষা, সমাজ সংস্কার ও দেশাত্মবোধ জড়িয়ে রয়েছে। সমস্ত বিষয় একত্রিত করে সকলের সামনে তুলে ধরতেই এই পরিকল্পনা।’’ তিনি জানান, দৃশ্যপট তৈরির কাজও শুরু করেছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। ধারাভাষ্যের জন্য বলিউড ও টলিউডের খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বদের কথাও ভাবা হচ্ছে। গ্রীষ্ম ও শীতে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ভবতারিণী মন্দিরে আরতি শেষ হতেই শুরু হবে আধ ঘণ্টার শো। বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি— তিনটি ভাষাতেই আপাতত সপ্তাহে দুই বা তিন দিন দু’বার করে এই শো হবে। তবে কোনও প্রবেশমূল্য লাগবে না।

Dakshineswar kali Temple Light and Sound
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy