Advertisement
E-Paper

পক্ষপাতদুষ্ট হলেই সরিয়ে দেওয়া হবে, কড়া বার্তা উপনির্বাচন কমিশনারের, নজরে ৪ ডিএম, ৩ এসপি

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এ দিন দফায় দফায় বৈঠক করেন সুদীপ জৈন।

সোমনাথ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯ ২১:২৭
প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে সুদীপ জৈন।—নিজস্ব চিত্র।

প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে সুদীপ জৈন।—নিজস্ব চিত্র।

ভোটের কাজে রাজ্য পুলিশ এবং প্রশাসনিক কর্তাদের ভূমিকায় সন্তুষ্ট হতে পারলেন না উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। শনিবার তাঁর প্রশ্নের মুখে পড়লেন রাজ্যের চার জেলাশাসক এবং তিন পুলিশ সুপার। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনে কেন কাজে ঢিলেমি হচ্ছে, কেন এত অভিযোগ জমা পড়ছে,তাঁদের কাছে জানতে চাইলেন উপনির্বাচন কমিশনার।

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এ দিন দফায় দফায় বৈঠক করেন সুদীপ জৈন। প্রথমে রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ শোনেন। তার পর বৈঠকে বসেন জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের সঙ্গে।

সেই বৈঠক শেষে তিনি ডেকে পাঠান প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদেরও। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র, স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য এবং এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) সিদ্ধিনাথ গুপ্ত।বৈঠকে পুলিশ এবং প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচনের কাজ কতদূর এগিয়েছে তা জানতে চান সুদীপ জৈন। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকজন জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার তাঁকে সম্পূর্ণ রিপোর্ট দিতে পারেননি। ওই তালিকায় উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গের মোট সাতজনের নাম রয়েছে। তাঁদের দ্রুত বাকি কাজ শেষ করতে নির্দেশ দেন উপনির্বাচন কমিশনার।

ভারতের প্রথম লোকসভা নির্বাচন নিয়ে এই তথ্যগুলি জানেন?

আরও পড়ুন: রাজ্যে ২০ হাজার উত্তেজনাপ্রবণ বুথ! ভোটারদের মনোবল বাড়াতে আধা সেনার রুট মার্চ​

জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া সত্ত্বেও অবাধে ঘুরে বেড়ানো অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারেরও নির্দেশ দেন সুদীপ। কমিশনের একটি সূত্র জানিয়েছে, উত্তরবঙ্গের এক জেলাশাসককে উপ নির্বাচন কমিশনার প্রশ্ন করেন, “আপনি কাউন্টিং সেন্টার কেন বদলে দিয়েছেন? কোথায় সমস্যা? কার সঙ্গে কথা বলে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন?” কলকাতা সংলগ্ন আর এক জেলারডিএমের কাছে তিনি জানতে চান, “আপনার জেলায় ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণ এখনও শেষ হয়নি, কেন এত দেরি হচ্ছে?”

জেলাশাসকদের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের এক জেলার পুলিশ সুপারকেও ধমক দেন সুদীপ জৈন। এমনটাই জানিয়েছে কমিশনের একটি সূত্র।সুদীপ তাঁকে বলেন,“আপনার জেলায় রাজনৈতিক দলগুলি এত কেন অভিযোগ করছে? আপনি কি সবার অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন না?” সমস্ত পুলিশ এবং প্রশাসনিক কর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনাদের অধস্তন কর্মীরা যদি কথা না শোনেন, তাহলে রিপোর্ট দিন। বদলি করে দেওয়া হবে। এর পরেও যদি কোনও সমস্যা হয়, তার দায়িত্ব কিন্তু আপনাদের নিতে হবে।”

আলোচনা চলাকালীন কলকাতা সংলগ্ন আর এক জেলার জেলাশাসকের কাছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি জানতে চেয়েছিলেন উপনির্বাচন কমিশনার। ওই জেলারই এক এসডিপিও কমিশনের রোষানলে পড়েন। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির পক্ষ থেকে ওই জেলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে ভূরি ভূরি অভিযোগ জমা পড়েছে। তা নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, “আপনার জেলায় জামিনঅযোগ্য ধারায় এত অভিযুক্ত বাইরে কেন? কেন তাদের গ্রেফতার করা যাচ্ছে না?”বৈঠক শেষে উপনির্বাচন কমিশনার স্পষ্ট জানিয়ে দেন, পক্ষপাতদুষ্ট অফিসারদের নিয়ে কাজ করা যাবে না। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ভোটের সময় সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে হবে।

আরও পড়ুন: চিনকে টপকে খোলা আলোচনা রাষ্ট্রপুঞ্জে! মাসুদকে নিয়ে নয়া পরিকল্পনা​

রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে এ দিন সকালেও তৃণমূলের তরফে অভিযোগ খারিজ করে দেওয়া হয়। সকালে দলীয় বৈঠক শেষে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, “নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে বিরোধী দলগুলি ছল-চাতুরির আশ্রয় নিচ্ছে।” কিন্তু সন্ধ্যায় নাটকীয় ভাবে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বিদ্বজ্জনেরা হঠাৎ উপনির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করতে যান। ওই দলে ছিলেন, অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার, চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন, অভিনেতা-পরিচালক অরিন্দম শীল, কবি সুবোধ সরকার-সহ অনেকে। বৈঠক শেষে ওই প্রতিনিধিদলের তরফেশুভাপ্রসন্ন জানান, বাংলাকে অতি স্পর্শকাতর করে তোলার চেষ্টা চলছে। রাজ্যে এমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে ফের দাবি করেন তিনি।

(কী বললেন প্রধানমন্ত্রী, কী বলছে সংসদ- দেশের রাজধানীর খবর, রাজনীতির খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

Lok Sabha Election 2019 West Bengal Deputy Election Commissioner Sudip Jain TMC BJP Kolkata Atri Bhattacharya
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy