ভোটের বাজারে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করে আচমকাই জল্পনা তৈরি করেছিলেন যাদবপুরের বিজেপি প্রার্থী অনুপম হাজরা। চরম অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিলেন দলকে। দলীয় নেতৃত্বের কাছে সে জন্য ধমকানিও খেতে হয় তাঁকে। যার ফল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গোটা বিষয়টির দায় তিনি চাপিয়ে দিলেন অন্যের ঘাড়ে। অভিযোগ করলেন, সবটাই সংবাদ মাধ্যমের ‘চক্রান্ত’।
সোমবার বীরভূমে ভোট দিতে গিয়েছিলেন অনুপম।ভোট দিয়েই তিনি সটান চলে গিয়েছিলেন বোলপুরের তৃণমূল কার্যলয়ে। সেখানে অনুব্রতকে প্রণাম করার পাশাপাশি পাত পেড়ে মধ্যাহ্নভোজও সেরেছিলেন। কিন্তু, মঙ্গলবার কলকাতায় বিজেপি কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে সেই ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ নিয়েসংবাদ মাধ্যম‘চক্রান্ত’ করেছে বলে অভিযোগ করলেন অনুপম। যাঁর রাজ্যসভার টিকিটের কথায় ‘না’ করেননি অনুপম, সেই অনুব্রতকেই এ দিন ‘ওঁর পোর্ট ফোলিওটা কী’ প্রশ্ন তুলে কটাক্ষ করেছেন তিনি। অনুব্রতকে বীরভূমের ‘ডিএম-এসপি’ বলে পাল্টা আক্রমণও করেছেন।
সম্প্রতি মাতৃবিয়োগ হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের। এ দিন অনুপম দাবি করেন, সেই কারণেই তিনি তাঁকে সমবেদনা জানাতে গিয়েছিলেন। সাংবাদিকদের সামনেই অনুব্রত তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘‘খেয়েছিস? এখান থেকে খেয়ে যাস।’’ ‘কাকু’র কথা শুনে তাঁকে দিব্যি পাত পেড়ে খেতে দেখা যায়। সে ছবিও সংবাদমাধ্যমে ধরা পড়েছিল। ওই সাক্ষাৎপর্বের কথোপকথনে ওঠে রাজনৈতিক প্রসঙ্গও। ২০১৪ সালে তৃণমূলের টিকিটে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন অনুপম। তবে, জেলা সভাপতি অনুব্রতর সঙ্গে সঙ্ঘাতের জেরে শেষ পর্যন্ত তৃণমূল ছেড়ে পদ্ম শিবিরে নাম লেখান তিনি। ‘কেষ্টকাকু’র সঙ্গে তাঁর ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল একটা সময়ে, সংবাদমাধ্যমের সামনে এমন মন্তব্যও করেন বিজেপি প্রার্থী। তাঁর সামনেই অনুব্রতকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ওকে দরকার হলে ফিরিয়ে নিতে পারি। রাজ্যসভা তো ফাঁকা আছে। দিদিকে বলে রাজ্যসভার টিকিট দিয়ে দিতে পারি।’’ সেই সময় অনুপমকে কোনও কথা বলতে শোনা যায়নি। স্মিত হাসতে দেখা যায়।এ সব নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজনৈতিক শিবিরে জল্পনা শুরু হয়, তবে কি তৃণমূলে ফেরার সম্ভাবনার দরজা খোলাই রাখলেন অনুপম?