পরেশচন্দ্র অধিকারী
তিনি যে কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন সেখানে ভোট পর্ব মিটেছে এক সপ্তাহ আগেই। তারপরেও জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের ভোটেও তিনিই যেন আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে।
তিনি পরেশ অধিকারী। বাম জমানায় খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রীর দায়িত্ব সামেলেছেন পরেশ। ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদকের দায়িত্বেও ছিলেন। দল বদলের পর এ বারের ভোটে কোচবিহার কেন্দ্রে তৃণমূলের টিকিটে লড়েছেন তিনি। দ্বিতীয় দফার ভোটে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রের আওতাধীন তাঁর খাসতালুক বলে পরিচিত মেখলিগঞ্জে বিধানসভা এলাকায় আজ, বৃহস্পতিবার নির্বাচন। পরেশের দলবদলের পর এলাকায় প্রথমবার!
জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মেখলিগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় কেমন ফল হতে পারে তা নিয়েও সীমান্ত মহকুমা মেখলিগঞ্জের অলিগলিতে চর্চা চলছে। দলবদলের পর নিজের খাসলুকে পুরনো শিবিরের ভোট ভাঙিয়ে পরেশ কি পারবেন তৃণমূলের ভোট বাড়াতে? নাকি পরেশের দলবদলের কোনও প্রভাব পড়বে না? এমন নানা প্রশ্ন ঘুরছে।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪-র লোকসভা ভোটে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে তৃণমূল জিতলেও মেখলিগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় কিন্তু এগিয়ে ছিল বামেরা। ওই নির্বাচনে বামফ্রন্টের সিপিএম প্রার্থী মহেন্দ্র রায় মেখলিগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় ৬২,৯৫২ ভোট পেয়েছিলেন। তৃণমূলের বিজয় বর্মণ পেয়েছিলেন ৬০,৮৯৭টি ভোট। বিজেপির সত্যলাল মালাকার ১৬,৭৭৩টি ও কংগ্রেসের সুখবিলাস বর্মণ ১২,৬৮৪টি ভোট পান।
২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে অবশ্য ওই আসনেই বাম প্রার্থী পরেশকে হারিয়ে জয়ী হন তৃণমূলের অর্ঘ্য রায় প্রধান। ব্যবধান ছিল ৬,৬৩৭ ভোটের। এ বার এলাকার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অনেক বদল হয়েছে। অগস্টে শিবির বদলেছেন পরেশ। বিতর্কের মুখেও পড়েছেন। জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের ভোটেও তাই আলাদাভাবে নজর কাড়ছে মেখলিগঞ্জের ভোট।
পরেশ নিজে অবশ্য বলছেন, “মেখলিগঞ্জে তৃণমূলের ভোট বাড়বে। বামফ্রন্টের বহু ভোট আসবে।” কোচবিহার কেন্দ্রেই এ বার বামেদের টিকিটে লড়েছেন, ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা গোবিন্দ রায়। পরেশের এক সময়কার ‘রাজনৈতিক সহকর্মী’, গোবিন্দ বলছেন, “মেখলিগঞ্জে বামেরাই এগিয়ে থাকবেন। অন্য কোনও ব্যাপার নেই।” সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “পরেশবাবুর হিসেব মিলবেনা। তৃণমূলের ভোটই বরং ওর বিরুদ্ধে ক্ষোভে অন্য দিকে যাবে।”
বিজেপি অবশ্য বাম, তৃণমূলের ওই বক্তব্য মানতে রাজি নয়। বিজেপির জলপাইগুড়ির পর্যবেক্ষক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “এ বার ওই এলাকায় আমরাই লিড পাচ্ছি।” জেলা কংগ্রেসের সভাপতি শ্যামল চৌধুরী বলেন, “মেখলিগঞ্জ আর হলদিবাড়ি দুই ব্লকেই কংগ্রেস ভোট ব্যাঙ্ক ধরে রেখেই এ বারে এগিয়ে যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy