‘মোদীবাবু’দের ‘গণতন্ত্রের থাপ্পড়’ মারার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার, পুরুলিয়ার সাঁতুড়িতে। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সে জেলাতেই প্রচারে এসে টানলেন ‘থাপ্পড়’-প্রসঙ্গ। বললেন, ‘‘দিদি, আপনাকে সম্মান করি। আপনার থাপ্পড়ও আমার কাছে আশীবার্দ। কিন্তু আপনি যদি আপনার ওই সঙ্গীদের থাপ্পড় মারার দম দেখাতেন, যারা চিট ফান্ডের নাম করে গরিবের রোজগার কামিয়ে নিয়েছে, তা হলে আপনার এত ভয় লাগত না।’’ মমতাও পুরুলিয়ায় এ দিনের সভা থেকে পাল্টা বলেন, ‘‘ওটা গণতন্ত্রের থাপ্পড়। ভাষাটা ভাল করে বুঝুন। আপনাকে থাপ্পড় আমি কেন মারতে যাব?’’ এই চাপানউতোরের জেরে ‘থাপ্পড়ের’ আঁচ পুরোদস্তুর থাকল ভোট-রাজনীতিতে।
এ রাজ্যে ভোট-প্রচারে এসে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ করেছিলেন মোদী এবং বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। তারই জবাবে মমতা বলেছিলেন, ‘‘মোদীবাবুরা যখন বাংলায় এসে বলেন, তৃণমূল তোলাবাজ, মনে হয় ঠাসিয়ে একটা গণতন্ত্রের থাপ্পড় দিই। নোট বাতিল করে মানুষের টাকা পকেটে কারা ঢুকিয়েছে? কারা তোলাবাজি করে?’’
মোদী এ দিন পুরুলিয়ার রায়বাঘিনী মাঠের সভায় বলেন, ‘‘আমি শুনেছি, দিদি বলেছেন, মোদীকে তিনি থাপ্পড় মারতে চান। দিদি, ও মমতাদিদি। আপনাকে দিদি বলি, থাপ্পড়ও খেয়ে নেব।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আপনি যদি তোলাবাজদের থাপ্পড় মারতেন, তা হলে তৃণমূল তোলাবাজি ট্যাক্স আপনাকে বরবাদ করত না।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এই মন্তব্যের পাল্টা দেন মমতা পুরুলিয়ার শিমুলিয়ার কালীপুর ফুটবল ময়দানের সভা থেকে। বলেন, ‘‘আমি থাপ্পড় মারার লোক নই। আমি গণতন্ত্র বুঝি। আমি যা-ই বলি, গণতন্ত্র কথাটা বলি।’’ মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, ‘‘লোকে ভোটটা দেয় না? ওটাই হল গণতন্ত্রের থাপ্পড়। ভাল করে বুঝুন।’’
মোদী অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘দিদি কতটা সঙ্কটে রয়েছেন, তা ওঁর ভাষায় বোঝা যাচ্ছে। উনি আমার জন্য পাথর, থাপ্পড়ের কথা বলছেন। দিদি, আমার গালি শোনা অভ্যাস আছে। আমি সারা বিশ্বের গালি হজম করে নিয়েছি। কিন্তু দিদি গালি দিয়ে দেশের সম্মান নষ্ট করছেন।’’ মমতা জবাবে বলেছেন, ‘‘আমি আপনাকে পাথর মারব কেন? আমি তো বলেছি, মিষ্টি খাওয়াব। মিষ্টি মানে মাটির মিষ্টি খাওয়াব। তার মধ্যে আমি কিসমিস দেব না, কাজু দেব না, লাল নুড়ি পাথর আর স্টোন চিপস দিয়ে দেব। দাঁত ভাঙবে। আপনি দীর্ঘদিন বাঁচুন। চারশো পাঁচ বছর বাঁচুন। আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করি।’’ পরে খড়্গপুরের সভাতেও মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ভেবেছিলাম, প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। হয়নি।’’