রবিবার দুপুরে শহরে বাজ পড়ার মিনিট পনেরো আগে বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের অ্যানেক্স-২ বিল্ডিংয়ের ছাদে বসানো একটি যন্ত্রে লাল আলো জ্বলে উঠেছিল। সতর্ক হয়েছিলেন গবেষকেরা। তাঁরা বুঝেছিলেন, দ্রুত শহরে ‘বিপজ্জনক’ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটতে চলেছে। কারণ, লাল আলো জ্বলা তেমনই ইঙ্গিত দেয়। তাঁদের সেই আশঙ্কাই শেষ পর্যন্ত সত্যি হয়েছিল। বাজ পড়ে মৃত্যু হয় এক তরুণ ক্রিকেটারের। ওই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই আবহবিজ্ঞানী মহলে প্রশ্ন উঠেছে, শহরে কি বাজ পড়ার ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে?
গবেষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শুধু বাড়াই নয়। বজ্রপাতের নিরিখে কলকাতার অবস্থান ক্রমেই হয়ে উঠছে বিপজ্জনক। তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে বাজ পড়া সম্পর্কিত প্রাথমিক তথ্য।অবশ্য শুধু কলকাতাই নয়। তথ্য বলছে, বজ্রপাত, ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড়-সহ যে প্রাকৃতিক কারণগুলির জন্য প্রতি বছর প্রাণহানির ঘটনা ঘটে, সেগুলির মধ্যে শীর্ষস্থানে আছে বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য বলছে, ২০০৪ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে বাজ পড়ে মৃত্যুর ঘটনা সারা দেশেই ধারাবাহিক ভাবে বেড়েছে। এমনিতে মেঘের ঘনত্ব, উচ্চতা, গড়নের উপরে বাজ পড়া নির্ভর করে। খুব বড় মেঘ হলে বাজ পড়ার তীব্রতা আরও বেড়ে যায় বলে জানাচ্ছেন গবেষকেরা। সেই বড় মেঘই শহরে বেশি তৈরি হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। অনেকের মতে, এর পিছনে দূষণও একটি কারণ।
যদিও গত তিন বছরে শহরে মোট কতগুলি বাজ পড়েছে, সে সম্পর্কে কোনও তথ্যই নেই আলিপুর আবহাওয়া দফতরের কাছে। কারণ, বজ্রপাত সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহের জন্য যে ‘লাইটনিং ডিটেক্টর’-এর প্রয়োজন, সেই যন্ত্র তাদের কাছে নেই। এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যের জন্য আবহাওয়া দফতর নির্ভর করে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর রিপোর্টের উপরে। কারণ, বাজ পড়ে প্রাণহানির ঘটনার যাবতীয় হিসেব রাখে ওই দফতরই।