সোনাথলি পঞ্চায়েত এলাকার একটি দেওয়ালে। নিজস্ব চিত্র
দল ঘোষণা করেনি। কে হবে প্রার্থী, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। এরই মধ্যে শুক্রবার বিকেলের পরে হঠাৎ কাশীপুরের সোনাথলির কিছু দেওয়ালে পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে নরহরি মাহাতোর নাম দেখে চমকে উঠেছিলেন অনেকে। তবে দলের জেলা নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, এখনও বিজেপি পুরুলিয়া কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করেনি।
শনিবার বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রার্থী কে হবেন তা দলের কেন্দ্রীয় কমিটি ঠিক করবে। এখনও আমরা কেউ কিছু জানি না। এ ভাবে কারও নাম লেখা ঠিক হয়নি। আমি খোঁজ নিচ্ছি।’’ ঘটনাটিকে সমর্থন করছেন না নরহরিবাবুও। তিনি বলেন, ‘‘কেউ এটা করলে ভুল করেছে। শৃঙ্খলা মেনে করেনি।’’ বিজেপির সোনাথলি মণ্ডল কমিটির সভাপতি রাজু মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা কাউকে লিখতে বলিনি। কিছু কর্মী অতি উৎসাহে এমনটা করে ফেলেছিলেন। মুছে দেওয়া হচ্ছে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নরহরিবাবুর নামে মোট তিনটি দেওয়াল লিখন চোখে পড়েছে। শুক্রবার বিকেলের পরেই অনেকে সেগুলি দেখতে পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। দেখা গিয়েছে শনিবার বিকেল পর্যন্ত। মঙ্গলবার পুরুলিয়া কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম ঘোষণা হবে বলে আশা করেছিলেন বিজেপির নেতারা। দলের জেলা সভাপতি জানান, প্রার্থীকে নিয়ে ওই দিনই তিনটি জায়গায় জনসভা করবেন বলে ঠিক করে রেখেছিলেন তাঁরা। কিন্তু নাম ঘোষণা না হওয়ায় শেষ ইস্তক শুধু একটি কর্মিসভা হয়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
টিকিট কে পাচ্ছেন, তা নিয়ে কর্মীদের কৌতূহল সামাল দিতে হচ্ছে নেতাদের। তার মধ্যে সোনাথলির এই ঘটনা অস্বস্তি বাড়িয়েছে। আরও ঘন ঘন বাজতে শুরু করেছে নেতাদের মোবাইল।
এ বারে পুরুলিয়ায় বামেদের প্রার্থী ফরওয়ার্ড ব্লকের বীরসিংহ মাহাতো। আগে তিনি জেলার সাংসদ ছিলেন। ফৌজদারি মামলা হওয়ায় তাঁকে সরিয়ে দেয় বামফ্রন্ট। ২০০৬ সালে উপ নির্বাচন হয়। ফরওয়ার্ড ব্লকের টিকিটেই জয়ী হন নরহরি মাহাতো। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও জিতেছিলেন তিনি। সেই নরহরিবাবু মাস কয়েক আগে যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। তিনি টিকিট পান কি না, তা নিয়ে গুঞ্জন রয়েছে দলের মধ্যেই। পুরুলিয়া কেন্দ্রে এ বারে তৃণমূল, বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের প্রার্থীদের সবার পদবি মাহাতো। মাহাতো ভোট ব্যাঙ্কের চিন্তা করে বিজেপিও মাহাতো পদবির কাউকে প্রার্থী করে কি না তা নিয়ে কৌতূহল ছিল দলের মধ্যে। তবে যে ছ’-সাত জনের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়তে পারে বলে জল্পনা করছেন নেতা-কর্মীরা, তাঁদের মধ্যে অনেকেরই পদবি মাহাতো নয়। জল্পনার বাইরে অন্য কাউকে প্রার্থী করে চমক দিতে পারে সেন্ট্রাল কমিটি, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না দলের নেতারা।
শুক্রবার জেলায় এসে তৃণমূলের পুরুলিয়ার পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির প্রার্থী ঘোষণা না হওয়ার প্রসঙ্গে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ‘‘আমি জানি না, এটা অহঙ্কার না আত্মতুষ্টি, না সাংগঠনিক ব্যর্থতা?’’ তার পরের দিনই দেওয়াল লিখন নিয়ে বিতর্কে জেলা যুব তৃণমূল সহ-সভাপতি তথা কাশীপুরের নেতা সৌমেন বেলথরিয়া বলছেন, ‘‘ওঁদের দলের ভিতরে বোঝাপড়াটা কেমন, এই ঘটনাতেই সেটা বোঝা যাচ্ছে।’’
তবে সে কথা মানতে নারাজ বিজেপির নেতারা। দলের কাশীপুরের পর্যবেক্ষক গৌরী সিংহ সর্দার বলেন, ‘‘আমরা কর্মীদের বলেছি শুধু প্রতীক এবং ভোট দেওয়ার আবেদন লিখে রাখতে। বিজেপির প্রতীকে যিনিই প্রার্থী হন তাঁকে জয়ী করতে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়বেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy