কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে চন্দ্রবাবু নায়ডু। —নিজস্ব চিত্র।
বুথফেরত সমীক্ষায় ফের এনডিএ সরকারের জয়জয়কারের ছবি ভেসে উঠলেও আশা ছাড়ছেন না মহাজোটের কাণ্ডারীরা। ২৩ মে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে যদি ওই সমীক্ষার ফল না মেলে, তবে সেই পরিস্থিতিতে ঠিক কোন পথে এগোতে হবে তারই পরিকল্পনা করতে ব্যস্ত তাঁরা। এই আবহে সোমবার কলকাতায় পা রাখেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু। বিকেলে তিনি পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ওই বৈঠকে তাঁদের মধ্যে মহাজোটের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যদিও এ নিয়ে মমতা বা চন্দ্রবাবু, দু’জনের কেউই সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনও বিবৃতি দেননি।
এ দিন বিকেল ৫টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে নামেন চন্দ্রবাবু। এর পর তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। সেখানেই এ দিন সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন চন্দ্রবাবু। সূত্রের খবর, নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়েই আলোচনা হয় তাঁদের মধ্যে। বৃহস্পতিবার লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে কোন পথে এগোবে মহাজোট, সেই স্ট্র্যাটেজি নিয়েও কথা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কলকাতা সফরের আগে সংবাদমাধ্যমে চন্দ্রবাবু জানান, নির্বাচন কমিশনের কাছে ইভিএমে কারচুপি নিয়ে তাঁদের আশঙ্কার কথা জানাবেন। ইভিএমে কারচুপি নিয়ে চন্দ্রবাবু তো বটেই, মমতার মুখেও শোনা গিয়েছে আশঙ্কার কথা। পাশাপাশি, বুথফেরত সমীক্ষাকেই ‘গসিপ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন মমতা। চন্দ্রবাবু জানিয়েছেন, আগামী বুধবার ইভিএম নিয়ে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত থাকতে মমতাকে অনুরোধ করেছেন তিনি।
নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই কেন্দ্রে অ-বিজেপি সরকার গঠনের লক্ষ্যে মাঠে নেমেছে বিরোধীরা। এর আগে তৃণমূলনেত্রী মমতার ব্রিগেড সভায় একমঞ্চেই দেখা গিয়েছে চন্দ্রবাবু নায়ডু, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী থেকে শুরু করে কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে, সমাজবাদী পার্টি নেতা তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের মতো দেশের হেভিওয়েট নেতাদের। নির্বাচনী পর্ব চলাকালীনও দফায় দফায় দেশের একাধিক নেতা-নেত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন চন্দ্রবাবু নায়ডু। তাঁকে সূত্রধরের ভূমিকায় রেখেই মহাজোটের কাণ্ডারীদের একসুতোয় বাঁধতে উদ্যোগী হয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। চন্দ্রবাবুও গত কয়েক দিনে দেখা করেছেন এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার থেকে শুরু করে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে। দিল্লিতে গিয়ে কথা বলেছেন রাহুল গাঁধীর সঙ্গেও। লখনউতে গিয়ে দেখা করেছেন মায়াবতী ও অখিলেশ যাদবের সঙ্গে। এনডিএ সরকারকে ঠেকাতে এবং মহাজোটের স্বার্থে তিনি যে তাঁর ‘রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী’ তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী— সে বার্তাও দিয়েছেন। এ বার তাঁর বৈঠক মমতা সঙ্গে!
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আরও পড়ুন: সব সমীক্ষায় আবার মোদী! ৩০০ পার করার ইঙ্গিত প্রবল
আরও পড়ুন: সনিয়া-মায়া বৈঠক হচ্ছে না দিল্লিতে, মহাজোট কি টালমাটাল?
তবে সমীক্ষার ফলাফল দেখার পর চন্দ্রবাবুর এই ‘উদ্যোগ’-কে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি মহারাষ্ট্রে বিজেপি-র শরিক দল শিবসেনা। সেনার মুখপত্র সামনায় দলের প্রধান উদ্ধব ঠাকরে লিখেছেন, ‘অকারণে কেন নিজেকে কাহিল করছেন চন্দ্রবাবু? আশা করি, আগামী ২৩ মে পর্যন্ত তাঁর এই উৎসাহ বজায় থাকবে! আমাদের শুভেচ্ছা রইল।’ মমতা-চন্দ্রবাবুর এই সাক্ষাৎ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও। মহাজোটের গুরুত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। দিলীপবাবু বলেন, “বুথফেরত সমীক্ষার পর এই বৈঠকের বা ফেডারাল ফ্রন্ট-এর কোনও গুরুত্ব আছে কি?”
(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবরআমাদের রাজ্য বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy