Advertisement
E-Paper

টিকিট কেটে বাড়ির বাসে তুলে দিলেন ব্যবসায়ী

বাদলবাবু দলের কর্মীদের সঙ্গে শনিবার ভাড়া করা বাসে ব্রিগেডে গিয়েছিলেন। সঙ্গীদের দাবি, দুপুরে তাঁরা খেয়াল করেন বাদলবাবুর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। সভায় মাইকে বারবার তাঁর নাম করে ডাকা হলেও লাভ হয়নি। পরে বেলিয়াতোড় থানায় তাঁর নামে একটি নিখোঁজ-ডায়েরি করা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৩২
বাদল বাগদি (ফোন কানে)। নিজস্ব চিত্র

বাদল বাগদি (ফোন কানে)। নিজস্ব চিত্র

ব্রিগেডের সমাবেশে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া বেলিয়াতোড়ের প্রবীণ তৃণমূল কর্মী অবশেষে বাড়ি ফিরলেন। স্বস্তি ফিরল তাঁর পরিবারেও। তবে, শনিবার নিরুদ্দেশ হওয়ার পর তিনি কোথায় ছিলেন, কী ভাবেই বা ফিরে এলেন, বিশদে জানাতে পারছেন না। ওন্দার ভেদুয়াশোল পর্যন্ত কোনও ভাবে এসেছিলেন। সেখানকার এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর সহায়তায় বুধবার বাড়ি ফিরলেন বেলিয়াতোড়ের জগন্নাথপুরের ষাট বছর বয়সি বাসিন্দা বাদল বাগদি।

বাদলবাবু দলের কর্মীদের সঙ্গে শনিবার ভাড়া করা বাসে ব্রিগেডে গিয়েছিলেন। সঙ্গীদের দাবি, দুপুরে তাঁরা খেয়াল করেন বাদলবাবুর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। সভায় মাইকে বারবার তাঁর নাম করে ডাকা হলেও লাভ হয়নি। পরে বেলিয়াতোড় থানায় তাঁর নামে একটি নিখোঁজ-ডায়েরি করা হয়।

কী ভাবে তিনি ফিরে এলেন? পরিজনেরা জানাচ্ছেন, পুরো ঘটনায় তিনি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। কী ভাবে হারিয়ে গেলেন, কী ভাবেই বা ফিরে এলেন, ঠিক মতো মনে করতে পারছেন না তিনি। এ দিকে, এ দিন সকালেই বেলিয়াতোড় থানার তিন পুলিশকর্মী বাদলবাবুর খোঁজ করতে তাঁর দুই আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় রওনা দেন। দুপুরে খবর আসে, বাড়ি ফিরেছেন বাদলবাবু। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, “ওই ব্যক্তি মানসিক চাপে রয়েছেন। প্রয়োজনে মনোবিদ দিয়ে কাউন্সেলিং করানোর ব্যবস্থা করানো হবে।”

বেলিয়াতোড় থানার পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কোনও ভাবে ওন্দার ভেদুয়াশোল বাসস্ট্যান্ডে এসে পৌঁছন বাদলবাবু। সেখানে স্থানীয় একটি গুমটিতে গিয়ে বড়জোড়ার বাসের খোঁজ করছিলেন। ওই গুমটি ব্যবসায়ী দীপক পাত্র বলেন, “ওই বৃদ্ধের কথাবার্তা শুনে প্রথমে কিছুই বোঝা যাচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, জগন্নাথপুরে নিজের বাড়ি যাওয়ার জন্য তিনি বড়জোড়ার বাসের খোঁজ করছেন। কিন্তু, তখন আর বড়জোড়া যাওয়ার সরাসরি বাস ছিল না।’’ তিনি জানান, বৃদ্ধের কাছে বাসভাড়াও ছিল না। তাই তাঁকে রাস্তায় ছেড়ে না দিয়ে রাতটা নিজের বাড়িতে নিয়ে যাই।’’

দীপকবাবু জানান, বুধবার সকালে বাদলবাবুকে বড়জোড়াগামী বাসে চাপিয়ে টিকিট কেটে দেন তিনি। বাদলবাবুর পকেটে নিজের নাম ও ফোন নম্বর লেখা একটি কাগজও গুঁজে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “বাসের কন্ডাক্টরকে বলেছিলাম, কোথাও কোনও অসুবিধায় পড়লে যেন ওই নম্বরে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বাদলবাবুকেও বলেছিলাম অসুবিধা হলে ফোন করতে।”

এ দিকে বড়জোড়ায় এসে বাস থেকে নেমে পড়েন বাদলবাবু। সেখানে জগন্নাথপুরের কিছু লোকজন তাঁকে দেখতে পান। তাঁরাই বাদলবাবুকে সরাসরি বাড়ি নিয়ে যান। বাড়ি থেকে তাঁকে বেলিয়াতোড় থানায় নিয়ে গিয়ে নিখোঁজ ডায়েরি প্রত্যাহার করানো হয়। বাদলবাবুর স্ত্রী ভাদুদেবী বলেন, “স্বামী হারিয়ে যাওয়ার পর থেকে বড় দুশ্চিন্তায় পড়েছিলাম। তিনি ফিরে আসায় স্বস্তি পেয়েছি।”

বড়জোড়া ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি কালীদাস মুখোপাধ্যায় বলেন, “ভেদুয়াশোলের ওই গুমটি দোকানির প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। দলের তরফে তাঁকে এই কাজের জন্য সংবর্ধনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।”

TMC Brigade Rally TMC Home
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy